ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আরো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হচ্ছে টিউবলাইট

মফিজুল সাদিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৪
আরো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হচ্ছে টিউবলাইট

ঢাকা: সাধারণ বাল্বের চেয়ে অনেক বেশি বিদুৎ সাশ্রয় করে টিউবলাইট। সেই টিউবলাইট যাতে আরও বেশি বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারে এবার সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বসানো হচ্ছে নতুন স্বয়ংক্রিয় মেশিন।

৭০ বছরের পুরনো মেশিনের পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় মেশিন স্থাপন করে বিদ্যুত সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে ফ্লোরেসেন্ট টিউবলাইট ও এলইডিলাইট উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন  (বিএসইসি)। এতে করে আরও বিদ্যু‍ৎ সাশ্রয়ী হবে টিউবলাইট।

‘স্বয়ংক্রিয় মেশিন ফ্লোরেসেন্ট টিউবলাইট উৎপাদন ও এলইডিলাইট (সিকেডি) সংযোজন প্ল্যান্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এসব তথ্য জানায় পরিকল্পনা কমিশন সূত্র।

সূত্র জানায়, জুলাই ২০১৪ থেকে জুন ২০১৬ মেয়াদে বিএসইসি প্রকল্পটি বাস্তাবায়ন করবে। ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড তেজগাঁওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

প্রকল্পের আওতায় ৭০ বছরের পুরনো মেশিনের পরিবর্তে স্বয়ংক্রিয় মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে ফ্লোরেসেন্ট টিউবলাইট উৎপাদনের মাধ্যমে কারখানার কার্যক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বাড়ানো হবে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী লাইটিং সামগ্রী তৈরি করা যাবে এ মেশিনে।

কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় পরিবেশবান্ধব লাইটিং সামগ্রী তৈরি ও উৎপাদন ব্যয় কমিয়ে মুক্তবাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় অধিক লাভজনক হওয়ায় চেষ্টা করা হবে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের।

প্রকল্পের মাধ্যমে এক্সিকিউটিভ টেকনোলজিস লিমিটেডের (ইটিএল) নিজস্ব জায়গায় ছয়তলা ভিতসহ চারতলার একটি ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনটির নীচতলায় স্থাপন করা হবে স্বয়ংক্রিয় মেশিনে ফ্লোরেসেন্ট টিউবলাইট ও এলইডিলাইট প্ল্যান্ট।

সূত্র জানায়, ফ্লোরেসেন্ট টিউবলাইট ও এলইডিলাইট উৎপাদনের মাধ্যমে বর্তমানে টিউবলাইট উৎপাদনে যে বিরাট অপচয় হয় তা নূন্যতম পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। এতে পণ্যের উৎপাদন খরচ কমে প্রতিষ্ঠানটি সরকারের একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিকে থাকবে। এছাড়া প্রকল্পের মাধ্যমে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প শক্তি বিভাগের  যুগ্ম-প্রধান মহসীন আলী খন্দকার স্বাক্ষরিত চিঠিতে দেখা যায়, টিউবলাইটে আরো বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করতে ৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বছরে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করা যাবে। বিদ্যমান টিউবলাইট তৈরির পদ্ধতি পরিবর্তন করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী টিউবলাইট তৈরি করা হবে।

বিএসইসি জানায়, ১৯৮৭ সালে বিএসইসি’র মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেওয়া হলেও সফল হয়নি। বিশ্বায়নের ফলে তীব্র প্রতিযোগীতায় চায়না এবং ইন্ডিয়া উৎসের নিম্ন মানের ও সস্তা টিউবলাইট  আমদানী হওয়ায় ইটিএল এর উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় সংকটের মুখে পড়েছে। এর ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসি তথ্যে দেখা গেছে, ১৯৯৪ সালে ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেডের মেশিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তোশিবা করপোরেশন, জাপানের বিশেষজ্ঞগণ পর্যবেক্ষণ করত। এর বর্তমানে মেশিনসমূহের আয়ুস্কাল অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে ও ব্যবহারের অযোগ্য  বলে মতামত দেন  এবং মেশিনসমূহ পরিবর্তনের সুপারিশ করেন।

বিএসইসি সূত্র জানায়, কোনো বিকল্প না থাকায়  তারপরও প্রয়োজনীয় মেরামতের মাধ্যমে মেশিনগুলো বর্তমানে পর্যাপ্ত ব্যবহার করা হচ্ছে না। এতে কাঁচামাল ও শ্রমঘণ্টার যথেষ্ট অপচয় হচ্ছে এবং পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেড প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের অংশ হিসেবে ইস্টার্ন টিউবস লিমিটেডকে আরও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ খরচ কমানোর জন্য বাল্ব ও মেশিনগুলোর প্রয়োজনীয় মোডিফিকেশন করা হবে। চলমান ৪-৪০ ওয়াট এবং ২-২০ ওয়াটের (টি-১০) টিউবলাইটের পরিবর্তে ৪-৩৬ ওয়াট এবং ২-২০ ওয়াটের (টি-৯) টিউবলাইট তৈরি করা হবে। যাতে বছরে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত সাশ্রয়ী হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।