ঢাকা: ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডকে আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারি সিকিউরিটিজে ৩০ শতাংশ বিনিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
বুধবার (অক্টোবর ২৬) আইডিআরএ’তে কোম্পানির সিএফও এবং ইনভেস্টমেন্ট কমিটির প্রধানের শুনানি শেষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শুনানিতে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান, চার সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শুনানি শেষে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ (একচ্যুয়ারি) প্রতিষ্ঠানকে আগামী ২০ নভেম্বর মাসের মধ্যে সরকারি বন্ড এবং অন্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে পরিপালন করতে ব্যর্থ হলে ২১ নভেম্বর থেকে দৈনিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে।
সিকিউরিটিজে বিনিয়োগে সুদ বাবদ মুনাফা কম হওয়া এ খাতের টাকা অন্য খাতে বিনিয়োগ করছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি। এর কারণে এর আগে চলতি বছর (১৯ এপ্রিল, ৫ জুন এবং সর্বশেষ ০৬ সেপ্টেম্বর) তিনবার সরকারি বন্ড এবং অন্য সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সময়সীমা গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিলো। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তা পরিপালন করেনি।
বিমা আইন অনুসারে জীবন বিমা পলিসিহোল্ডারদের মেয়াদ পূর্তিজনিত দায়ের ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছে আইডিআরএ। তা করতে ব্যর্থ হলে ২০১০ এর ধারা ১০ এর (ঘ) ও ছ অনান্য সংশ্লিষ্ট ধারা অনুয়ায়ীও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ১৯৩৮ সালের বিমা আইন অনুসারে বিমা কোম্পানিকে তাদের সংগৃহীত প্রিমিয়ামের ৩০ শতাংশ সরকারি বন্ড ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে। বাকি ৭০ শতাংশ ব্যাংক, পুঁজিবাজারসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারবে। কিন্তু সরকারি সিকিউরিটিজে প্রত্যাশা অনুসারে মুনাফা না হওয়ায় এ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ নেই কোম্পানিটির। অথচ পুঁজিবাজার, সম্পত্তিসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে পলিসি ও শেয়ারহোল্ডারদের তহবিল বিনিয়োগে পিছিয়ে নেই কোম্পানিটি।
এ বিষয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হেমায়েত উল্লাহকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। বাংলানিউজের পরিচয় দিয়ে এসএমএস পাঠিয়ে (ক্ষুদ্রে বার্তা) যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো উত্তর মেলেনি।
এদিকে গ্রাহকদের কষ্টে উপার্জিত ২’শ কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন করার তথ্য পেয়েছে আইডিআরএ। কোম্পানিটির ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদেনগুলোর ব্যবস্থাপনা ব্যয়ে অনিয়ম ধরতে বিশেষ নিরীক্ষণের নির্দেশনাও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অপরদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাত বছরে কোম্পানির মোট ২’শ কোটি ৫১ লাখ টাকার দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। জানা গেছে, বিমা কোম্পানির ‘ব্যবস্থাপনা ব্যয়’ আইনের তোয়াক্কা না করে নামে-বেনামে নিজেদের ইচ্ছে মত ভূয়া এজেন্টের নামে কমিশন গ্রহণ, ভূয়া বিনিয়োগ এবং অবৈধভাবে ব্যবস্থাপনা ব্যয় দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিলে বিভিন্ন কৌশলে এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৬
এমএফআই/বিএস