ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই

ঢাকা: নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে দুর্ঘটনার কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন পরমাণু বিশেষজ্ঞরা। পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে তার নিরাপত্তার পদ্ধতি অনেক উন্নত বলে জানান তারা।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় চার দিনের বিজ্ঞান উৎসব ইন ফ্যাক্ট-২০১৭ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তারা এ সব কথা জানান।  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারে এ বিজ্ঞান উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পারমাণবিক শিল্প সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করে তোলা এ উৎসবের মূল লক্ষ্য।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রসাটমের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান ‘এনার্জি অব দি ফিউচার’ এ উৎসবের আয়োজন করছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মহাপরিচালক আবুল বাশার মো. জহুরুল ইসলাম, ঢাকায় রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক আলেক্সান্দার ডেমিন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম ভূঞা, প্রকৌশলী এম আলী জুলকারনাইন, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক আবু জাফর মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরমাণু প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে শফিকুল ইসলাম বলেন, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্টে দুর্ঘটনার কোনো ঝুঁকি নেই। এটা নিয়ে যে ভীতির কথা বলা হয় সেটা বিতর্কিত। বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং ক্যান্সারসহ জটিল বিভিন্ন রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় নিউক্লিয়ার পাওয়ার ব্যবহার করা যায়। নিউক্লিয়ার পাওয়ার ব্যবহারের পদ্ধতি অনেক উন্নত। এ বিষয়ে আমাদের দেশে প্রচুর পড়াশোনা ও গবেষণার প্রয়োজন আছে। কেউ যদি না বুঝে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাহলে সেটা হবে ঝুঁকিপূর্ণ।
 
আবু জাফর মো. সালাহউদ্দিন বলেন, কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট (বিদ্যুৎ কেন্দ্র) মানুষকে সরাসরি মারছে না। পরিবেশের দূষণ ঘটাচ্ছে, পরোক্ষভাবে মারছে। উন্নত দেশ যেখানে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট আছে সে সব দেশে যেমন রাশিয়ায় মানুষের আয়ু ৮০ থেকে ১০০ বছর। আর আমাদের দেশে মানুষের আয়ু ৭০ থেকে ৮০ বছর।  

পরমাণু বিজ্ঞানের উপর শিক্ষার গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এক হাজার ২৪ জনের বেশি বিজ্ঞানী প্রয়োজন হবে।
 
রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক আলেক্সান্দার ডেমিন বলেন, রাশিয়ায় বাংলাদেশের অনেক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। রুশ সংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতি বছর ছাত্রছাত্রীদের পাঠাচ্ছে। আরও অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে আমরা রাশিয়ায় পাঠাবো। এর জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভালভাবে পড়াশোনা করতে হবে, ভাল করতে হবে।

এ বিজ্ঞান উৎসবের উদ্বোধন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটারের মহাপরিচালক আবুল বাশার মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নত দেশে পৌঁছানো সম্ভব না। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঝুঁকির কারণ নেই। ক্ষতির কোনো সুযোগ নেই। সেভাবেই এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
       
উৎসব উপলক্ষে রাশিয়া থেকে আসা ৩ জন বিশেষজ্ঞ অংশ নিয়েছেন তারা হলেন, ডিমিত্রভগ্রাদ ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের রেডিও কেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান রতিস্লাভ কুজনেৎসভ, রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট সারাবুরা তাতিয়ানা এবং বিজ্ঞানবিষয়ক সাংবাদিক ইলিয়া কাবানভ।  

বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তারা বলেন, রূপপুরে যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হচ্ছে তাতে দুর্ঘটনার কোনো ঝুঁকি নেই। আমরা নিরাপত্তার জন্য অনেক সতর্কতা অবলম্বন করছি যাতে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭ 
এসকে/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।