হাতে পোটলা অথবা ব্যাগ, সঙ্গে রয়েছে গোশত কাটাকাটির যন্ত্রপাতি। এরা কসাই, ছুটছেন ঢাকার পথে।
শহরের গোস্তহাটির কসাই রাব্বি, নওশাদ, মিন্টুসহ আরও অনেকে ইতোমধ্যে প্লেনের টিকিট বুকিং দিয়েছেন। ঈদের আগের দিন তারা ঢাকা যাবেন।
তারা বলেন, আগামী কয়েকদিনে ট্রেন ও বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন আমাদের অনেক কসাই। আমরা যেহেতু প্লেনে যাচ্ছি তাই ঈদের আগের দিন যাবো। ঢাকায় বেশ কয়েক জায়গায় কাজের বুকিং হয়ে গেছে আমাদের।
শহরের কলিম মোড় এলাকার কসাই মোস্তাকিম, ইলিয়াস, জাম্বুসহ অন্যান্যরা জানান, এবার ঢাকায় গিয়ে কোরবানির পশুর মাংস কাটার কাজ করবেন সৈয়দপুরের শতাধিক কসাই। চারজন করে একটি গ্রুপে পশু কাটার কাজটি করবেন তারা। তিনদিনে একেকটি গ্রুপে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৬টি গরু কাটতে পারবেন। এতে করে একেকটি গ্রুপ তিনদিনে ৪ লাখ টাকা আয় করতে পারবে। কসাইরা মাংস কাটার দাম নির্ধারণ করেন গরুর দামের ওপর। প্রতিটি গরুর দামে হাজারে ২শ টাকা করে হিসাব করেন তারা।
ঠাকুরগাঁও থেকে সৈয়দপুর হয়ে ঢাকাগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের সুপারভাইজার আজমত আলী বলেন, ১৫-২০ জন কসাই ঢাকা যাওয়ার জন্য আমাদের পরিবহনের টিকিট চেয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ টিকিট নিয়ে গেছেন। সৈয়দপুর থেকে অনেক কসাই ঈদের আগের দিন প্লেনে করে ঢাকায় যাবেন বলে জানান সেখানকার টিকিট বিক্রেতারা।
রাজধানীর মিরপুরে থাকেন আইয়ুব নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তা। চাকরির সুবাদে তিনি সৈয়দপুরে ছিলেন দীর্ঘদিন। এ কারণে এ শহরের অনেকেই তার পরিচিত। ঈদে কোরবানির মাংস কাটতে মোবাইলে সৈয়দপুরের একজন কসাইয়ের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তার। ঈদের দিন সকালে মিরপুরের বাসায় গিয়ে কোরবানির গরুর মাংস কাটতে হবে।
এ বিষয়ে সৈয়দপুর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাদিম (ছোটু) জানান, আসলে রাজধানীতে মাংস কাটতে গেলে আমাদের কসাইরা সৈয়দপুরের চেয়ে দ্বিগুণ মজুরি পান সে কারণে প্রতি বছর শতাধিক কসাই ঢাকায় পাড়ি জমান। সৈয়দপুরে যেখানে প্রতি হাজারে ৮০-১০০ টাকা মেলে সেখানে রাজধানীর ঢাকায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা মেলে প্রতি হাজারে। ইতোমধ্যে যাদের বুকিং হয়েছে তাদের কেউ কেউ প্লেন, ট্রেন আবার বাসের টিকিট কেটেছেন। আবার অনেকে দুই সপ্তাহ আগেই ঢাকা গেছেন নতুন বুকিং করতে। এভাবে সৈয়দপুরের শতাধিক কসাই কোরবানির মাংস কাটতে পাড়ি জমাচ্ছেন ঢাকায়। এতে করে ঈদের আগে সৈয়দপুরের মাংসের দোকানগুলো আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঈদের পর কসাইরা ফিরলে আবার সরব হবে এ শহরের মাংসের দোকানগুলো।
আরএ