রাজবাড়ী: নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করা নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো ও দরবার-বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ থানার ওসির পর এবার বদলি করা হয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদুর রহমানকে।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রেষণ-১ শাখার যুগ্মসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করলে, সেদিন অপরাহ্ণ থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত হবেন তিনি।
তবে তাকে বদলি করা হলেও এখনও নতুন করে কাউকে ইউএনও পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
এর আগে গত শুক্রবার এক অফিস আদেশে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামকে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ের অপরাধ শাখার পুলিশ পরিদর্শক (ক্রাইম) হিসেবে বদলি বদলি করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বালিয়াকান্দি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর মো. নাহিদুর রহমান ইউএনও হিসেবে গোয়ালন্দ উপজেলায় যোগদান করেছিলেন।
গত ৫ সেপ্টেম্বর নুরাল পাগলার বাড়ি ও দরবারে হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে নিহত হন নুরাল পাগলার এক ভক্ত। এসময় অভিনব কায়দায় কাবা ঘরের আদলে করা ১২ ফুট উঁচু কবর থেকে নুরাল পাগলার লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা বহু বছর আগে নিজ বাড়িতে গড়ে তোলেন দরবার শরিফ। আশির দশকের শেষের দিকে নিজেকে ইমাম মাহদি দাবি করে আলোচনায় আসেন তিনি। ওই সময়ে তার বিরুদ্ধে তীব্র জনরোষ তৈরি হয়। পরে ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ জনরোষ এড়াতে তিনি মুচলেকা (অঙ্গীকার নামা) দিয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। এর কিছুদিন পর তিনি আবার ফিরে এসে তার দরবার শরিফের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন।
গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুরাল পাগলা। পরে ওই দিনই রাতে তার ভক্তানুরাগীদের অংশগ্রহণে দরবার শরিফের ভেতরে তাকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু স্থানে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়।
কিন্তু তার কবর পবিত্র কাবা শরিফের আদলে করা হয়, কবরের রং করা হয় কালো। যা দেখতে পবিত্র কাবা শরিফের মতো। এতেই বাধে বিপত্তি। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ফুঁসে ওঠেন তৌহিদি জনতা। তৌহিদি জনতার আন্দোলনের ফলে কবরের রং পরিবর্তন করা হয়। এ নিয়ে অসন্তোষ থেকে বিষয়টি নাশকতা পর্যন্ত গড়ায়।
এসআই