খুলনা: সুন্দরবন সংলগ্ন রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণে বনের কাছাকাছি অভয়ারণ্যে অপরিমেয় ঝুঁকি হবে বলে উল্লেখ করেছেন জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেষ্ট কোনজে।
রোববার বিকেলে খুলনার খালিশপুর গোয়ালপাড়াস্থ খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (কেপিসিএল) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি না যে, দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের জন্য রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেবে, যার ইতিবাচক ফলাফল এ প্রকল্পের পরিবেশ ঝুঁকির চেয়ে বেশি হবে।
তিনি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এ প্রাকৃতিক সম্পদকে যে কোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। এজন্য তিনি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য অন্য এলাকা বাছাইয়ের সময় শেষ হয়ে যায়নি বলেও উল্লেখ করেন।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে। এসময়ে যখন বিদ্যুতের চাহিদা এবং জোগান বাড়ছে, তখন সঠিক বাছাইটি এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি। জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিবেশের ঝুঁকির কথাও ভাবতে হবে। কিন্তু পরিবেশ ঝুঁকির মধ্যে রেখে সুন্দরবনের কাছে এবং পাবনার কাছে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সরকারের সিদ্ধান্তে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ক্ষতির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ড. আলব্রেষ্ট কোনজে বলেন, প্রথমত: বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। কারণ সবসময় রিঅ্যাক্টরকে ঠাণ্ডা রাখতে হবে, যা ইকোসিস্টেমকে বদলে দেবে।
দ্বিতীয়ত: ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। সার্বিকভাবে নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো সবসময়ই ঝুঁকির মধ্যে থাকে। যা ভূ-কম্পনের কারণে অনিরাপদ এলাকায় পরিণত হলেও পরিমাপ করা সম্ভব হয়না। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা জার্মান কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে নতুন প্রযুক্তি প্রস্তাব করতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কেএফ ডাব্লিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক, ঢাকা অফিসের পরিচালক (স্পেশাল প্রোগ্রামস) মিস লিসা স্টেইনেচার ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিবি) নির্বাহী পরিচালক (ওঅ্যান্ড এম) তপন কুমার রায় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত দু’দিনের সফরে খুলনাঞ্চলে কেএফ ডাব্লিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক ও জিআইজেড’র সহায়তায় বাস্তবায়িত কাঠামোগত উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয় পূরণ এবং জীববৈচিত্র রক্ষাখাতের বেশ কিছু প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৪০