ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন, অন্তর্বর্তী সরকারকে কাদের সিদ্দিকী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:০২, আগস্ট ২৮, ২০২৫
না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন, অন্তর্বর্তী সরকারকে কাদের সিদ্দিকী  বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী

টাঙ্গাইল: দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমরা অন্তবর্তী সরকারকে বলবো, আপনারা না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের নিজ বাসা ‘সোনার বাংলা’য় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

ঢাকায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর ব্যানারে একটি অনুষ্ঠান থেকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া নিজের বড় ভাই আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, পাকিস্তান আমলে লতিফ সিদ্দিকী প্রায় ৪০ বার জেলে গিয়েছেন। বাংলাদেশের আমলেও কয়েকবার জেলে গিয়েছেন। ওনারা (পুলিশ-প্রশাসন) ভাবছেন, কথা বলছেন, ছেড়ে দিলে দেবেন, না হলে কোর্টে যাবেন। আমরাও কোর্টে যাব। দেখতে হবে আইনানুগভাবে চলছে কিনা।  

‘ওনারা একটা সেমিনারে গিয়েছিলেন, সেখানে কী কথা হবে সেটাও হয়নি। যে কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখালে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু গ্রেপ্তার না দেখিয়ে কোনো কারণ না দেখিয়ে একজন স্বাধীন নাগরিককে এক মিনিটের জন্যও কোথাও আটক রাখা যায় না। লতিফ সিদ্দিকীর নামে কোনো ঋণখেলাপি বা কোনো মামলা নেই। আইনানুগভাবে সরকার চললে আমরা আইন দিয়েই মোকাবিলা করব। দেশটাকে একেবারে ধ্বংস করে দেবেন না। দেশ সবার। যখন যে ক্ষমতায় যায়, দেশ তারও না, তার বাবারও না। যারা শাসন ক্ষমতায়, তারা কিন্তু মালিক না, তারা সেবক। সেবকের মনোভাব নিয়ে যদি অগ্রসর হন, তাহলে অনেক সমস্যার আপনা-আপনি সমাধান হয়ে যাবে। ’

কাদের সিদ্দিকী বলেন, ডিআরইউতে ‘মঞ্চ ৭১’-এর সেমিনারে ড. কামাল হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন। আমার বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নাও অতিথি ছিলেন। সেই সময় কিছু মানুষ গিয়ে মব সৃষ্টি করে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করেছে। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কারও অনুষ্ঠান বানচাল করার কোনো সাংবিধানিক বা আইনানুগ সুযোগ নেই। তাদের এখনো ডিবি অফিসে রাখা হয়েছে।  

তিনি বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে টাঙ্গাইলের রাজনীতি অনেক কিছুই হতো না। যেমন বঙ্গবন্ধু না হলে বাংলাদেশ দেশ হতো না, তেমনি লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না।  

‘চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিজয় আমি স্বাধীনতার কাছাকাছি বলে মনে করি। সেই বিজয়ের সাফল্য কামনা করি। কিন্তু সেই বিজয়ী বীরদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এক বছরে এই বিজয় ধ্বংসের দিকে চলে যাবে—সেটা আশা করিনি। আওয়ামী স্বৈরাচারের চাইতে এই স্বৈরাচার তো অনেক বড় স্বৈরাচার। মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। ’

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে তার জন্য সবচেয়ে বড় সংস্কার করা দরকার। আর অন্য কিছু অনির্বাচিত কারও দ্বারাই করা উচিত না। সেটা কেউ মেনে নেবে না। আজকের ঘটনায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর শ্রোতা এবং যারা বক্তা ছিলেন, কমবেশি অনেককেই ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তাদের মুক্তি দেওয়া হোক। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান অধ্যাপক ইউনূসের কাছে এটা আশা করব।

তিনি আরও বলেন, ২৪-এ আমাদের অবদানও কম না। ২৫ বছর আমরা শেখ হাসিনার অবস্থা, কাজকর্মের যে সমালোচনা করেছি, সেটা বৈষম্যবিরোধী নেতারা করেননি। দেশে মব সৃষ্টি করা, দেশকে অরাজক করা, দেশের আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো—আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, আপনারা না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। ১২-১৩ জন ছেলে গিয়ে ফজলুর রহমানের বাসার সামনে গিয়ে নাচানাচি করছে, এটা ভালো কথা না। তাকে পাগল বলবেন, সে কিছুই বলবে না—এটা হয়? ছাত্র আন্দোলনে তার যথেষ্ট অবদান আছে। আজকাল যারা কথা বলছেন তাদের কথায় কোনো শালীনতা নেই। এটা সামাজিক অবক্ষয়। এখান থেকে আমরা দেশকে ফেরাতে না পারলে এটা জঙ্গলের দেশ হবে।

এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।