ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

শিল্পী সঞ্জয় দে’র মানবিক উদ্যোগ ‘সুরের প্রভা’ ২৭ ডিসেম্বর

শাহীন মিতুলি, যুক্তরাজ্য থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২০
শিল্পী সঞ্জয় দে’র মানবিক উদ্যোগ ‘সুরের প্রভা’ ২৭ ডিসেম্বর

আর্ত-মানবতার জন্যে একের পর এক ভূয়সী প্রশংসিত সঙ্গীত উদ্যোগের পর ২৭ ডিসেম্বর (রোববার) ইউকে সময় সন্ধ্যায় ইউরোপের অন্যতম প্রধান সব্যসাচী সঙ্গীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকার  শ্রী সঞ্জয় দে’র আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে ব্যতিক্রমধর্মী ডিজটাল কনসার্ট ‘সুরের প্রভা’।

নিয়ম ও রবি ভারতীর যৌথ ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠেয় এই বিশেষ কনসার্টে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন কলকাতার মেধাবী সঙ্গীতশিল্পী  অ্যারিনা মুখার্জি, শীর্ষ রায় এবং সঞ্জয় দে নিজেও।

এই সঙ্গীত আয়োজনে উত্তোলিত অর্থও যথারীতি দান করা হবে ব্রিটেনভিত্তিক চ্যারিটি সংস্থা সাথী ফাউন্ডেশনে।

শিল্পী সঞ্জয় দে করোনার ক্রান্তিকালে আর্ত-পীড়িত মানুষ এবং দুস্থ শিল্পীদের সাহায্যার্থে নানাবিধ মানবতাবাদী সঙ্গীত-উদ্যোগ গ্রহণ করে ইতোমধ্যেই  দেশে-বিদেশে বিপুলভাবে প্রশংসিত হয়েছেন।

গত জুন মাসে সঞ্জয় দে পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘নিয়ম’র উদ্যোগে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে বাংলাদেশ, ভারত, আরব-আমিরাত ও ব্রিটেনের স্বনামধন্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় একটি অবিস্মরণীয় মেগা কনসার্ট। এই কনসার্টের মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে বন্টন করা হয়।

এছাড়াও তিনি ভারতের রাজস্থানের বারনামা জাগির নামে একটি গ্রামের লোকশিল্পীদের জন্যেও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই গ্রামের লোকশিল্পীরা মূলতঃ বিয়ে, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। করোনা ভাইরাস মহামারিতে এই ক্রান্তিকালে তাদের আয়ের সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। এসময় তাদের পাশে দাঁড়াতে শিল্পী সঞ্জয় দে আয়োজন করেন ‘মিউজিক ফর হিউম্যানিটি’।

সম্প্রতি ব্রিটেনে গৃহহীনদের অন্যতম প্রধান সেবা সংস্থা স্ট্রিটলিংক এবং ভারতের মৃৎশিল্পী সম্প্রদায়ের জন্যও কনসার্টের মাধ্যমে তহবিল গঠন করেন তিনি। ইতোমধ্যেই এসব অসামান্য উদ্যোগ দেশ-বিদেশের হাজার হাজার দর্শকদের যেমন নজর কেড়েছে, সহায়তায়ও এগিয়ে এসেছেন বিভিন্ন মহল।

শিল্পী সঞ্জয় দে জানান, আগামী রোববার ২৭ ডিসেম্বর ‘সুরের প্রভা’ শিরোনামে আয়োজিত কনসার্টে সংগৃহীত অর্থ বাংলাদেশভিত্তিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাসেবায় নিয়োজিত সংগঠন সাথী ফাউন্ডেশনকে দে্ওয়া হবে। সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবং দেশ, কাল, জাত-কূল ভেদে একটি সুন্দর সমাজ গঠনের প্রক্রিয়ায় যারা অংশ নিতে চান, তাদের সবার প্রতি অনুষ্ঠানের টিকিট ক্রয়ের অনুরোধ জানান শিল্পী সঞ্জয় দে। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় থাকবেন ঋষি মুখার্জি।

মানবতাবাদী এসব উদ্যোগের পাশাপাশি থেমে নেই সঞ্জয় দে’র একান্ত নিজের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড। ‘ব্যবধান’ শীর্ষক একটি অপূর্ব পরিবেশনা মুক্তি পায় শনিবার (২৫ জুলাই)। শিল্পী সঞ্জয় দে’র কথা ও সুরে ‘আর তো কোন কথা নেই বলার’ গানটিতে কন্ঠ দিয়েছেন এ সময়ের অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পী সিসপিয়া ব্যানার্জি এবং সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন কুন্দন সাহা।

পূজো উপলক্ষে শিল্পী অ্যারিনা মুখার্জির সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে টপ্পাঙ্গের একখানা রবীন্দ্রসঙ্গীতও। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে শেখ রানার লেখা ও সঞ্জয় দে’র সুরে একটি সমবেত সঙ্গীতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা কণ্ঠ দেবেন। এছাড়াও তার নিজ প্রতিষ্ঠান রবি-ভারতীর শিশু-শিল্পীদের পরিবেশনায় তারই কথা ও সুরে আরও ‘সা সা রে গা’ বলে আরেকখানা অনবদ্য সঙ্গীত পরিবেশনাও মুক্তি পেয়েছে।

গত ২৮ নভেম্বর ইস্ট-লন্ডনের পপলার ইউনিয়নের ডিজিটাল আর্ট ফ্যাস্টিভালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত বিশেষ প্রোডাকশন ‘মিউজিক অব রিভার্স’।

রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক শিক্ষার্থী ইতোমধ্যেই সঙ্গীতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদানের জন্যে পেয়েছেন আর ডি বর্মন পুরস্কার। ২০০০ সালে বাল্টিমোরে অনুষ্ঠিত সম্মানজনক বিশ্ব বাংলা সম্মেলনে সঙ্গীত পরিবেশন করার পাশাপাশি

সঞ্জত দে ব্রিটেনে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘নিয়ম’ (NEOM - New Era of Music) নামের একটি জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন। নিয়ম ছাড়াও তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন রবিকা এবং রবি ভারতী নামের আরও দুটি সংগঠন। রবি ভারতীর মাধ্যমে এবং নিজের একান্ত উদ্যোগে তিনি ব্রিটেনে বেড়ে ওঠা শিশুদের এবং ব্রিটিশ-এশীয় ডায়েসপরাদের সঙ্গীত শিখিয়ে যাচ্ছেন গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।