শরীয়তপুর: দীর্ঘ চার বছর পর শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের ৩৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। তবে কমিটি ঘোষণার পরপরই তা নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা, যা পরিণত হয় সংঘর্ষে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
নতুন কমিটিতে এইচএম জাকিরকে আহ্বায়ক ও মো. সোহেল তালুকদারকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে ১৬ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ১৭ জন সদস্যসহ মোট ৩৫ জন স্থান পেয়েছেন।
কমিটি ঘোষণার পর সকাল ১১টার দিকে ছাত্রদলের একটি অংশ শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং মাদারীপুর-শরীয়তপুর সড়কের কোর্ট এলাকায় বসে সড়ক অবরোধ করেন। তাদের হাতে ছিল লাঠি, ঝাড়ু ও জুতা। বিকেল ৬টার দিকে নতুন কমিটির সমর্থনে অপর অংশ আনন্দ মিছিল বের করলে বিক্ষুব্ধ পক্ষ আবারও লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টা মিছিল করেন। একপর্যায়ে পালং থানার সামনে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে আহতদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নবঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন মামলা-হামলার মধ্যে থেকেও যারা সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন, তাদের মতামত উপেক্ষা করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। একজন বিবাহিত, চাকরিজীবী ও বয়স্ক ব্যক্তিকে আহ্বায়ক করা প্রহসনের শামিল।
নতুন কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইসাহাক সরদার বলেন, কমিটিতে অনেকেই এখন আর ছাত্রই নন। যিনি আহ্বায়ক হয়েছেন, তার পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠন করতে হবে, নতুবা আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বাবু মাদবরও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে একই অভিযোগ তোলেন।
এ বিষয়ে নতুন আহ্বায়ক এইচ এম জাকির বলেন, চার বছর ধরে জেলা ছাত্রদলে কোনো কমিটি ছিল না। এখন সংগঠনকে সচল করতে ইউনিট কমিটি গঠন ও সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করাই আমাদের লক্ষ্য। কেউ কেউ কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। আশা করছি সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি, অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআরএস