ঢাকা: নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। নাটকের অংশ হিসেবে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক মো. শাকিল রিজভী।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের (স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করা) শর্ত অনুসারে চারজন শেয়ারহোল্ডার পরিচালকের মধ্য থেকে একজনের অবসর নিতে হবে। এরপর খালি পদের বিপরীতে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন একজন পরিচালক নির্বাচিত হবে।
এরই অংশ হিসেবে গতবার সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হওয়া পরিচালক শাকিল রিজভী অবসর নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। শাকিল রিজভীর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পদটিতে যাতে আর কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করেন সে বিষয়ে তার অনুগত ডিএসইর সদস্যদের একটি গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে।
এ বিষয়ে গত বুধবার (১৪ জানুয়ারি) ডিএসইর মেম্বার কনফারেন্সে সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু ঘোষণা দেন শাকিল ভাই অবসরে গিয়ে নির্বাচন করবেন। এ পদে আর কেউ দাঁড়াবে না।
যোগাযোগ করা হলে শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী একজনকে অবসরে যেতে হবে। এজন্য আমি অবসর নিয়েছি। বেশিরভাগ ট্রেকহোল্ডাররা আমাকে নির্বাচন করতে অনুরোধ করছেন। এ জন্য আমি নির্বাচন করছি।
মেম্বার কনফারেন্সে আহসানুল ইসলাম টিটুর ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে কোনো সদস্য যে কোনো আহ্বান জানাতে পারেন। তবে সবকিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে। কেউ নির্বাচন করতে চাইলে তিনি নির্বাচন করতে পারেন। ১৮ জানুয়ারি বোঝা যাবে আর কেউ নির্বাচন করবেন কি-না। যদি কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তবে ভোটের মাধ্যমেই একজন নির্বাচিত হবেন।
আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলানিউজকে বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমরা ঐক্যমতের ভিত্তিতে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শাকিল ভাই গতবার সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছিলেন। তাই আমরা ঐক্যমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তিনি অবসরে গিয়ে নির্বাচন করবেন।
মেম্বার কনফারেন্সে দেওয়া ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে টিটু বলেন, আর কেউ নির্বাচন করতে পারবেন না আমি এমন কথা বলিনি। যেহেতু আগে চারটি পদের জন্য নির্বাচন হতো, কিন্তু এখন একটি পদের জন্য হবে তাই আমরা ঐক্যমতের ভিত্তিতে একজনকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছি। তবে কেউ যদি নির্বাচন করতে চান, তবে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।
সূত্র মতে, ডিএসইর শেয়ারহোল্ডার পরিচালক খালি পদে নির্বাচন হবে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের পর এটি দ্বিতীয় দফা নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম বারের নির্বাচিতদের থেকে যে কোনো এক জনকে অবসর নিতে হবে। আর ওই পদেই নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে অবসর নেওয়া পরিচালক অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
একইভাবে তৃতীয় দফায় নতুন নির্বাচিত পরিচালক বাদে তিনজনের মধ্য থেকে একজনকে অবসরে যেতে হবে। ওই পদে আবারও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ নির্বাচনে অবসর নেওয়া পরিচালক অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আর চতুর্থ দফায় প্রথমবার নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় অবসর না নেওয়া দুই পরিচালককে অবসরে যেতে হবে। ফলে সে সময় দুটি পরিচালক পদে নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে অবসর নেওয়া দুই পরিচালক অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ডিএসই’র শেয়ারহোল্ডারদের ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি বিকাল ৩টার মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। যা ওই দিন বিকাল ৫টার মধ্যে জমা দিতে হবে। তবে শনিবার (১৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত শাকিল রিজভী ছাড়া এখনো কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি।
জমা পড়া মনোনয়নপত্র বাছাই শেষ হবে ২২ জানুয়ারি। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১ ফেব্রুয়ারি। ওই দিনই অর্থাৎ ১ ফেব্রুয়রি নির্বাচনে বৈধপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনের পর আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর ৫৩তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
এর আগে গত ১২ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও আপিল করার সুযোগ রাখা হয় ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। আর এ বিষয়ে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৫ জানুয়ারি। তবে প্রকাশিত ভোটার তালিকার বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৫