নড়াইল সদর উপজেলায় আকবার ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের গলা ও পুরুষাঙ্গ কাটা লাশ উদ্ধারের ৩ দিন পার হলেও হত্যার প্রকৃত কারণ এখনো জানা যায়নি।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নিহতের বড় ছেলে জিনার ফকির অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত আকবার ফকির আউড়িয়া ইউনিয়নের শড়াতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ইজিবাইকচালক ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে শড়াতলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে রাত ৮টার দিকে চা খাওয়ার কথা বলে বের হন ইজিবাইকচালক আকবার ফকির। ওইদিন রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আউড়িয়া ইউনিয়নের বুড়িখালি গ্রামের একটি বাঁশ বাগানের মধ্যে তালগাছের সঙ্গে তাকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। এ সময় তার গলা ও পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় ছিল। পরে নড়াইল সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকবার ফকির একজন গান-বাজনা প্রিয় লোক ছিলেন। গ্রামের কোনো ধরনের ঝামেলার মধ্যে কখনো ছিলেন না। প্রথম স্ত্রী মারা যাবার পর আরও চারটি বিয়ে করেন তিনি। বর্তমান স্ত্রীর ঘরে ৪টি ছেলে-মেয়ে আছেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে ৩ ছেলে ২ মেয়ে রয়েছে। মাঝের ৩ জন স্ত্রীর সঙ্গে অল্প কিছুদিন সংসার করেছেন। গান-বাজনার সুবাদে বিভিন্ন এলাকায় যেতেন, আর সেখানেই বিয়ে করেছেন। এসব নিয়ে পরিবারে কখন ঝামেলা হয়নি বলে জানান এলাকাবাসী। তার দুই পক্ষের ছেলেরা সবাই যে যার মতো কর্মজীবী হলেও জীবিকা নির্বাহের জন্য তিনি ইজিবাইক (ব্যাটারিচালিত তিন চাকার বাহন) চালাতেন বলে জানা গেছে।
নিহতের চাচাতো ভাই জামাল ফকির বাংলানিউজকে বলেন, আকবার ফকির খুবই নিরীহ লোক। কোনো দল-দারি করেননি। তার কোনো শত্রু আছে বলে আমাদের জানা নেই। তবে তার কাছে কিছু নগদ টাকা ছিল, যেটা তিনি সুদে বিভিন্ন মানুষের কাছে লাগাতেন। তবে এটা নিয়ে কারোর সঙ্গে কোনো ঝামেলা হয়েছে কিনা এটা বলতে পারছি না। আমাদের দাবি, পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবে।
নিহতের বড় ছেলে জিনার ফকির বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কোনো পারিবারিক ঝামেলা নেই। আমি ও আমার অন্য ভাইয়েরা বাড়ির বাইরে কেউ লোহাগড়া, নড়াইল, বিদেশে থাকে। আমার বাবা বেশিরভাগ সময় গান-বাজনা নিয়ে থাকতেন। মাঝে মধ্যে ইজিবাইক চালাতেন। তাকে কেউ এভাবে হত্যা করতে পারে বিশ্বাস করতে পারছি না। প্রশাসনের কাছে আমার একটাই দাবি, বাবার হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করুক। নিরীহ মানুষটাকে যারা মেরেছে, তাদের যেন ফাঁসি হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আকবার ফকির নিহতের ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ এ মামলার তদন্ত করছে। আশা করি, দ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরবি