ঢাকা: অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানিতে অন্তত একজন নারী স্বতন্ত্র পরিচালক থাকা উচিত। সব ক্ষেত্রে নারীদের সমঅধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে, মানবাধিকার নিশ্চিত করা।
রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর নিকুঞ্জের ডিএসই ভবনে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ডিএসই ও ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) কর্তৃক আয়োজিত ‘রিং দ্যা বেল ফর জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি’ শীর্ষক সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার হয়তো নীতি তৈরি করে দেবে কিন্তু সেটা আমাদেরই বাস্তবায়ন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। নারীরা স্বল্প সময়ে একাধিক কাজ করার যোগ্যতা রাখে। কর্মক্ষেত্রে যদি তারা কাজের ভালো পরিবেশ পায়, তবে তাদেরকে দিয়ে অনেক কঠিন কাজও করানো সম্ভব হয়।
অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, সরকার নারীদের উন্নয়নে কাজ করছে। একইসঙ্গে সমাজের মনস্তত্ত্বও পরিবর্তন করতে হবে। পাশাপাশি পুরুষ সহকর্মী যারা আছেন তাদেরকেও নারীদের প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নারীদের যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে যে আমি এটি পারব। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী মেনুফেস্টুতে নারী-পুরুষের সমতা কথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়েদের ক্ষমতায়নে খুবই আন্তরিক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আল্লাহ পৃথিবীতে নারী ও পুরুষকে আলাদা আলাদা যোগ্যতা দিয়ে তৈরি করেছেন। শুধু সঠিক বিষয়টি করলেই হবে না, সেটা স্মার্টভাবে শেষ করতে হবে। আজকের যে আলোচনার বিষয় তা একেবারে সময়পোযোগী। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবক্ষেত্রে নারী সমতার বিষয় নিশ্চিত করেছেন। কর্মক্ষেত্রে তাদের কাজের ও যোগ্যতা প্রকাশের পাশাপাশি অধিকারও নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সব ক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বতন্ত্র পরিচালক পর্যন্ত এখন নারীরা কাজ করছেন। করপোরেট গভর্নেন্সের কোড অনুযায়ী নারীদেরকে আমরা প্রাধান্য, সুযোগ ও দায়িত্ব দিচ্ছি। পুরুষদের পাশাপাশি তাদের জন্য আলাদা বিনিয়োগ এবং উদ্যোক্তাদের ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। নারীরা যাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে আমরা সে সুযোগ করে দিয়েছে এবং কাজ করে যাচ্ছি।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মো. হাসান বাবু বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশকে স্মার্ট করেননি। বরং দেশে যে লিঙ্গ বৈষম্যতা ছিল তা দূর করেছেন। বর্তমানে নারীরা বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে একটি কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যেগুলো মূলত শহর পর্যায়ে। তবে এখনও গ্রাম এবং পুরো সমাজে অনেক ক্ষেত্রে নারীদের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেটা দূর করতে প্রধানমন্ত্রী কাজ করছেন। যতক্ষণ না নারীদের সঠিক ভূমিকা নিশ্চিত করা যায় ততক্ষণ দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এটিএম তারিকুজ্জামান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এ বছর নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘নারীতে বিনিয়োগ: অগ্রগতি ত্বরান্বিত করুন’ লিঙ্গ সমতা অর্জন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য নারীদের বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীরা যখন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সংস্থান এবং কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ পায়, তখন তারা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি ও সমাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ, ভুটান এবং নেপালের আইএফসি কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হোল্টম্যান; আইএফসির সিনিয়র করপোরেট গভর্ন্যান্স অফিসার কল্যানি সান্তোষকুমার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৪
এসএমএকে/এসআইএ