ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জুন ২০২৪, ২৮ জিলকদ ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নতুন তেল কোম্পানি, বিপিসির না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৩
নতুন তেল কোম্পানি, বিপিসির না

ঢাকা: জ্বালানি তেল সরবরাহের বেসরকারি খাতে নতুন কোম্পানি গঠন করতে চায় সরকার। এ জন্য ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডকে মনোনীত করা হয়েছে।


 
নতুন এই কোম্পানি গঠনের চরম বিরোধী দেশের একমাত্র জ্বালানি তেল আমদানিকারক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এমনকি প্রস্তাবিত কোম্পানিতে অংশিদার হতেও নারাজ রাষ্ট্রীয় কোম্পানিটি।
 
বিপিসি তাদের মতামতে বলেছে, তারা এই কোম্পানি গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখছে না। দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণে তারা সক্ষম। যদি একান্তই নতুন কোম্পানি গঠন করতে হয় তাহলে তাদের বাদ দিয়েই করার পক্ষে মত দিয়েছে।
 
প্রস্তাবিত এই তেল সরবরাহ কোম্পানিতে বেসরকারি কোম্পানির থাকবে সর্বাধিক ৫১ শতাংশ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ৩৯ শতাংশ আর বিপিসিকে শেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে ১০ শতাংশ।
 
একাধিকবার বৈঠক করেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। জ্বালানি বিভাগ গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মঙ্গলবার সর্বশেষ উচ্চ পর্যায়ের সভাও উত্তপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
 
বৈঠকে বিপিসিকে একহাত নেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক, সচিব মনোয়ার ইসলাম। তারা বিপিসির অব্যবস্থাপনা ও লুটপাটের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেন।
 
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, পেট্রোলিয়াম অ্যাক্ট অনুসারে বিপিসি ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য আমদানির সুযোগ নেই। তাই নতুন কোম্পানি গঠন করতে হলে আইনও সংশোধন করতে হবে।
 
এছাড়া প্রতি বছর বিপিসি ও তার কোম্পানিগুলোর মজুদ সক্ষমতা বাড়ছে। আগামী বছর ৭০ থেকে ৮০ লাখ টন তেল সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করবে বিপিসি। গত বছর ৫১ লাখ টন তেলের চাহিদা পূরণ করেছে সংস্থাটি। তাই বিপিসি একাই পিডিবির চাহিদা পূরণ করতে পারে। এর জন্য আলাদা কোনো কোম্পানির দরকার নেই।
 
জানা যায়, তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ায় গত কয়েক বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য বছরে ১০ থেকে ১২ লাখ টন ফার্নেস তেল নেয় পিডিবি। এ তেল নিয়ে নানা অভিযোগ আছে পিডিবি ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর কর্মকর্তাদের। এসব অভিযোগের সমাধান না হওয়ায় ২০১১ সালে পৃথক কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেয় পিডিবি।
 
বিপিসির চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের সক্ষমতা বিপিসির আছে। তারপরও নতুন কোম্পানির ব্যাপারে আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
 
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। দুটি কোম্পানি অংশ নিলেও কেউ যোগ্য বিবেচিত হয়নি। এরপর গত মার্চে আবারও দরপত্র আহবান করা হয়। ভিটল এশিয়া, সামিট ও ইউনাইটেড এতে অংশ নেয়। জুলাইয়ে ইউনাইটেডকে নির্বাচিত করা হয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে গত আগস্টে চুক্তির খসড়া তৈরি করে পিডিবি।
 
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা তেল কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এরইমধ্যে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। বিপিসির কাছে সবগুলো সংগঠন পৃথক পৃথকভাবে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। জ্বালানি বিভাগকে দেওয়া চিঠিতে এসব বিস্তারিত জানিয়েছে বিপিসির চেয়ারম্যান।
 
বিপিসি অধীনস্ত তেল বিপণন কোম্পানিসগুলোর শ্রমিক সংগঠন ও কর্মকর্তা সমিতির তৎপরতা বিরাজমান পরিস্থিতিকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিপিসি।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৩
ইএস/এএইচএস/জিসিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।