ঢাকা: নির্ধারিত সময়ে কাজ করতে না পারায় ১২টি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রকল্প (আইপিপি) বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
প্রস্তাবিত এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিকানা বেসরকারি মালিকদের হাতে থাকার কথা। সেখান থেকে নির্দিষ্ট দরে সরকারের বিদ্যুৎ কেনার কথা। এর নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বাংলানিউজকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, যারা কাজেই শুরু করতে পারেনি, সেগুলো বাতিল করা হবে। আর যারা আসতে বিলম্ব করছে তাদের এলডি (বিলম্বের কারণে জরিমানা) কর্তন করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বসে থাকবে, তেমনটি হতে দেওয়া হবে না। অনেকবার সময় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু করতে পারেনি। তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আইন অনুযায়ী চুক্তি বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির জামানত বাতিল করা হবে। বাতিলের প্রক্রিয়ার থাকা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সরকার দলীয় এমপি আসলামুল হকের ১০৮ মেগাওয়াট বসিলা পাওয়ার প্লান্ট ও ১০৮ মেগাওয়াট গাবতলী পাওয়ার প্লান্ট রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র দু’টির জন্য চুক্তি করা হয় ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর।
চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র দু’টি এক বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১২ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা ছিলো। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে প্রায় ২ বছর আগে। কিন্তু এখনও কাজেই শুরু করতে পারেনি কোম্পানিটি। চুক্তি সম্পাদনের দিনে সরকার দলীয় এই এমপি বলেছিলেন, আমি আগে থেকেই কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎ দিতে পারবো।
সিনহা গ্রুপের সিনহা এনার্জি লিমিটেড’র ৫২ মেগাওয়াট আলিরটেক (নারায়ণগঞ্জ) পাওয়ার প্লান্টও বাতিলের তালিকায় রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এর উৎপাদনে যাওয়ার নির্ধারিত সময় ছিলো ২০১৩ সালের জানুয়ারি। এখনও কাজই শুরু করতে পারেনি সিনহা এনার্জি।
অন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হচ্ছে, মানিকগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, নারায়ণগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, টাঙ্গাইল ২২ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, কালিয়াকৈর ১৪৯ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, সাতক্ষীরা ৫৪ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট, কমলাঘাট ৫৩ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট।
বিদ্যুৎ বিভাগ সুত্র জানিয়েছে, ১২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয়েছিলো ১ হাজার ৩৫০ মেগাওয়াট। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বাতিল করলে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য সমান ক্ষমতায় নতুন তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। যে ফাইলটিও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, নতুন প্রস্তাব অনুমোদন পেলেই পুরোনো চুক্তিগুলো বাতিল করা হবে। কারণ এগুলো মাস্টার প্লানের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০১৪