ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে দরকার আরও ৪৭৩ কোটি টাকা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানিতে দরকার আরও ৪৭৩ কোটি টাকা

ঢাকা: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় স্থাপিত বাংলাদেশ-ভারত বিদ্যুৎ সঞ্চালন কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতের বহরমপুর থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার। ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ আসতে শুরু করেছে।

১০ বছর মেয়াদে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।

বিদ্যুৎ আমদানির লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ (ভেড়ামারা)-ভারত (বহরমপুর) বিদ্যমান গ্রিড আন্তঃসংযোগ ক্ষমতা বর্ধিতকরণ (৫০০ মেগাওয়াট)’ শীর্ষক প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে জানুয়ারি মাসে। ২০১৮ সালের জুন মাসে তা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রকল্প ব্যয়, প্যাকেজের মূল্য, সিডিভ্যাট, ভ্যাট, বেতন-ভাতা, ক্ষতিপূরণ ব্যয়, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়েছে প্রকল্পটি।

এসব প্রতিবন্ধকতা কাটাতে আরও ৪৭৩ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। তবে কমছে প্রকল্পের পরামর্শক ব্যয়।

পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগে এ বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি নিয়ে পিজিসিবি ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রকল্প  মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি চূড়ান্ত হবে।
 
পিজিসিবি’  ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনি বলেন, প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে সবেমাত্র। সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের ডিপিপি (প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাব) সব সময় এক থাকে না। মাঝে-মধ্যে পরিবর্তন হয়। আমরা পরিকল্পনা কমিশনে ৪৭৩ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছি। তবে এখনও তা চূড়ান্ত হয়নি। সামনে পিইসি সভা আছে, সেখানেই সবকিছু চূড়ান্ত হবে’।
 
 
পিজিসিবি সূত্র জানায়, উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পের সরকারি খাতে ১৪৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য খাতে ১৫৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং পিজিসিবি খাতে ১৭৩ কোটি টাকাসহ অতিরিক্ত ৪৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকার প্রয়োজন। এ অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া প্রকল্পের প্রতিবন্ধকতা কাটানো কঠিন বলে জানায় পিজিসিবি।
 
পিজিসিবি জানায়, প্রকল্পের সমঝোতা মূল্য, সিডিভ্যাট, নির্মাণকালীন সুদ, বেতন-ভাতা, ক্ষতিপূরণ এবং ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন, চারটি স্টেশন নির্মাণ ও ২৩০ কেভি বে সম্প্রসারণের জন্য নানা প্যাকেজের ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সবগুলো প্যাকেজে প্রায় ২২৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত ব্যয় বেড়েছে। প্যাকেজগুলোর প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল এক হাজার ৪৫ কোটি টাকা। এছাড়া মূল ডিপিপি’তে সিডিভ্যাট খাতে বরাদ্দ ছিল ২২৮ কোটি টাকা। স্থলবন্দরে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিংয়ের (সিঅ্যান্ডএফ) মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপি’তে সিডিভ্যাট বৃদ্ধি পেয়ে ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা হয়েছে।
 
অন্যদিকে প্রকল্পের মূল ডিপিপি’তে প্রধান প্যাকেজে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে এবং পরামর্শক সার্ভিসের ওপর ২৫ শতাংশ হারে মোট ২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১ জুলাই থেকে রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী এ খাতে মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
 
নির্মাণকালীন সুদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এ খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৬৮ কোটি টাকা। বেতন-ভাতা খাতে ৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। পিজিসিবি’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য নতুন অনুমোদিত বেতন কাঠামোর জন্য এ খাতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ক্ষতিপূরণ খাতে ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) পরামর্শকদের প্রস্তাব অনুসারে এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (ইএমপি) রিসেটেলেমেন্ট প্ল্যান (আরপি) ও ক্ষতিপূরণ বাবদ  ৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে।
 
তবে প্রকল্পের পরামর্শক সেবা খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ২৮ কোটি টাকা। কিন্তু খরচ হয়েছে ২৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এ খাতে ৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

এদিকে সংশোধিত ডিপিপি’তে প্রকল্পের মেয়াদ ছয়মাস বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।