বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ শনিবার (০৪ নভেম্বর) বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্থাটিকে এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরুর লাইসেন্স দেয়।
লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কেবলমাত্র বিদ্যুতের বিষয়ই নয়, এটি জাতির আত্মবিশ্বাস গঠনের কাজও করবে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় আণবিক শক্তি কর্পোরেশন- রসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে সর্বাধুনিক ৩+ প্রজন্মের দু’টি বিদ্যুৎ ইউনিট থাকবে। প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে।
আগামী ৩০ নভেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মূল পর্বের কাজ শুরু করতে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে লাইসেন্স প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নঈম চৌধুরী প্রকল্পের মালিক প্রতিষ্ঠান পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. দিলীপ কুমার সাহার কাছে লাইসেন্স হস্তান্তর করেন।
ড. নঈম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কমিশনকে কিছু শর্ত সাপেক্ষে ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে সংস্থাটি পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-১ এর মূল পর্বের কাজ শুরুর অনুমতি পেলো। পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এ অনুমতি প্রদানে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রযোজ্য সকল নিরাপত্তার মানদণ্ড ও গাইডলাইন এবং বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন ও বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করে।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন রাশিয়ান ফেডারেশন, ভারত ও আইএইএসহ স্থানীয় ও নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে সকল রেগুলেটরি ডকুমেন্টের কারিগরি মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা করে বিশেষজ্ঞ মতামত নেওয়া হয়। এসব মতামত পর্যালোচনা করেই লাইসেন্স দেওয়া হয়।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান আরও বলেন, ‘এ প্রকল্প হাতে নিয়ে তৃতীয় বিশ্বে আমরা প্রমাণ করেছি, পরমাণু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে বাংলাদেশও। আমরাও পারি। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আছেন বলেই আমরা এটি করতে পারছি’।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আমাদের দুঃখের দিনের বন্ধু। তাদের সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছিলেন, আমরা এ প্রযুক্তি বুঝি না। আমাদের সবচেয়ে ভালো একটি প্রকল্প উপহার দেবেন। তখন ভ্লাদিমির পুতিন এ বিষয়ে তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন আমাদের জন্য বিশাল ব্যাপার’।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব আনোয়ার হোসেন, রাশিয়ান ফেডারেশনের রেগুলেটরি বডি রোসটেকনাযরের ডেপুটি চেয়ারম্যান আলেক্সি ফেরাপনটভ, রোসাটমের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল নিকোলাই স্পাস্কি, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর, নিউক্লিয়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের পরিচালক ড. সত্যজিৎ ঘোষ।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এসকে/এএসআর