দেশে বর্তমানে যে পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে সচেতনভাবে তা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া সম্ভব বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এ লক্ষ্যে জ্বালানি সাশ্রয়,সংরক্ষণ ও জ্বালানি সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনার আলোকে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।
পরীক্ষামূলক এই কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ব্যাপক সফলতা এসেছে বলে মনে করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
এই সফলতার ধারাবাহিকতায় আরও বৃহৎ পরিসরে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাবনায় ‘এনার্জি ইফিসেয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন প্রোমোশন ফিন্যান্সিং’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের শিল্প কারখানাগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হবে।
বিশাল এই প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশব্যাপী উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ ও সচেতনতার জন্য ব্যয় করা হবে ১২৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৮৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে দেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন-সহযোগী জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
পরবর্তীতে এই খাতে ৩শ’ থেকে ৪শ’ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান। এই অর্থ ব্যাংকগুলোর প্রচলিত ঋণদান পদ্ধতি অনুসরণ করে শিল্প কারখানাগুলোকে প্রদান করা হবে। ইতোমধ্যেই দশমিক শূন্য ১ শতাংশ হারে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করার শর্তে এ ব্যাপারে জাইকার সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি কিনতে শিল্প কারখানাগুলোকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড.আহমদ কায়কাউস বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সাশ্রয়কে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি কিনতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন কলকারখানাকে। তারা এই ঋণে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি কিনছে। এটা আমাদের পাইলট প্রকল্প ছিলো। ভালো সফলতা পেয়েছি। ’
এরই ধারাবাহিকতায় বড় পরিসরে ঋণ দেয়ার মাধ্যমে কল কারখানাগুলোকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি কিনতে বাধ্য করা হবে। এ জন্য আমরা ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন জাপানি ঋণ পাবো। ’
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র আরও জানায়, ইতোমধ্যেই ‘এনার্জি ইফিসেয়েন্সি অ্যান্ড কনসারভেশন মাস্টার প্ল্যান আপ টু ২০৩০’ প্রস্তুত হয়েছে। এই মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী উৎপাদন, সরবরাহ ও ব্যবহারিক পর্যায়ে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮৫ মিলিয়ন টন অয়েল সমতুল্য জ্বালানি সাশ্রয় হবে যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
এমআইএস/আরআই