ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সালতামামি

বিদায়ী বছরে হবিগঞ্জে অর্ধশত খুন

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
বিদায়ী বছরে হবিগঞ্জে অর্ধশত খুন

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ জেলায় গত এক বছরে খুন হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এ বছর সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে জেলার বানিয়াচং উপজেলায়।

নিহতদের মধ্যে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ৯ জন ও অন্যদের অধিকাংশেরই মরদেহ উদ্ধার হয় খুন করে ফেলে রাখার পর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণমাধ্যমে ৫০টি খুনের ঘটনার সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি খুনের ঘটনা ঘটে, যেগুলোর সংবাদ প্রকাশ হয়নি।

জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এক বছরে হবিগঞ্জ সদরে ৬, লাখাইয়ে ৫, শায়েস্তাগঞ্জে ১, বানিয়াচংয়ে ১৩, আজমিরীগঞ্জে ২, নবীগঞ্জে ৬, বাহুবলে ৭, চুনারুঘাটে ৬ ও মাধবপুর উপজেলায় খুন হন ৪ জন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ৫০ জনের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ ও ১৬ জন নারী। এদের ১৯ জনই তরুণ-তরুণী, রয়েছে শিশুও। এগুলোর মধ্যে বেশি আলোচিত ছিল ছেলের হাতে মা, মায়ের হাতে শিশু সন্তান ও চাচার হাতে ভাতিজা খুনের ঘটনা।

এদিকে, চলতি বছরে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, খুনের অধিকাংশই সংঘটিত হয়েছে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এগুলোর মূলে ছিল পারিবারিক ও আধিপত্যের বিরোধ।  

সমাজে মানুষের মধ্যে সহনশীলতা কমে যাওয়া, বিচার কাজে বিলম্ব, সমাজে মাদকসেবন ও ব্যবসা বেড়ে যাওয়ায় খুনের সংখ্যা বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন,তুচ্ছ ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এগুলোর মধ্যে পারিবারিক এবং গ্রাম্য সংঘর্ষ রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার খুনের ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে। আগামীতে আরও কমানোর জন্য পুলিশ কাজ করছে।

হত্যাকাণ্ডের পর বেশির ভাগ মামলায় আসামি গ্রেফতার হয়েছে। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন অনেকে। অনেকগুলো চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত কাজ শেষ। কিন্তু শুধুমাত্র মেডিক্যাল সার্টিফিকেট, পোস্টমর্টেম ও ভিসেরা রিপোর্ট না পাওয়ায় অনেক মামলার প্রতিবেদনই জমা হয়নি আদালতে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, কয়েক বছর ধরে হবিগঞ্জে খুনের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। যা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অশনি সংকেত। সমাজজুড়ে এখন খুনের আতঙ্ক। দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থতির উন্নতি না ঘটালে হত্যাকাণ্ড আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে আইনজীবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিবীদ শাহ ফখরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, পারিবারিক বন্ধনের দুর্বলতা, সামাজিক অবক্ষয় ও সুশিক্ষার অভাবে সমাজে এমনটি ঘটছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সমাজের বিজ্ঞজনদেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।