ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সালতামামি

রাওধা-জঙ্গি আস্তানা ছিল রাজশাহীর আলোচনায় 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৮
রাওধা-জঙ্গি আস্তানা ছিল রাজশাহীর আলোচনায়  ওপরের ছবি দু’টি বারবার এসেছে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে

রাজশাহী: বহু ঘটনার জন্ম দিয়ে মহাকালের পরিক্রমায় বিদায় নিয়েছে আরও একটি বছর। দিনপঞ্জিকার শেষ পাতাটি উল্টে গেছে। নানা কাজের ফিরিস্তি লেখা নিত্যসঙ্গী হাতখাতাটি হয়ে পড়েছে সাবেক। রাজশাহীতে ২০১৭ সালে তেমন বড় ধরনের অঘটনের খবর না থাকলেও বছর জুড়েই আলোচনায় ছিল ভোগ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা রাওধা আতিফের আত্মহত্যা, সান ডেভিলসহ কয়েকটি জঙ্গি অভিযান ও হতাহতের ঘটনা। 

রাওধা মামলা
রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পড়তে আসা মালদ্বীপের উঠতি মডেল রাওধা আতিফের (২২) আত্মহত্যার ঘটনা ছিলো বছরজুড়েই আলোচিত। পুলিশ ও সিআইডি পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে রাওধার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরপরও তার বাবা ডা. আতিফ তা মানতে নারাজ। আদালতে নারাজির পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি তাই নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়ায় অবস্থিত ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রীনিবাস থেকে রাওধার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  

আন্তর্জাতিক ফ্যাশন ম্যাগাজিন ‘ভোগ’ এর ‘কভার গার্ল’ রাওধা ওই কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। রাওধার মৃত্যুর দিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ শাহ মখদুম থানায় অপমৃত্যুর মামলা করে।  

অপারেশন ‘সান ডেভিল’
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বেনীপুরে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায় পুলিশ। এই জঙ্গি অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘সান ডেভিল’। দুইদিন ধরে চলে অভিযান। ফসলের মাঠের ভেতর একটি বাড়িতে থাকা একদল ‘জঙ্গি’কে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানালেও রাজি হয়নি কেউ। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযানে যাওয়া সদস্যদের ওপর।  

এই হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। এতে দেখা গেছে, এক নারী ধারালো অস্ত্র হাতে কাউকে কোপাচ্ছেন। তার পাশে লুঙ্গি পরিহিত এক পুরুষের হাতে ছিল শাবল জাতীয় অস্ত্র। এ সময় নিহত হন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিন। এরপরই সন্দেহভাজন জঙ্গি পরিবারের এক সদস্য ‘আত্মঘাতি’ বিস্ফোরণ ঘটান, যাতে পাঁচজন নিহত হন। এ সময় এক নারী পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তার নাম সুমাইয়া খাতুন। তার দুই সন্তানকেও পুলিশ জীবিত উদ্ধার করে।

তানোরে জঙ্গি অভিযান
রাজশাহীর তানোর উপজেলার নিভৃত গ্রাম পাঁচন্দর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ায় ২০১৭ সালের ১১ জুন জঙ্গি অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ‘জঙ্গি’ সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়। নারী ও শিশুসহ আরও নয়জনকে হেফাজতে নেওয়া হয় ওই বাড়ি থেকে।  
 
চর আলাতুলির জঙ্গি আস্তানা
রাজশাহী অঞ্চলে ২০১৭ সালে যে বড় তিনটি জঙ্গি অভিযানের ঘটনা ঘটে তার সবকটি ঘটনায় ছিল জনমানবহীন দুর্গম এলাকায়। সর্বশেষ ২৭ নভেম্বর চর আলাতুলি মধ্যচরের আস্তানার অবস্থানও জনমানবহীন নির্জন এলাকায়। এই চরে শুধু একটি বাড়িই ছিল। দুর্গম ও নির্জন বাথান বাড়ি হওয়ায় সেটিকেই আস্তানা হিসেবে বেছে নেয় জঙ্গিরা। দুর্গম পদ্মার নির্জন চরের বাথান বাড়িতে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের পর এ অস্তানা থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরা সবাই ছিলো জেএমবির সদস্য।  

নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা গ্রেফতার
রাজশাহী থেকেই গ্রেফতার করা হয় নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজকে। পরে তাকে ঢাকায় নেওয়া যাওয়া হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ০২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮
এসএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।