ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৪ জুন ২০২৫, ২৭ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

চাঁদপুরে মাদরাসাছাত্র হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪১, জুন ২৪, ২০২৫
চাঁদপুরে মাদরাসাছাত্র হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড  হত্যা মামলার আসামিরা ইনসেটে নিহত শিশু

চাঁদপুরের কচুয়ায় সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে মাদরাসা ছাত্র মো. মিলন হোসেনকে (১২) শ্বাসরোধে এবং পানিতে ডুবিয়ে হত্যার দায়ে দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও আরেক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২) এর বিচারক সৈয়দ তাফাজ্জল হোসেন হিরু এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কান্দিরপাড় প্রধানিয়া বাড়ির মো. ইমাম হোসেন ছেলে শামিম হোসেন (২৮) ও পার্শ্ববর্তী পাড়াগাঁও গ্রামের নুর উদ্দিনের ছেলে সোহাগ হোসেন (২৮)। এছাড়া যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন কান্দিরপাড় গ্রামের ফরাজি বাড়ির আবুল বাসারের ছেলে মো. রাব্বি হোসেন (২৮)।

হত্যার শিকার মিলন হোসেন কচুয়া কান্দিরপাড় গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ির মো. তাজুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় চাপাতলী মাদরাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, হত্যার শিকার মিলনের বাবা তাজুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের স্বজনদের সম্পত্তিগত বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের কারণে ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৯ জুন দুপুর আনুমান ১টার দিকে মাদরাসা ছাত্র মিলন বাড়ি থেকে পাশের রহিমানগর বাজারে যায়। বাজার থেকে বাড়িতে না ফেরায় পরদিন ৩০ জুন কচুয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার ভাই মো. রিপন হোসেন (২৫)।

এরপর ২ জুলাই স্থানীয়দের মাধ্যমে মিলনের পরিবার জানতে পারে সম্পত্তিগত বিরোধের জেরে আসামি শামিম, সোহাগ ও রাব্বি মিলনকে হত্যার উদ্দেশ্যে কান্দিরপাড়ের ইব্রাহিম খলিল নামে এক ব্যক্তির ধনচে ক্ষেতে নিয়ে পানিতে ডুবিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাদী রিপন হোসেন জানান, আসামিদের নাম পরিচয় জানার পর প্রথমে স্থানীয় লোকজন শামীমকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাকি দুই আসামি সোহাগ ও রাব্বির নাম পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ২ জুলাই ঘটনাস্থল থেকে মিলনের মরদেহ উদ্ধার ও আসামিদের থানা হেফাজতে নেন।

এ ঘটনায় ওইদিনই মিলনের বড় ভাই রিপন হোসেন বাদী হয়ে কচুয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াজেদ আলী ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

সরকারপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামলাটি দীর্ঘ ১০ বছর চলাকালীন ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। আসামিদের অপরাধ স্বীকার ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে বিচারক তাদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।

রায়ে আসামি শামিম হোসেন ও সোহাগ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। অপর আসামি রাব্বিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক কমল।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।