ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব-তাৎপর্য নিয়ে বার্লিনে আলোচনা

প্রবাস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২২
৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব-তাৎপর্য নিয়ে বার্লিনে আলোচনা

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে জার্মানির বার্লিনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বার্লিনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে করোনা মহামারি উদ্ভূত বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ৭ মার্চ স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

সভায় নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত শাহেদ আকতার ও জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়া ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন অধ্যাপক পিটার সিনঙ্গেল।

জার্মানি, চেক রিপাবলিক ও কসোভোতে বসবাসরত প্রবাসী বিভিন্ন পেশাজীবী বাংলাদেশি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাসহ ৩০ জন সভায় উপস্থিত ছিলেন।  

সভার শুরুতে রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া আলোচনায় উপস্থিত সুধীজনদের স্বাগত জানান।  

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণটির ব্যাপ্তি ১৮ মিনিটের কিছু বেশি সময়ের হলেও এর মধ্যে বিগত দিনে বাংলার মানুষের প্রতি পাকিস্তান সরকারের বৈষম্য, শোষণ ও বাঙালির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের জন্য আন্দোলনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে পাকিস্তানি শাসকদের ষড়যন্ত্রের মুখে বাংলার জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের দিকনির্দেশনা দেন।

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, মূলত বঙ্গবন্ধু তার এ ভাষণের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।  

তিনি আরও বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এ ভাষণটি শুধু দেশের মধ্যে আলোচনায় সীমাবদ্ধ নয়, এ ভাষণটিকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবরে ইউনেস্কো ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।  

অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ তার বক্তব্যে ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ কর্তৃক ২০১৩ সালে Jacob F. Field প্রকাশিত ২৫০০ বছরের বিশ্বসেরা যুদ্ধকালীন ভাষণের সংকলন ‘We Shall Fight on the Beaches: The Speeches That Inspired History’এ ৭ মার্চের ভাষণটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তিনি জাতির পিতার অতুলনীয় দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি অপরিসীম মমত্ববোধ ও অনন্য সাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলীতে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে উন্নয়নের অংশীদার হিসেবে ভূমিকা পালনের জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।  

অধ্যাপক পিটার সিঙ্গেল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের গত ১২ বছরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন।  

তিনি আরও বলেন, তার গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ ব্যবস্থা ও উন্নয়ন সহযোগী এনজিওদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের প্রতি তার অতিউচ্চ ধারণা তৈরি করেছে।  

প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত শাহেদ আকতার তার বক্তব্যে ১৯৭১ সালে কীভাবে বঙ্গবন্ধুর এ ঐতিহাসিক ভাষণটি প্রবাসীদের অনুপ্রাণিত করেছিল সেটি তুলে ধরে সেই সময়ের বিভিন্ন ঘটনা উল্লেখ করেন।  

ভার্চ্যুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠানে রাষ্টদূত ৭ মার্চ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী ও দূতাবাসের মিনিস্টার মুর্শিদুল হক খান প্রধানমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনান।  

সভায় উপস্থিত জার্মানি, চেক রিপাবলিক ও কসোভো থেকে অংশগ্রহণকারী বাঙালি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা সংক্ষিপ্তভাবে বক্তব্য রাখেন এবং ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্যসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরেন।  

রাষ্টদূত অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, যুগ যুগ ধরে এ ভাষণ বাঙালি জাতিকে উজ্জীবিত করবে এবং বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ের মণিকোঠায় চিরদিন বেঁচে থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২২
আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।