ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কৈলাশটিলায় ওয়ার্কওভার রিগ: তেল উত্তোলন দাবি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১২
কৈলাশটিলায় ওয়ার্কওভার রিগ: তেল উত্তোলন দাবি

ঢাকা: কৈলাশটিলা ৪ নম্বর কূপে ওয়ার্কওভারের জন্য রিগ নেওয়া হয়েছে। পি ৮০ নামের এই রিগটি দিয়ে কৈলাশটিলায় ৪ নম্বর কূপের ওয়ার্ক ওভার করা হবে।

মাটির প্রায় ৩ হাজার ৩০০ মিটার গভীর পর্যন্ত যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে বাপেক্স সূত্র জানিয়েছে।  

এই কূপের ৪ হাজার মিটার পর্যন্ত গিয়ে তেলের বিষয়ে বিস্তারিত লগ তৈরির দাবি জানিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। যাতে থ্রিডি সার্ভেতে পাওয়া তেলের বিষয়ে প্রমাণিত ধারণা পাওয়া যায়।

পেট্রোবাংলার সাবেক এক পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, থ্রিডি সার্ভে নির্ভরযোগ্য হলেও পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য নয়। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিও নয় এবং বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলন যোগ্য কিনা সে বিষয়ে জোর দিয়ে বলা যায় না। এই ওয়ার্কওভার কূপটিতে যদি তেলের স্তর পর্যন্ত যাওয়া হয়, তাহলে তেল উত্তোলন যোগ্য কিনা আর তুলতে হলে কি পদ্ধতি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে, তার পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।

তিনি দাবি করেন, সরকার তেল উত্তোলনের জন্য ২টি নতুন কূপ খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। তার চেয়ে ভালো হয়, যদি এই কূপ থেকে তেলের ধারনা পাওয়া যায়। এতে করে বর্তমান সরকারের সময়েই তেল উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
 
কৈলাশটিলা ৪ নম্বর কূপটি ১৯৯৬ সালে খনন করা হয়। এই কূপের নিচের স্তর থেকে ১৯৯৭ সালে দৈনিক ১৪ থেকে ২৬ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস তোলা হয়। ৩৪৫ বিসিএফ প্রমাণিত মজুদের এই স্তর থেকে ৯১ এমএমসিএফডি গ্যাস উত্তোলন করা হয়।

এরপর চাপ কমে গেলে ২০০৫ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ২০০৬ সালে ওয়ার্কওভার করে মাঝের স্তর (মিডল জোন) থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দৈনিক প্রায় ১৫ এমএমসিএফডি গ্যাস তোলা হয়।

এই স্তরের গ্যাসের মজুদ ধরা হয়েছে ২০৪ বিসিএফ। এ দফায় ২৮ মার্চ ২০১১ তারিখে পানি আসতে শুরু করলে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বাপেক্স এর খনন বিভাগের পরিচালক আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, ৩০ থেকে ৫০ দিন সময় লাগবে ওয়ার্কওভার শেষ করতে। এরপর তারা লগ তৈরি করবেন। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

তবে অপর একটি সূত্র দাবি করেছে এই কূপে গ্যাস জোনের নিচে তেলের অবস্থান রয়েছে। সে বিষয়টিও মাথায় রেখেই এগিয়ে চলছে বাপেক্স।

ওয়ার্কওভার কূপ দিয়েই পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে এবং সরকার চাইলে জুলাই মাসের মধ্যেই এই কূপ দিয়ে তেল উত্তোলন করতে পারবে বাপেক্স।

আর তেল স্তরে যদি চাপ কম থাকে তাহলে সাকার পাম্পিং মেশিন দিয়ে তেল উত্তোলন করা সম্ভব। তেল উৎপাদনকারি প্রায় সব দেশেই এই পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে। এই পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় এবং সহজ বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত বছর চীন সফরে যাওয়া বাপেক্স টিমের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সাকার পাম্পিং পদ্ধতি এখন খুবই ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি। তেলের স্তরগুলো অনেক নিচে হওয়ায় এই পদ্ধতি একটি যুতসই পদ্ধতি হতে পারে। সাকার পাম্পিং পদ্ধতিতে ৪ হাজার মিটার নিচ থেকে তেল উত্তোলন করার নজির রয়েছে।

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সরকার তেল উত্তোলনের বিষয়ে খুবই আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত তেল উত্তোলনের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা সবদিক মাথায় রেখেই এগিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।