ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‌ইউনেস্কোর কেউ তো বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ নন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
‌ইউনেস্কোর কেউ তো বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ নন ছবি: দীপু-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ইউনেস্কোর যারা এ‌সে‌ছিলেন তারা কেউই বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ নন। তাদের অবস্থা আমাদের দে‌শের লোকজনের মতো।

দে‌শের যারা কথা বল‌ছেন তারাও কেউ কিন্তু বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ নন। কেউ ইকোন‌মিস্ট, কেউ বা‌য়োল‌জিস্ট। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলছেন।

রামপাল নিয়ে ইউনেস্কো ও জাতীয় ক‌মি‌টির সমালোচনার এমন জবাব দিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালা‌নি ও খ‌নিজ সম্পদ প্র‌তিমন্ত্রী নসরুল হা‌মিদ।

বৃহস্প‌তিবার (২৭ অ‌ক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মেগা প্র‌জেক্ট ডিবেট’ শী‌ষর্ক সে‌মিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি। এনা‌র্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগা‌জিন তা‌দের ১৩তম প্র‌তিষ্ঠাবা‌র্ষিকী উপল‌ক্ষে এ সে‌মিনারের আয়োজন করে।

প্র‌তিমন্ত্রী ব‌লেন, না, না করা লোক‌দের হ্যাঁ, হ্যাঁ করতে হ‌লে কোনো কাজ করা যাবে না। আমরা ইউনেস্কোতে এক‌টি টিম পাঠি‌য়ে‌ছি। আশা কর‌ছি তাদের বোঝাতে সক্ষম হ‌বেন।

‌দেশি সমালোচকদের উ‌দ্দে‌শ্যে তিনি ব‌লেন, আপনা‌দের এতো বিরোধিতা সত্ত্বেও দেশ এ‌গিয়ে যা‌চ্ছে। যারা উপ‌দেশ দি‌চ্ছেন প‌জি‌টিভ হন, সবাই মি‌লে দেশটাকে গ‌ড়ি।

এদিন প্রতিমন্ত্রী খানিকটা কঠোর ভাষায় জবাব দেন সমালোচকদের।

বাপেক্সের সাবেক এমডি মর্তুজা আহমেদ ফারুক আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, অবশোরে কোনো তথ্য নেই ‍কারণে বড় বড় কোম্পানিগুলো আগ্রহী হচ্ছে না। এ জন্য মাল্ট্রিক্লেইন সার্ভে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি বিদেশি কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার জন্য দু’দফায় টেন্ডার করা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ফুলবাড়ি কয়লাক্ষেত্রের সীদ্ধান্তহীনতার কারণে সংকট তৈরি হয়েছে। কতদিন হয়ে গেলো এখন এ বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।

বাপেক্সের সাবেক এই এমডির বক্তব্যের জবাবে বলেন, সরকারে থাকাকালে বুদ্ধি-বিবেক লোপ পায়। সরকার থেকে বেরিয়ে গেলে সব উপদেশ দিতে শুরু করে।

ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা সামছুল আলম সরকারের দুর্নীতির সমালোচনা করে বলেন, মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে এ অভিযোগ আরও বেশি প্রযোজ্য। অনেক ক্ষেত্রে তথ্য পাওয়া যায় না।

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় নিজেরাই বিতর্ক তৈরি করছে। তাদের পক্ষে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব কি-না এ সংশয় তৈরি হচ্ছে।

জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলে, তথ্য পাওয়া যায়নি এ কথা সঠিক নয়। আমাদের ওয়েবসাইট রয়েছে। আপনি মেইল দেন দেখবেন সর্বোচ্চ তিন ঘণ্টার মধ্যে উত্তর পেয়ে যাবেন। হেড লাইন তৈরির জন্য অনেকে অনেক কথা বলেন, আমরা কিন্তু হেডলাইন তৈরির জন্য কোনো কথা বলি না।
ফেসবুকে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচনার জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কারা এই সমালোচনা করছে আমার কাছে তথ্য আছে। আমি নাম ধরে বলতে পারি এরা বিএনপি-জামায়াতের লোক।

আব্দুল খালেক, ফয়সাল, আমিরুল, এমএ হাকিমসহ কয়েকজনের নামও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ পলিটিসাইজ করা হয়েছে সারা বিশ্বে দুর্নাম করার জন্য।

পদ্মা সেতু প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তখন অনেকে বলেছিল অনেক দুর্নীতি হয়েছে, এ প্রকল্প বাতিল করতে হবে। কেউ কেউ এমনও বলেছিল পদ্মা সেতু হলে ইলিশ মাছ হারিয়ে যাবে। কিন্তু তাদের কোনো কথাই সঠিক হয়নি। এখন বিদ্যুতের প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ কোনো বিষয় না। অনেক বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগের প্রস্তাব দিচ্ছে। আমরা বরং বাছাই করছি। আসেন পজিটিভ হন। সুন্দর বাংলাদেশ গড়ি।

এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগা‌জিনের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ হোসেনের সভাপ‌তিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর প্রকৌশলী খন্দকার সালেক সুফি।

অন্য‌দের মধ্যে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সদস্য ড. সে‌লিম মাহমুদ, প্রকৌশলী ইমদাদুল হক , বুয়েটের সহকারী অধ্যাপক ড. কাজী বায়েজিদ কবীর, বিদ্যুৎ ‍উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রমুখ।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬/আপডেট: ১৭৫২
এসআই/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।