ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বড়পুকুরিয়া থেকে আরো ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
বড়পুকুরিয়া থেকে আরো ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): দেশে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের লক্ষে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরো ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষে নতুন ই‌উনিট নির্মাণের কাজ চলছে।

প্রায় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তৃতীয় ইউনিট নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।



তৃতীয় ইউনিট নির্মাণ শেষে উৎপাদনে শুরু হলে বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াটে গিয়ে দাঁড়াবে।

এতে দেশের উত্তর-পশ্চিম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ ছাড়াও লো ভোল্টেজজনিত সমস্যা কমে আসবে।

২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে এ ইউনিট থেকে বিদ্যুতের উৎপাদন শুরু করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, তৃতীয় এ ইউনিটের পাইলিং কাজ শুরু হওয়ায় বড়পুকুরিয়া ও আশপাশের এলাকার অন্তত দুই শতাধিক  শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

সূত্র জানায়, পার্বতীপুরে অবস্থিত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে আহরিত কয়লা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে খনিমুখে ২৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়।

এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১২৫ মেগাওয়াট করে। বর্তমানে ওই কেন্দ্রটিকে সম্প্রসারণ করে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিট স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

এজন্য দরপত্রদাতার ঋণের (বায়ারস ক্রেডিট) আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়।

এতে তিনটি বৈদেশিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। শর্ত পূরণ না হওয়ায় একটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল করা হয়।

পরে প্রাথমিকভাবে অপর দুই প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন ও সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ কোম্পানি নিয়ে গঠিত সিএমসি/এসইসি কনসোর্টিয়াম এবং জয়েন্ট ভেঞ্চার হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল ও সিসিসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড চায়নার দরপত্র বাছাই করা হয়।

বাছাই শেষে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে জয়েন্ট ভেঞ্চার হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল এবং সিসিসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়।

তাদের দরপত্র গ্রহণের সুপারিশ করে সরকারি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর। সরকারের ক্রয় কমিটি ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ তা অনুমোদন করে। পরে ২০১৩ সালের ৪ জুলাই ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পিডিবির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চলতি বছরের ১৫ জুলাই চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পর গত আগস্ট মাস থেকে পাইলিং কাজ শুরু হয়। চুক্তি কার্যকরের দিন থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ তিন বছর।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সরেজমিনে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল ভবন (বয়লার ও মেশিন ভবন) সংলগ্ন উত্তর পাশে পুরোদমে চলছে পাইলিং কাজ।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী সারথ চন্দ্র ভাদুড়ী ও নির্বাহী প্রকৌশলী ( আইঅ্যান্ডসি) মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, নির্মিতব্য তৃতীয় ইউনিটে বয়লার ও গ্যাস টারবাইন দুই ব্যবস্থাই রাখা হবে।

এরফলে কয়লা বা গ্যাস যে কোনটিই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ইউনিটটি চালু রাখা যাবে। ২০১৮ সালের জুন মাসের মধ্যে ইউনিটটি উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে যে গতিতে কাজ চলছে তাতে নির্ধারিত সময়ের অন্তত তিন মাস আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
 
তিনি আরো জানান, নির্মিতব্য ইউনিট থেকে উৎপাদন শুরু হলে দেশের উত্তর-পশ্চিম জোনের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কমে আসবে লো ভোল্টেজজনিত সমস্যা। এছাড়া এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তির মাধ্যমে ট্রান্সমিশন লস কমানো যাবে।

নির্মাণের পর তৃতীয় ইউনিটটি চালু রাখতে বছরে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এর মাধ্যমে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।