ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল কিনবে সরকার

ঢাকা: আগামী বছরের জানুয়ারি-জুন প্রান্তিকের জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে চার ক্যাটাগরির ১২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

বুধবার (২৫ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুপস্থিতিতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩২তম বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে অনলাইনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্‌ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ৮টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে আটটি প্রস্তাবেরই অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ৩টি, বিদ্যুৎ বিভাগের ৩টি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরে অতিরিক্ত সচিব বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চার ক্যাটাগরির ১২ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন, গ্যাস অয়েল (ডিজেল), জেট এ-১, ফার্নেস অয়েল, মোগ্যাস (অকটেন) ও মেরিন ফুয়েল আমদানির ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন গ্যাস অয়েল (ডিজেল), ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল, ৮০ হাজার মেট্রিক টন মেরিন ফুয়েল, ৪৫ হাজার মেট্রিক টন মো-গ্যাস (অকটেন) রয়েছে।

বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রিমিয়ামসহ এসব জ্বালানি তেল আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ৪২ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৫৮৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চারটি প্যাকেজে এসব জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে ‘ইউনিপ্যাক সিঙ্গাপুর পিটিই লিমিটেড’ থেকে দুটি প্যাকেজে মোট ৯ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন (৫ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন ও ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন) গ্যাস অয়েল আমদানি করা হবে। দুটি প্যাকেজেই প্রতি ব্যারেল ডিজেলের রেফারেন্স দর ধরা হয়েছে ৪৩ দশমিক ২৪ ডলার। ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম হার প্যাকেজ-‘এ’-তে ১ দশমিক ৮৫ ডলার এবং প্যাকেজ-‘বি’-তে ১ দশমিক ৭৮ ডলার ধরা হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৮২৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে একই প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি প্যাকেজে (এ ও বি) মোট ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল আমদানি করা হবে। দুটি প্যাকেজেই ব্যারেল প্রতি জ্বালানি তেলের দর ও প্রিমিয়াম অভিন্ন। প্রতি ব্যারেল জেট এ-১ ফুয়েলের রেফারেন্স দর হচ্ছে ৪০ দশমিক ৫৭ ডলার এবং ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম হার ২ দশমিক ৮৮ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৫৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

এছাড়া ৮০ হাজার মেট্রিক টন মেরিন ফুয়েল ও ৪৫ হাজার মেট্রিক টন মো-গ্যাস (অকটেন) আমদানি করা হবে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের ‘ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড’ থেকে। এর মধ্যে প্রতি ব্যারেল মেরিন ফুয়েলের রেফারেন্স দর হচ্ছে ৪৪ দশমিক ৩১ ডলার এবং ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম হচ্ছে ৪ দশমিক ৯৫ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ১৬১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে প্রতি ব্যারেল মো-গ্যাসের রেফারেন্স দর হচ্ছে ৩২৫ দশমিক ৩২ ডলার এবং ব্যারেল প্রতি প্রিমিয়াম হার হচ্ছে ২৮ দশমিক ৪৮ ডলার। এতে মোট ব্যয় হবে ২৪০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

সূত্র মতে, জ্বালানি তেলের প্রকৃত আমদানি দর নির্ধারণ করা হয় পণ্য জাহাজিকরণের পূর্বে আন্তর্জাতিক দর প্রকাশিত হওয়ার দুদিন আগে ও দুদিন পরেরসহ মোট ৫দিনের গড় মূল্য হিসাবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)-এর বাজেট বরাদ্দ তথা জ্বালানি তেল বিক্রয় লব্ধ অর্থ এবং প্রয়োজনে সরকারের আর্থিক সহায়তাসহ অন্য কোনো উৎস থেকে জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করা হবে।

জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে দেশের মোট জ্বালানি তেলের চাহিদার অর্ধেক সরকারি পর্যায়ে এবং অবশিষ্ট অর্ধেক উন্মুক্ত দর পদ্ধতিতে আমদানি করা হচ্ছে। সে হিসাবে গত ৪ অক্টোবর দরপত্র আহবান করা হয় এবং ৮টি দরপত্র জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬টি দরপত্র প্রাথমিকভাবে রেসপন্সিভ বলে বিবেচিত হয়।

পরবর্তীতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান মনোনীত হয়। চলতি পঞ্জিকা বছরের জানুয়ারি-জুন প্রান্তিকের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ মেট্রিক টন গ্রাস অয়েল, ২ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন জেট এ-১ ফুয়েল, ৬০ হাজার মেট্রিক টন মো-গ্যাস আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

বৈঠকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে একটি প্রস্তাবে ২০২১ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), ইবতেদায়ি ও দাখিল স্তরের কাগজসহ  চার লাখ ৬৫ হাজার ৫৩৫ কপি বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা হচ্ছে এনসিটিবি। এতে ব্যয় হবে ৫১ লাখ ৫ হাজার ১২২ টাকা। কাজটি পেয়েছে সীমান্ত প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২০
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।