ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

‘বাংলাদেশ গবেষণার গিনিপিগ হতে পারে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
‘বাংলাদেশ গবেষণার গিনিপিগ হতে পারে না’ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশ গবেষণা কাজের গিনিপিগ হতে পারে না। কিন্তু বিশ্বের উন্নয়ন ভিত্তিক যতো গবেষণা আছে তার সঙ্গে বাংলাদেশ সংযুক্ত আছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য গবেষণাবিদের বক্তব্য ও উপস্থাপনাকে লক্ষ্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে।

আমাদের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে জনসংখ্যা ও জমির সল্পতা। এ অবস্থায় আপনারা যদি দুবাইকে উদাহরণ হিসেবে টানেন তাহলে তো মিলবে না। কারণ দুবাইয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো মিল নাই। ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটার ৪৪ হাজার লোকের বসবাস। অন্যদিকে দুবাইতে মাত্র ১০ জন। তাদের জমি ও অর্থের অভাব নেই। তাদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করলে চলবে না।

বিপুল জনগোষ্ঠি সম্পন্ন দেশে যদি পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সোলার থেকে পেতাম, তাহলে আমি তা সানন্দে গ্রহণ করতাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ প্রজেক্ট যদি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় তাহলে আমি তা সানন্দে গ্রহণ করবো। কিন্তু তাতোও সম্ভাব নয়। পরিবেশের দিকে আমি সবচেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হবো। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে সোলার প্ল্যান্ট বন্ধ। আবার এই প্ল্যান্ট বাস্তবায়নে প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ জমি। সেই জমিটা পাবো কোথায়? তাই যেটা সম্ভব সেটা করতে এগিয়ে আসোন, দেশের প্রেক্ষাপট অনুসারে।

চলতি বছরে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদুৎ সংযোজিত হবে উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, এ বছরের মধ্যেই নতুন করে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট স্থাপন করছি। এটা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা আরও ৫৫টি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছি, কিন্তু জমির জন্য তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বিদ্যুৎ বিভাগে নতুন করে গবেষণাকর্ম শুরু হয়েছে। যারা গবেষণা করতে ইচ্ছুক তাদের আহ্বান জানাচ্ছি। আমেরিকায় ইতোমধ্যে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনায় ফিরে এসেছে। আর আমরা অনেক আগে থেকেই এ রাস্তায় হাঁটছি। এখন যদি কেউ কয়লা বা গ্যাসের চেয়ে সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেখাতে পারে, তাহলে সেটাই হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আর এরকম কোনো প্রজেক্ট পেলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো।

বাপার সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. আলাউদ্দিন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বারকেলে’র নবায়নযোগ্য এবং যথাযথ এনার্জি ল্যাবরেটরির পরিচালক প্রফেসর ড্যান ক্যামেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন, শরীফ জামিল, আল মুদাব্বির বিন আনাম, অধ্যাপক সাইফুল হকসহ আরও অনেকে।  

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক বিডি রহমতউল্লাহ।

এর আগে প্রফেসর ড্যান ক্যামেন একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কৃষি জমিকে পরিবর্তন না করেই কয়লার চেয়ে কম মূল্যে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা সম্ভব। ২০১৬ সালে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিলো ১১.৪ গিগাওয়াট। ২০২১ সালের মধ্যে সরকার কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মাধ্যমে ১৩.৩ গিগাওয়াট ও সৌরবিদ্যুৎ থেকে ২ গিগাওয়াটেরও কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮
এমএএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।