ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

বিদ্যুৎ বিড়ম্বনায় অতিষ্ঠ মিরসরাইবাসী

মিরসরাই প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১১
বিদ্যুৎ বিড়ম্বনায় অতিষ্ঠ মিরসরাইবাসী

মিরসরাই (চট্টগ্রাম): চরম বিদ্যুৎ বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে মিরসরাইয়ের সাড়ে চার লাখ মানুষ। যখন খুব বেশি প্রয়োজন তখনই বিদ্যুৎ থাকছে না মিরসরাইয়ে।



শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং রাত ১১টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ না-থাকাটা অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এছাড়া সকাল ও দুপুরে নিয়মিত লোডশেডিঙের কবলে পড়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে মিরসরাইয়ে অধিক লোডশেডিঙের কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ গ্রিড লাইনের যান্ত্রিক ত্রুটি ও স্বল্প উৎপাদনকে দায়ী করলেও এলাকাবাসীর অভিযোগ, চট্টগ্রামের বাবড়কুন্ড গ্রিডের আওতায় পাশ্ববর্তী সীতাকুন্ড উপজেলায় লোডশেডিঙের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও মিরসরাইবাসীকে অন্ধকারের নিমজ্জিত থাকতে হচ্ছে বেশির ভাগ সময়।

স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যা, মধ্যরাত, সকাল-দুপুরে উপজেলায় নিয়মিত লোড়শেডিং চললেও একই সময়ে সময় সীতাকুন্ডে বিদ্যুৎ থাকে। এ জন্য কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালি ও রহস্যময় ভূমিকাকে দায়ী করেন তারা।

এদিকে, মাত্রারিক্ত লোডশেডিঙের কারণে পড়াশুনায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের। বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর আগ মুহূর্তে বিদ্যুতের চরম সঙ্কটে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

উপজেলায় বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা।

চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে কলেজ ও উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বর্ষ সমাপনী পরিক্ষা অনুুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

গত নভেম্বর মাসে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষার ফরম পূরণের পর পড়ালেখার চাপ বাড়লেও লোড়শেডিঙের কবলে পড়ে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে তাদের। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি চরম অসোন্তোষ দেখা দিয়েছে চাকরিজীবী-ব্যবসায়ীসহ উপজেলার সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে।

তবে মিরসরাই বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্রিড লাইনের বেশ কয়েকটি খুঁটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর পড়েছে। মহাসড়কে ফোর লেন সম্প্রসারণের কাজে বিভিন্ন সময় দিনের বেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়।

অপরদিকে, শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় বাড়বকুন্ড গ্রিড লাইনসহ উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় লাইনের সংস্কারকাজ করায় লোডশেড়িং দিতে বলে কর্তৃপক্ষ।

তারা জানায়, এসব লোডশেডিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সিডিউল লোডশেড়িং ও ভিআইপিদের কারণে সৃষ্ট লোডশেডিং। সব মিলিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

তবে কবে নাগাদ এসব সমস্যার সমাধান হবে তা জানাতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই।

মিরসরাই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম উৎপল দে’র কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এর সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

উপরন্তু ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মিরসরাইয়ে বিদ্যুতের মোট চাহিদা ১৩ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে অতীতে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩-৪ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হতো বর্তমানে সেখানে ৮-৯ মেগাওয়ায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

তার দাবি, উপজেলায় শুধুমাত্র সিডিউল লোডশেড়িং দেওয়া হচ্ছে।

তবে সিডিউল অনুযায়ী ইউনিয়নভিত্তিক লোডশেড়িঙের সময় ও ব্যাপ্তিকাল জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে সঠিক জবাব দিতে পারেননি।

প্রসঙ্গত, গত বছর একই সময়ে বিদ্যুতের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে ও বিদ্যুৎ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় স্থানীয়। পরে চাপের মুখে পড়ে সীতাকুন্ডের সঙ্গে মিরসরাইয়ের বিদ্যুৎ বৈষম্য দূর করতে বাবড়কুন্ডে স্থাপিত আন্ডার ফিকোয়েন্সি রিলে তুলে নেয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

তবে চলতি বছর ওই রিলে না থাকার কথা জানালেও বিদ্যুতের এমন সমস্যার কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।