ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নবায়নযোগ্য জ্বালানির তুলনায় পরমাণু শক্তি এখনো সাশ্রয়ী 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭
নবায়নযোগ্য জ্বালানির তুলনায় পরমাণু শক্তি এখনো সাশ্রয়ী  রসাটম  এর ফার্স্ট ডেপুটি সিইও কিরিল কামারভ

ঢাকা: নবায়নযোগ্য জ্বালানির তুলনায় পরমাণু শক্তি এখনো সাশ্রয়ী বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আণবিক শক্তি করপোরেশন রসাটম  এর ফার্স্ট ডেপুটি সিইও কিরিল কামারভ।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের স্কাইনিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান রসাটমের ফার্স্ট ডেপুটি সিইও। রসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজ পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে বাংলাদেশের প্র্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে।

প্রকল্পে সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের দুটি বিদ্যুৎ ইউনিট থাকবে, যার প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১২০০ মেগাওয়াট।

স্কাইনিউজের এ সাক্ষাৎকারে বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি মূল্যের নিম্নগতি পরমাণু শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, না। পরিসংখ্যানগুলোর ব্যাপারে সতর্কতা প্রয়োজন, কারণ এগুলো আংশিক সত্য। নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসকে গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য যেসব বিষয়ের প্রয়োজন পরে, তা সামগ্রিক বিবেচনায় নিলে এবং প্রয়োজনীয় ব্যাক-আপ সুবিধার জন্য যে অতিরিক্ত ব্যয় হয় তা হিসাব করলে দেখা যায় পরমাণু শক্তি বায়ু শক্তির তুলনায় এখনো দ্বিগুণ এবং সৌর শক্তির তুলনায় কমপক্ষে তিন গুণ সাশ্রয়ী।  

তারপরও তো রসাটম বায়ু শক্তি প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হ্যাঁ; এটা সত্যি যে, আমরা বায়ু এবং পরমাণু উভয় শক্তিতেই বিনিয়োগ করছি। এই কারণেই আমি এসব বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলতে পারি, পরমাণু শক্তি আমাদের জন্য অধিক লাভজনক। কারণ, এটি এখন পর্যন্ত অধিক সাশ্রয়ী।

বলা হয়ে থাকে পরবর্তী দশকের জন্য আপনাদের বৈদেশিক অর্ডারের পরিমাণ প্রায় ১৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফ্রান্সের আরিভা এবং জাপানের ওয়েস্টিং হাউসের মতো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আপনারা কিভাবে সফলভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন? 

উত্তরে কিরিল কামারভ বলেন, আমাদের প্রথম সুবিধা হলো, আমরা পরমাণু শিল্পের সব ক্ষেত্রেই কাজ করছি। এর অর্থ হলো ইউরোনিয়াম মাইনিং থেকে শুরু করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ডিকমিশনিং সব বিষয়ই আমাদের আয়ত্তে। সত্যি কথা বলতে গেলে, আমরা যদি কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করি তবে তার জন্য আমাদের কোনো পার্টনারের প্রয়োজন পড়ে না। তদুপরি আমরা বিভিন্ন দেশের পার্টনারদের সঙ্গে কাজ করছি।  

তিনি আরো বলেন, দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যে, আমরা দেশের বাইরে এমন কিছুই করি না যা প্রথম হিসেবে বিবেচিত। আমরা প্রথমে আমাদের দেশের ভেতরে নতুন প্রকল্প, ডিজাইন, টেকনিক্যাল বিষয়গুলো পরীক্ষা করে দেখি এবং শুধু তার পরেই আমরা বিদেশে সেগুলো বাস্তবায়ন করি। দেশের তুলনায় বিদেশে কাজ করাটা অবশ্যই যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।  

যুক্তরাজ্যের হিন্কলে পয়েন্ট সি-তে যে পরমাণু রিয়্যাক্টর প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তা নিয়ে যথেষ্ট সমালোচনা রয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কোনো মতামত দেওয়া আমরা পক্ষে সম্ভব নয়, কারণ, এটির সঙ্গে আমরা যুক্ত নই। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি যে, আপনাদের হাতে বর্তমানে আধুনিক পরমাণু প্রযুক্তি রয়েছে। এটি নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য এবং কমিশনিংয়ের পর ন্যুনতম ৬০ বছর বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম। এ কারণে আমি বিশ্বাস করি যে, পরমাণু শক্তি প্রত্যেকটি দেশের এনার্জি ব্যালেন্সের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে আমরা যদি কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের লক্ষ্য অর্জনের কথা চিন্তা করি তবে পরমাণু শক্তি ছাড়া তা সম্ভব নয়।  

আমরা আলোচনা করছিলাম যে, আপনারা অনেক দেশেই পরমাণু প্রযুক্তি ও সামগ্রী বিক্রি করছেন। কিন্তু অনেক দেশই  বিশেষ করে ইউরোপে এমনটি ভাবা হয়ে থাকে যে, ক্রেমলিনের সঙ্গে আপনাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এব্যাপারে  আপনার প্রতিক্রিয়া কি? 

উত্তরে রসাটমের ফার্স্ট ডেপুটি সিইও বলেন, আপনি জানেন, যে কোনো ব্যক্তিই বলতে পারে যে, একটি সরকারি কোম্পানি কোনো কিছুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ। কিন্তু এটি মূল বিষয় নয়। আমরা কেন সফল? কারণ আমরা গ্রাহকদের নির্ভরযোগ্য,  সাশ্রয়ী এবং বাস্তবে কার্যকর  রয়েছে এমন সমাধান দিয়ে থাকি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৭ 
এসকে/বিএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।