ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

লেনদেনের ১৯ শতাংশই ব্যাংকের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৪
লেনদেনের ১৯ শতাংশই ব্যাংকের ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: দীর্ঘদিনের মন্দা প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে ব্যাংক খাত। গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিতই বাড়ছে এ খাতের শেয়ার দর।

যা  সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও অব্যহত ছিল।
 
এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশই ছিল ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর। তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের মধ্যে ২৭টিরই শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে মাত্র দুটির দাম। আর একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তীত ছিল।
 
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাংক খাতের শেয়ারের দাম অন্য খাতের তুলানায় তেমন একটা বাড়েনি। কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুর কাছাকাছি রয়েছে। এছড়া ব্যাংকের হিসাব ডিসেম্বর ক্লোজিং হওয়ার কারণে অনেকে লভ্যাংশ পাওয়ার আশায় ব্যাংকের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছে। এসব কারণেই ব্যাংক খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
 
তবে ব্রোকারেজ হাউজ সংশ্লিষ্ট একটি পক্ষ বলছে, বাজারে প্রচার রয়েছে অনেক ব্যাংক ভালো মুনাফা করেছে। যেকারণে অনেকে ব্যাংকের শেয়ারের প্রতি ঝুঁকছে।
 
পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, শেয়ারবাজারে অবমূল্যায়িত কোম্পানির শেয়ারের দাম একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে টেক ওভার (মন্দা কাটিয়ে ওঠা) করবে এটাই নিয়ম। অনেক দিন ধরেই আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর দাম অন্য খাতের তুলনায় বেশ কম রয়েছে। এখন সময় এসেছে এ খাতের কোম্পানিগুলোর মন্দা কাটিয়ে ওঠা।
 
বিনিয়োগের জন্য কোম্পানির আর্থিক তথ্য পর্যালোচনা করে নেওয়া পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আর্থিক খাতের অনেক কোম্পানি ভালো মুনাফা করেছে এমটি শোনা যাচ্ছে। এ কারণেও হয়তো অনেক বিনিয়োগকারী ব্যাংকের শেয়ারের দিকে ঝুঁকছে। তবে বিনিয়োগকারীদের উচিত বিনিয়োগের আগে কোম্পানির আর্থিক তথ্য ভালো করে বিচার বিশ্লেষণ করে নেয়া।
 
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সোমবার শুধু ইস্টার্ন ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। ব্যাংক দুটিরই প্রতিটি শেয়ারের দাম আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়সা কমেছে। আর অপরিবর্তীত রয়েছে পূবালী ব্যাংকের শেয়ারের দাম। এছাড়া বাকি ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
 
ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, শেয়ারবাজারে ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০১০ সালের পর বিভিন্ন কারণে ব্যাংক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বেশ কমে গেছে। অন্য খাতের কোম্পানির তুলনায় অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারের দাম ও পিই কম থাকার কারণে এ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়তে পারে।
 
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে বাজারে প্রচারণা চালানো হচ্ছে ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো মুনাফা করেছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ কয়েকটি ব্যাংকের নামও প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের প্রচারণা ব্যাংকের শেয়ারের দাম বাড়ার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
 
সোমবার ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বাড়ে ইসিবিএলের শেয়ারের। কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম আগের দিনের তুলনায় ২ টাকা ৩০ পয়সা বেড়েছে। এরপরের স্থানেই রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারের দাম বেড়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা।
 
এছাড়া এবি ব্যাংকের প্রতি শেয়ারের দাম ১ টাকা ৪০ পয়সা, আল-আরাফার ৫০ পয়সা, ব্যাংক এশিয়ার ৫০ পয়সা, ব্র্যাক ব্যাংকের ১ টাকা, সিটি ব্যাংকের ৯০ পয়সা, ঢাকা ব্যাংকের ১ টাকা ৪০ পয়সা, এক্সিম ব্যাংকের ৬০ পয়সা, ফার্স্ট সিকিউরিটিজ ইসলামী ব্যাংকের ৫০ পয়সা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৩০ পয়সা, আইএফআইসির ১ টাকা ৪০ পয়সা, যমুনা ব্যাংকের ৮০ পয়সা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১ টাকা ৫০ পয়সা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৩০ পয়সা, এনবিএলের ৭০ পয়সা, এনসিসি ব্যাংকের ৭০ পয়সা, ওয়ান ব্যাংকের ৫০ পয়সা, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫০ পয়সা, প্রাইম ব্যাংকের ৬০ পয়সা, রূপালী ব্যাংকের ১ টাকা ৪০ পয়সা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১ টাকা, এসআইবিএলের ২০ পয়সা, সাউথইস্ট ব্যাংকের ১ টাকা ৫০ পয়সা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৫০ পয়সা, ট্রাস্ট ব্যাংকের ৬০ পয়সা এবং উত্তরা ব্যাংকের ১ টাকা দাম বেড়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।