ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ি এলাকায় কুমার নদে ১২৬ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ও আরডিডি গ্রুপের কর্ণধার আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার।
স্থানীয় ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষ নদীর দুই পাড় ও নৌকায় বসে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। নৌকাবাইচ ও মেলায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সকাল থেকে চলে মেলা, বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতা। সব মিলিয়ে উৎসবটি অত্র অঞ্চলের মানুষের মিলনমেলায় রূপ নেয়।
প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-বড় অন্তত ১৫টি নৌকা অংশ নেয়। পাশাপাশি ট্রলার ও ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের প্রায় এক হাজার নৌকায় চড়ে মানুষ উৎসব উপভোগ করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, তেলজুড়ি বাজারসংলগ্ন কুমার নদপাড়ে অসংখ্য নারী-পুরুষ নানান সাজে দাঁড়িয়ে প্রতিযোগিতা উপভোগ করছেন। অনেকে স্থানীয়ভাবে নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে উৎসবে অংশ নেন। কয়েকদিন আগে থেকেই দোকানিরা গ্রামীণ মেলায় মিষ্টি, ইলিশ, খেলনা ও নানা খাবারের পসরা সাজান। অত্র অঞ্চলের অন্তত ১০ গ্রামের জামাইরা বউ, ছেলে-মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি আসেন। আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে ওঠেন ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও গ্রামীণ মেলার আনন্দে।
চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের সুইট মণ্ডল বলেন, ছোটকাল থেকে এই নৌকাবাইচ ও মেলায় আসি। গেন্ডারী কুশর (আখ), জিলাপি, আমিত্তি এখানে খুব জনপ্রিয় খাবার। এবারও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসেছি, বাইচ দেখছি আর মেলায় কেনাকাটা করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সজল শরীফ বলেন, নৌকাবাইচ ও মেলা উপলক্ষে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ আত্মীয়স্বজন নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এসেছেন। এবারের মেলায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষের সমাগম হয়েছে। ছোট-বড় ১৫টি বাইচের নৌকা ছাড়াও প্রায় এক হাজার নৌকা নদীতে ছিল। এটি অত্র অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
মিষ্টি ব্যবসায়ী জব্বার মোল্লা বলেন, কয়েক যুগ ধরে এ মেলায় মিষ্টি বিক্রি করি। এবারও দোকান দিয়েছি। জিলাপি, রসগোল্লা, আমৃত্তি, সন্দেশ, চমচমসহ নানা মিষ্টি রয়েছে। তবে আমিত্তির বিক্রি সবচেয়ে বেশি।
বাইচ শেষে আয়োজন কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ মিয়ার সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার। বিজয়ীদের মাঝে ফ্রিজ ও এলইডি টেলিভিশন পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সব নৌকাকে সান্ত্বনা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এসআরএস