ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুতের দাম ৬.৬৬ ও ৭.৫১ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৪
বিদ্যুতের দাম  ৬.৬৬ ও ৭.৫১ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম  ৬.৬৬ শতাংশ ও ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ৭.৫১ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) টেকনিক্যাল কমিটি বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির গণশুনানিতে এ সুপারিশ তুলে ধরে।


 
বিপিডিবি ১৫.৫০ শতাংশ আর ওজোপাডিকো ৮.৫৯ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিলো। ওজোপাডিকো’র প্রস্তাব নিয়ে তেমন সমালোচনা না থাকলেও বিপিডিবি’র কর্মকর্তারা শ্রেণিভেদে দামের তারতম্যের কারণে ভোক্তাদের তোপের মুখে পড়েন।
 
বিইআরসি কার্যালয়ে মঙ্গলবার সকালে বিপিডিবি’র দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর আর বিকেলে ওজোপাডিকো’র প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি গ্রহণ করা হয়।

বুধবার ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ও ঢাকা ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের উপর গণশুনানি গ্রহণ করা হবে। ডিপিডিসি ২৩.৫০ শতাংশ আর ডেসকো ১৫.৯০ শতাংশ দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে।

সকাল সাড়ে ১০টায় গণশুনানি শুরু হয়। আর এর ঠিক ৩০ মিনিট পর দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে বিইআরসি ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে গণসংহতি আন্দোলন, চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
 
বিইআরসি’র চেয়ারম্যান এ আর খান শুনানি শেষে সাংবাদিকদের জানান, আমরা দেশবাসীকে টেনশনে রাখতে চাইনা। আনুষ্ঠানিকতায় কিছুটা সময়তো লাগবেই। খুব শিগগিরই আদেশ দেওয়া হবে।
 
তিন বলেন, বিদ্যুৎ ফ্রি তো পাওয়া যাবে না। অন্তত সহনীয় রাখতে হবে। সে চেষ্টাই করবে কমিশন। কারো কোনো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা থাকলে দু’দিনের মধ্যে লিখিত জমা দিতে পারবেন।
 
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম দাম না বাড়িয়ে কমানোর প্রস্তাব করেন।
 
শামসুল আলম বলেন, এর আগে যখন ২০১২ সালে দাম বাড়ানো হয়েছিলো, তখন বলা হয়েছিলো, ২০১৪ সালে বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আসলে দাম কমানো হবে। সে কারণে এখন দাম কমানোই হবে ন্যায়সঙ্গত।
 
কুইক রেন্টাল বন্ধ ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন কমিয়ে গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ালেই উৎপাদন খরচ কমে আসবে। তখন দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে না বলেও মন্তব্য করেন শামসুল আলম।
 
জবাবে বিইআরসি’র চেয়ারম্যান বলেন, আপনি লিখিত প্রস্তাবনা দেন। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবো।
 
শুনানিতে তোপের মুখে পড়েন বিপিডিবি’র কর্মকর্তারা। বিপিডিবি গড়ে ১৫.৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। কিন্তু কৌশলে নিম্ন আয়ের লোকজনের বিদ্যুতের দাম বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে বলে গণশুনানিতে বক্তব্য তুলে ধরেন কমিউনিস্ট পার্টির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স।
 
তিনি বলেন, বিপিডিবি গড়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ বললেও আবাসিকে সর্বনিন্ম ধাপ ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীদের প্রায় ৪০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সাধারণ গরিব শ্রেণির লোকজন এ ধাপের ব্যবহারকারী।
 
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, বিপিডিবি’র ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারী গ্রাহকরা বর্তমান প্রতি  ইউনিটের মূল্য পরিশোধ করছে ৩.৩৩ টাকা। এই ধাপে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে ১.৩৩ টাকা।
 
আর ধনিক শ্রেণির গ্রাহক যারা ৪০১ ইউনিটের উর্ধে ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে মাত্র ২ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না।
 
এভাবে দাম বাড়ানো হলে জনগণ প্রতিহত করবে বলেও মন্তব্য করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স।
 
বিপিডিবি’র কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মূলত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের গ্রাহকদের সঙ্গে সামঞ্জস্য করতেই এমনটি করা হয়েছে।
 
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা ইফতেখার আহমেদ বাবু গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, বিপিডিবি’র এ বৈষম্যমূলক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হলে গণআদালত বসানো হবে। গণআদালত বসাতে আমাদেরকে বাধ্য করবেন না।

গণশুনানি গ্রহণ করেন বিইআরসি’র চেয়ারম্যান এআর খান, সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ, প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন ও মাকসুদুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।