ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

খুলনায় বালি ভরাটে পাউবো ব্যর্থ, কাজ করছে সেনাবাহিনী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৩
খুলনায় বালি ভরাটে পাউবো ব্যর্থ, কাজ করছে সেনাবাহিনী

ঢাকা: প্রস্তাবিত খুলনা কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাটি ভরাটে ব্যর্থ হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনীর বাংলাদেশ ডিজেল প্লান্ট(বিডিপি)।

তবে শুষ্ক মৌসুমে কাজ শেষ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
 
বর্তমানে প্রকল্পের ৭৪ লাখ ১ হাজার ৫ শ ১৭ ঘনমিটার বালি ভরাটের প্রয়োজন হবে। প্রতি ঘনমিটার বালি ভ্যাট ও আয়করসহ দর ধরা হয়েছে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা। এই কাজের জন্য ৯৭ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
 
খুলনা নামকরণ হলেও প্রকল্পটির অবস্থান বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় রাজনগর ইউনিয়নের সাপমারী মৌজায়। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ মালিকানায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য ভূমি উন্নয়ন ও বালি ভরাটের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
 
পাউবোকে এ কাজের জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল ৫৪০দিন। তারা ২৮০ দিনে বালি ভরাট করেছে মাত্র দশমিক ৪৯ ভাগ। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কার্যাদেশ দেওয়া হয়।
 
বিদ্যুৎ বিভাগ সুত্র জানায়, পাউবো প্রকল্প সংলগ্ন পশুর নদী হতে ড্রেজার দিয়ে বালি ভরাটের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পশুর নদীর ড্রেজিংযোগ্য অংশে ড্রেজিং করে মিহি ও পলিযুক্ত বালি পাওয়া যায়।
 
যা দ্বারা প্রয়োজনীয় কমপ্যাকশনে বালি ভরাট কাজ সম্ভব নয় এবং জ্বালানি খরচের বিচারে অর্থনৈতিক ভাবে গ্রহণীয়ও নয়। ফলে ড্রেজার দিয়ে বালি ভরাটের সিদ্ধান্ত পরিহার করে বাল্কহেড ড্রেজার দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় বালি ভরাট করতে চায় পাউবো।
 
কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হয় পাউবো। এ অবস্থায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে তারা অপরাগতার কথা জানায়।
 
জনগুরুত্বপূর্ণ কাজটি প্রকল্প সময়সীমার অবশিষ্ট ২৬০ দিনের মধ্যে সম্পাদনের লক্ষ্যে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের খোঁজে নামে পিডিবি। সে মোতাবেক দরপত্র আহ্বান করা হলে বিডিপি আগ্রহ প্রকাশ করে।
 
পাউবো সূত্র জানায়, বালি ভরাটের জন্য ডিসেম্বর হতে এপ্রিল মাস সর্বাপেক্ষা অনুকূল ও সুবিধাজনক সময়। এ সময়ের পর নদীর স্রোতের কারণে কোনো ড্রেজার বা জলযান ব্যবহার করে বালি ভরাট কাজ করা সম্ভব নয়। কাজ সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রকৃত সময় মাত্র ৪মাস অর্থাৎ মাত্র ১২০ দিন পাওয়া যাবে।
 
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বালি ভরাট কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যে কোনো অনভিপ্রেত জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
 
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বালি ভরাট প্রকল্প সময়সীমার মধ্যে সম্পাদনের লক্ষ্যে ক্রয় সংক্রান্ত আইন, পিপিআর-২০০৮ এর সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি(ডিপিএম)মোতাবেক সম্পাদন করার প্রস্তাব দেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক কাজটি দেওয়া হয় বিডিপিকে।
 
বিডিপি গতমাসে কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে ১০০ একর জমি ভরাট শেষ করেছে বলেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
 
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহাব খান বাংলানিউজকে জানান, বিডিপি বালি ভরাট শুরু করেছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ে বালি ভরাট করে পরবর্তী কাজ শুরু করতে।
 
উল্লেখ্য বাংলাদেশ এবং ভারত সরকারের যৌথ মালিকানায় খুলনা ১৩২০ মেগাওয়াট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১হাজার ৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। প্রথম ইউনিট নির্মাণ কাজ শেষ হলে সেখানে একই ক্ষমতার আরেকটি ইউনিট স্থাপন করা হবে এখানে। এতে মোট বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়বে প্রায় ১দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।
 
কয়লার বর্তমান দর অনুযায়ী এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুতের দাম পড়বে ইউনিট প্রতি ৫ টাকার উপরে। সব বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ সরকার।
 
আমদানি নির্ভর কয়লা দিয়ে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর জন্য অষ্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা বিবেচনা করা হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে পরিবেশবাদী স্থানীয়দের প্রবল আপত্তি রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৩
ইএস./সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।