ঢাকা: তিতাস গ্যাস ক্ষেত্রে গ্যাসের মজুদ ৭২৬ বিসিএফ (বিলিয়ন ঘনফুট) বৃদ্ধি পেয়েছে। থ্রিডি সিসমিক সার্ভের মাধ্যমে গ্যাসের এ বর্ধিত মজুদ নির্ধারণ করেছে বাপেক্স।
সোমবার বিকেলে কারওয়ানবাজারস্থ পেট্রোসেন্টারে কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর।
তিনি জানান, তিতাস গ্যাসক্ষেত্রে ২৩টি স্তরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ১০টি স্তর থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ১০টিতে উল্লেখিত পরিমাণ মজুদ বেড়েছে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৩ সালে হাইড্রো কার্বন ইউনিট টু ডি সিসমিক সার্ভের মাধ্যমে এই গ্যাস ফিল্ডে ৭হাজার ২৩২ বিসিএফ গ্যাস মজুদ নির্ণয় করে। যার মধ্যে থেকে ১৬টি কূপ দিয়ে গতমাস (আগস্ট’১২) পর্যন্ত ৩হাজার ৪৪০ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে।
নতুন ১৩টির গ্যাস স্তরের মধ্যে ৫টিতে কোনো গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। আর ৮টিতে মোট ২ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট) গ্যাস রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৮টি স্তরের মধ্যে দু’টি ওই ১০টি স্তরের উপরে এবং বাকি ছয়টি এর নিচে অবস্থিত। উপরের দু’টি স্তরে ৪৯৪ বিসিএফ গ্যাস মজুদ প্রাক্কলিত করা হয়েছে। যা উত্তোলনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অধিক গভীরতায় ৬টি স্তরের অবস্থান পাওয়া গেছে। এগুলো সাড়ে ৫ হাজার থেকে সাড়ে ৭ হাজার গভীরতায় অবস্থিত। এই স্তরগুলিতে প্রাক্কলিত রিসোর্স ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৯ বিসিএফ।
চেয়ারম্যান আরও জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৪হাজার মিটার পর্যন্ত গভীরতায় গ্যাস উত্তোলন করার প্রযুক্তি রয়েছে।
অধিক গভীরতার এসব স্তর থেকে গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব কিনা তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্যাস ফিল্ডে নতুন ১১টি কূপ খনন করা হবে। যার মধ্যে ৭টি উন্নয়ন কূপ, ৩টি মুল্যায়ন কূপ ও ১টি ৫১০০ মিটার গভীর অনুসন্ধান কূপ।
৩টি কূপ খনন করবে বাপেক্স, ৪টি গ্যাজপ্রম ও ৪টির জন্য শিগগিরই টেন্ডার করা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বাপেক্স থ্রি ডি সিসমিক সার্ভের কাজ শুরু করে। এতে বাপেক্স সিলেট গ্যাস ফিল্ডের রশিদপুর, কৈলাশটিলা, হরিপুর ও বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডের তিতাস ও বাখরাবাদে সাড়ে ১২শ বর্গ কিলোমিটার লাইন সার্ভে সম্পন্ন করে।
এর মধ্যে রশিদপুর, কৈলাশটিলা, হরিপুরের ফলাফল এর আগেই প্রকাশ করা হয়েছে। সোমবার প্রকাশ করা হলো তিতাস গ্যাস ফিল্ডের। অবশিষ্ট বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ডের ফলাফল আগামী জানুয়ারি মাসে প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বাপেক্স এমডি মর্তুজা আহমেদ ফারুক। তিনি একে নতুন দিগন্ত উন্মোচন বলে মন্তব্য করে বলেন, এর আগে এত গভীরতায় কোথাও গ্যাস আবিষ্কার হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১২
এসআইএস/সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম, নিউজরুম এডিটর; নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর