ঢাকা: ৮২০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টস স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় কমেছে ৮৩৬ কোটি টাকা। প্রথমে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা ।
৮২০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টস প্রকল্পের প্রথমে ১০টি বিদ্যুত পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরির কথা ছিল। এখন একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বাদ দিয়ে ৯টি বিদ্যুত পাওয়ার প্ল্যান্টস স্থাপন করা হবে।
বিদ্যুত বিভাগ ১ হাজার ৮০ কোটি টাকা ব্যয় সম্বলিত ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ঘোড়াশাল পাওয়া প্ল্যান্ট কেন্দ্র বাদ দেওয়া হয়েছে। ঘোড়াশাল বিদ্যুত কেন্দ্র বাদ দেওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় কমে গেছে।
এই প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগীয় প্রধান শামীমা আখতার বাংলানিউজকে বলেন, ‘৮২০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টস স্থাপন প্রকল্প থেকে ঘোড়াশাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বাদ দিয়েছি। এর ফলে এই প্রকল্প থেকে ৮২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত এর পরিবর্তে ৬২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়া যাবে। আমরা প্রথমে নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকার চাহিদার উপর ভিত্তি করে এখানে একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরির প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু এই এলাকায় তেমন চাহিদা নেই যার ফলে প্রকল্পটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ঘোড়াশালে আরো একটি বিদ্যুত পাওয়ার প্ল্যান্টস আছে যেটি দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। আমরা সেটিকে নতুন করে মেরামত করবো। কারণ এটি রাশিয়ানরা তৈরি করেছে। আমরা যদি দেশীয় ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে এটিকে মেরামত করি তবে এখান থেকে আমরা পর্যাপ্ত বিদ্যুত পেতে পারি। যে কারণে ঘোড়াশাল প্ল্যান্টস বাদ দেওয়া হয়েছে। ’
৮২০ মেঃ ওঃ পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টস প্রকল্পের আওতায় এখন ৯টি পাওয়ার প্ল্যান্টস তৈরি করা হবে। গোপালগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, ফরিদপুরে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, পাবনার বেড়া উপজেলায় ৭০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, রাজশাহীর বাঘাবাড়ী উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, রাজশাহীর কাটাখালী উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, রাজশাহীর সান্তাহারে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, চট্রগ্রামের হাটাহাজারীতে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ, চট্রগ্রামের দোহাজারীতে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ ও কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
৬ হাজার ১২৩ কোটি টাকায় ৯টি পাওয়ার প্ল্যান্টস তৈরি করা হবে। এর মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে আসবে ৫ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। এবং বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিপি) দেবে ৩৭৬ কোটি টাকা।
প্রকল্পের মেয়াদকাল জানুয়ারী ২০১০ থেকে ডিসেম্বর ২০১৩ সাল নাগাদ হওয়ার কথা থাকলেও ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধি সংশোধিত অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিপি)
২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ ঘোড়াশাল বিদ্যুত কেন্দ্রের মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮২৬ কোটি টাকা। এই পাওয়ার প্ল্যান্টস বাদ দিয়ে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ একনেকে ৯টি পাওয়ার প্ল্যান্টস অনুমোদন দেওয়া হবে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত পঠভূমিঃ বর্তমানে প্রতি বছর বিদ্যুত চাহিদা প্রায় ৮ দশমিক ৯ ভাগ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন কারণে বিগত বছরগুলোতে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হয়নি। বিদ্যুত ঘাটতির পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে লোডশেডিং বৃদ্ধি পায়।
সরকার কর্তৃক ২০০৭ সালে অনুমোদিত পাওয়ার সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী ২০২৫ সালে অতিরিক্ত ১৭ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইন হাউজ ফেজিবিলিটি স্ট্যডি মোতাবেক ৮২০ মেগাওয়াট হেভি ফুয়েল অয়েল (এইচএফও) এবং হাই স্পিড ডিজেল (এইচএসডি) পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টস প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়।
২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পূর্ণ ঘোড়াশাল প্ল্যান্টসটি বাদ দেওয়ার কারণে ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০১৫ সালের মধ্যে ১১ হাজার ৪৫৭ মেগাওয়াত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টম্বর ১০, ২০১৩
এমআইএস/কেএইচ/এমজেডআর