আঞ্চলিক চাহিদা পূরণসহ জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যেই খুলনা খালিশপুরের ভৈরব নদীর তীরে প্রায় ৬২ একর জমির উপরে নতুন করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। ১৯৫৪ সাল থেকেই এখানে বিভিন্ন ক্ষমতার কয়েকটি ইউনিট রয়েছে।
তবে নির্ধারিত বয়সসীমা অতিক্রম করায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় ৬০ মেগাওয়াট ও ১১০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট ছাড়া বাকিগুলোকে অবসর দেয়া হয়েছে। এই দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা কমে ৩০ ও ৬০ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে। ফলে খুলনাসহ আশেপাশের এলাকায় এই দুটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই নতুন করে ৩৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে চায় সরকার। এই লক্ষ্যে ‘খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন’ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে সরকার।
এতে মোট ব্যয় হবে তিন হাজার ২৫৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারি খাত থেকে আসবে ৮৯০ কোটি ৬১ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে চীন সরকার দেবে ২ হাজার ১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। বাকি ৩৪৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা দেবে পিডিবি। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে জুন ২০১৯ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।
খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) রেজাউল করিম বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্প এলাকায় পুরাতন দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। তাই নতুন করে খুলনায় ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ডিজেলে কেন্দ্রটি চালাবো। এরপরে অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে গ্যাস সংযোগ দিতে পারলেই গ্যাসে চালানো হবে। সরকার ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। তারই ধারাবাহিকতায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের কোনো ল্যান্ড লাগবে না। ’
তিন হাজার ২৫৩ কোটি ব্যয় প্রসঙ্গে রেজাউল করিম বলেন, ডুয়েল ফুয়েলে খরচা একটু বেশিই হয়। আমরা এই কেন্দ্রটি ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবো। যদি কম খরচে চীন সরকার প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে দিতে পারে তবে টাকা আরও সাশ্রয় হবে। ’
পিডিবি সূত্র জানায়, প্রকল্পের উপর সম্ভাব্য জরিপ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় পর্যাপ্ত তরল জ্বালানি, পানি ও গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যাবে। এসব বিচার বিশ্লেষণ করেই ডুয়েল ফুয়েল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় চীনা কোম্পানি কনসোর্টিয়াম অব জিয়াংসু ইস্টার্ন কোম্পানি লিমিটেড এবং হারবিন ইলেকট্রিক ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডের নিকট থেকে ঋণের নিশ্চয়তাও পাওয়া গেছে। এই লক্ষ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে।
পিডিবি সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নতুন এ প্ল্যান্ট থেকে তরল জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে ৩৩৫ দশমিক ৫ মেগাওয়াট এবং গ্যাস ব্যবহার করে ৩৫৭ দশমিক ৪৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
এমআইএস/আরআই