খুলনা: বাংলাদেশে জন্ম ও পেশাগত পরিচয়ের কারণে আমাদের সমাজে নানাভাবে বৈষম্যের শিকার প্রায় ৮০টিরও অধিক সম্প্রদায় রয়েছে যারা ‘দলিত’ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশের দলিত জনসংখ্যা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশ সরকারের সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় প্রায় ৬০-৬৫ লাখ মানুষ সুইপার, ডোম, কানপুরী, তেলেগু, ঋষি, কাওরা, বেঁদে, রবিদাস, পৌন্ড্র, চা-শ্রমিক, নিকারী, শিকারীসহ প্রায় ৮০টিরও অধিক জাতিগোষ্ঠী পরিচয়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলে বাস করছে।

নাগরিক উদ্যোগ বাংলাদেশের দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষা এবং তাদের প্রতি বিদ্যমান বৈষম্য লাঘবে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই ধারাবাহিতকায় সংস্থাটি জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে ‘মানবাধিকার সুরক্ষা ও সহায়তার মাধ্যমে দলিত ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচন ও বিদ্যমান বৈষম্য লাঘব’ শিরোনামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।  

উক্ত প্রকল্পের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমসমূহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিতকরণ এবং সরকারি পরিষেবায় দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অভিগম্যতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের সাথে সমন্বয় ও যোগাযোগ শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে নাগরিক উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) খুলনায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর মিলনায়তনে একটি ‘প্রকল্প পরিচিতি সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সচিব (সিনিয়র সহকারি সচিব) শরীফ আসিফ রহমান।
সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বি.ডি.ই.আর.এম) খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি সুব্রত কুমার মিস্ত্রী।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: মোস্তাক উদ্দিন, সহকারী উপ পরিচালক মো: পারভেজ মোল্লা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুরাইয়া সিদ্দীকা, খুলনা সিটি কর্পোরেশন বজ্য ব্যস্থাপনা কর্মকর্তা মো: আনিসুর রহমান, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কঞ্জারভেন্সী অফিসার মো: অহিদুজ্জামান খান, ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস (সচিব) মো: আনোয়ার হোসেন, ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অডিট) মো: ইমরান হোসেন, ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস (সচিব) এস এম আল মামুন, সুশীল সমাজ ব্যক্তিবর্গ, এনজিও প্রতিনিধি সহ সরকারী ও বেসরকারী পর্যায় বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। উক্ত সভায় সংস্থা পরিচিতি উপস্থাপন করেন সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো: বকুল হোসেন ও প্রকল্প পরিচিতি উপস্থাপন করেন ফিল্ড কোর্ডিনেটর পলাশ হালদার।

সভায় জানানো হয় মানবাধিকার সুরক্ষা ও সহায়তার মাধ্যমে দলিত ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর দারিদ্র বিমোচন ও বিদ্যমান বৈষম্য লাঘব’ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশর দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মানুষদের অধিকারকে সুরক্ষিত করা ও তাদের জন্য  একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা। প্রকল্পটি খুলনা জেলাসহ বাংলাদেশের মোট ৯টি জেলায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।  

উল্লেখ্য , খুলনা জেলার খুলনা সিটি কর্পোরেশন এবং বটিয়াঘাটা উপজেলায় প্রকল্পের শিক্ষা কার্যক্রম, মানবাধিকার এবং শহরের স্যানিটেশন কর্মীদের পেশাগত সুরক্ষা বিষয়ক সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ জাতীয় পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকদের সাথে কিছু এডভোকেসি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।  

এমআরএম