তবে প্রকল্পের ব্যয় বাড়লেও গ্রাহকদের উপরে চাপ পড়বে না বলে জানায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল)।
প্রতিটা প্রি-প্রেইড গ্যাসমিটার বাবদ খরচ পড়বে ১ হাজার ৬১০ টাকা।
১৮ লাখ গ্রাহকের জন্য আবাসিক প্রি-পেইড গ্যাসমিটার তৈরির পরিকল্পনাটি এখন প্রথম পর্যায়ে। এই পর্যায়ে দুই লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড গ্যাসমিটার দেয়ার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকি ১৬ লাখ গ্রাহকের জন্য স্থাপন করা হবে প্রি-পেইড গ্যাসমিটার।
তিন বছর মেয়াদি‘ প্রি-পেইড গ্যাসমিটার বিষয়ক প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৫ সালে। অথচ শেষ সময়ে এসে বাড়ছে মিটার স্থাপনের ব্যয়। ৭১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পেট্রোবাংলা। এতে করে প্রতিটি প্রি-পেইড গ্যাস মিটারের পেছনে সরকারের ব্যয় হওয়ার কথা ছিলো ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু প্রাক্কলিত ব্যয়ের চেয়ে ব্যয় এখন অনেক বেড়ে গেছে। অর্থাৎ প্রতিটি গ্যাস মিটার স্থাপন বাবদ ব্যয় বাড়ছে ১ হাজার ৬১০ টাকা করে। ফলে প্রতিটা গ্যাস মিটারের মোট ব্যয় গিয়ে ঠেকছে ৩৭ হাজার ২১০ টাকায়।
প্রথম পর্যায়ে নগরীর বাড্ডা, গুলশান, তেজগাঁও, ক্যান্টনমেন্ট, মিরপুর, কাফরুল, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, উত্তরা, পূর্বাচল ও ঝিলমিল এলাকায় প্রায় দুই লাখ প্রি-পেইড মিটার দেয়ার লক্ষ্যে প্রকল্পটি চলমান আছে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) সূত্র জানায়, মূলত তিনটি কারণে দুই লাখ আবাসিক গ্রাহককে প্রি-পেইড গ্যাস মিটার দিতে ব্যয় বাড়ছে। প্রথমত, দুই লাখ প্রি পেইড মিটার কিনতে মোট ব্যয় হচ্ছে ৩১২ কোটি ৪৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। অথচ প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাবনায় (ডিপিপি)ব্যয় ধরা হয়েছিলো ২৮ কোটি ১২ লাখ ৫ হাজার। ফলে মিটার কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩১ কোটি ২০ লাখ ৭৩ হাজার বা ১১ দশমিক ১০ শতাংশ অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে।
ওয়েব সিস্টেম হার্ডওয়্যার বাবদ মোট ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৭৬ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। অথচ এখাতে বরাদ্দ ছিলো মাত্র ২২ কোটি ৯১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। ফলে এখাতে ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। ওয়েব সিস্টেম সফটওয়্যার বাবদ মোট খরচ হয়েছে ৮ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এখাতে বরাদ্দ ছিলো ৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এই খাতেও ১৫ লাখ টাকা বাড়ছে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে তিনটি খাতে ৩২ কোটি ২০ লাখ ২৩ হাজার টাকা বাড়ছে। প্রকল্পের আওতায় কারিগরিভাবে গ্রহণযোগ্য দরদাতার দরপত্রের তিনটি খাতে ব্যয় বাড়ার কারণেই বাড়ছে প্রিপেইড মিটার খরচা।
এই প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক অনিমেষ চাকমা বাংলানউজকে বলেন, ‘প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হওয়ার পরে গ্রাহকদের ওপর কোনো চাপ পড়বে না। কারণ প্রকল্পের ৫০ শতাংশই ব্যয় হয়ে যায় সিডি/ ভ্যাট বাবদ। আমার বিশ্বাস, কম দামে গ্রাহকদের প্রি-পেইড গ্যাসমিটার দিতে পারবো। প্রকল্পের ব্যয় বাড়লেও গ্রাহকদের উপর চাপ পড়বে না। প্রতিটা মিটারে খরচ যাই হোক না কেন আমরা আট থেকে ১০ হাজার টাকার মধেই আবাসিক গ্রাহককে প্রি-পেইড গ্যাসমিটার দিতে পারবো। ’
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে নগরীর মোহাম্মদপুরে পরীক্ষামূলকভাবে চার হাজার প্রিপেইড মিটার চালু রয়েছে। পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফল হওয়ায় রাজধানীর পুরো ১৮ লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বড় পরিসরে বাকি ১৬ লাখ গ্রাহককে মিটার দিতে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ও এডিবি অর্থায়ন করবে। ইনস্টলেশন অব প্রিপেইড গ্যাস মিটার ফর টিজিটিডিসিএল ন্যাচারাল গ্যাস ইফিশিয়েন্সি’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাজধানীতে প্রি-পেইড গ্যাসমিটার ব্যবস্থা চালু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৭
এমআইএস/জেএম