ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০১ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ

ঢাকা: চলতি বছরেই শুরু হতে যাচ্ছে দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম। দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশেই নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদী রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে। ২ ইউনিট বিশিষ্ট এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী বছরের প্রথম দিকে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট চালুর প্রস্তুতি চলছে। এই পর্যায়ে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রমও শুরু হতে যাচ্ছে। চলতি বছর ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় প্রকল্পটির প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান পরমাণু বিজ্ঞানী ড. শৌকত আকবর বাংলানিউজকে বলেন,দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরেই এর প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হবে। যেহেতু দ্বিতীয় এ প্রকল্পটিও রূপপুর সাইটে করা হবে সেহেতু অনেক প্রাথমিক কাজেই অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যাবে।

রাশিয়ার আর্থিক, প্রযুক্তিসহ সার্বিক সহযোগিতায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন-রসাটম এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। একই প্রক্রিয়ায় দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও রাশিয়া সহযোগিতায় নির্মিত হবে। রসাটম  প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

গত ২ এপ্রিল রসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর রসাটমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছরই নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফিজিক্যাল স্টার্টআপ হবে। বর্তমানে আমরা নতুন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছি। রূপপুর এনপিপি সাইটে আরও দুটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট নির্মাণের ব্যাপারে বাংলাদেশ গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়াও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস গবেষণা রিয়্যাক্টর নির্মাণের বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পর দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। দেশের দক্ষিণ অঞ্চল বিশেষ করে বৃহত্তর বরিশালে এ প্রকল্পের স্থান নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং সমীক্ষা চালানো হয়। এ  অঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় সমীক্ষা চালানোর পর মাটির উপযোগিতা না থাকায় দক্ষিণাঞ্চলে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ থেকে সরে আসে সরকার। এরপর রূপপুর সাইটেই প্রতিটি ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ২ ইউনিটের আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথম প্রকল্পটির কাজ শুরুর সময় রূপপুর সাইটে ভবিষ্যতে আরও দুইটি ইউনিট স্থাপনের মতো জায়গা রাখা হয়েছিলো। সেখানে দ্বিতীয় প্রকল্পটির কাজ শুরু হবে।

তবে দক্ষিণাঞ্চলে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রকল্প করা সম্ভব না হলেও পরমাণু প্রযুক্তিভিত্তিক ক্ষুদ্র পারমাণবিক (এসএমআর) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের প্রাথমিক কার্যক্রমও এই অর্থ বছরে শুরু হবে বলে জানা গেছে। রাশিয়ার ইয়াকুতিয়া অঞ্চলের স্থলভাগে পরমাণু প্রযুক্তিভিত্তিক এ ক্ষুদ্র পারমাণবিক (এসএমআর) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে রসাটম। রাশিয়ার এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ব্যবহৃত হবে সর্বাধুনিক আরআইটিএম-২০০এন রিয়্যাক্টর। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য বিবেচনাধীন প্রকল্পেও এই এসএমআর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

এছাড়া উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস পারমাণবিক গবেষণা রিয়্যাক্টর নির্মাণের কাজও শুরু করার প্রস্তুতি চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রসাটমের মহাপরিচালকের সাক্ষাতে বিষয়টি আলোচনা হয়। সাভারে এ গবেষণা রিয়্যাক্টর স্থাপন করা হবে। শীঘ্রই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এ সব বিষয়য়ে পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান শৌকত আকবর বাংলানিউজকে বলেন, দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলে নির্মাণ সম্ভব না হলেও সেখানে ক্ষুদ্র পারমাণবিক (এসএমআর) বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা আছে। এর কার্যক্রমও এ অর্থ বছরের শুরু করা হবে। গবেষণা রিয়্যাক্টর স্থাপনও এ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে এই সময়ে এ কর্যক্রমও শুরু হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০১ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
এসকে/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।