ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজার বান্ধব বাজেট চায় সংশ্লিষ্টরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২৩ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৭
পুঁজিবাজার বান্ধব বাজেট চায় সংশ্লিষ্টরা

ঢাকা: জনসংখ্যা, আয়তন ও অর্থনীতির অগ্রগতির তুলনায় দেশের পুঁজিবাজারের বিকাশ হচ্ছে না। তাই বাজারের উন্নয়ন ও প্রসারতা বৃদ্ধির জন্য পুঁজিবাজার বান্ধব বাজেট চায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই ও সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকারস অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকাস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ)সহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রতিষ্ঠানগুলোর বক্তব্য- বর্তমানে পুঁজিবাজারে ৩২ লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছে। বাজার বান্ধব বাজেট হলে পুঁজিবাজার চাঙ্গা থাকবে, এতে নতুন করে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী ও কোম্পানি বাজারে আসবে।

বাজারের আকার বাড়বে। ফলে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) পুঁজিবাজারের অবদান বাড়বে। সরকার এই খাত থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজস্ব আয় পাবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে দেখবেন, ব্যাংক খাতের চেয়ে পুঁজিবাজার বেশি জনপ্রিয়। কারণ পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে সুদ দিতে হয় না। ফলে সেই সব দেশের অর্থনীতির ৯০ শতাংশ অবদান পুঁজিবাজারের, আর বাকি ১০ শতাংশ অবদান ব্যাংকের। কিন্তু আমাদের দেশে সম্পূ্র্ণ উল্টো। তাই পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া দরকার।

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কে এ এম মাজেদুর রহমান বলেন, ৭ শতাংশ জিপিতে বর্তমানে পুঁজিবাজারে অবদান ২০ শতাংশ। আগামী তিন বছর পর এই অবদান বেড়ে হবে ৫০ শতাংশ। তার জন্য দরকার পুঁজিবাজার বান্ধব বাজেট এবং সরকারের বিশেষ সহায়তা।

আসন্ন (২০১৭-১৮ অর্থ বছরের) বাজেটে ডিএসই ও সিএসইর প্রস্তাবনা গুলো হচ্ছে- আগামী তিন বছর উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের শতভাগ কর মওকুফ সুবিধা, উভয় এক্সচেঞ্জের ৬০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি থেকে এককালীন মূলধনী আয়ের উপর কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া।

তালিকাভুক্ত কোম্পানি থেকে তালিকাবহির্ভূত কোম্পানির কর্পোরেট করহারের ব্যবধান কমপক্ষে আরো ১০ শতাংশে বৃদ্ধি করা, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য কমপক্ষে ৩ বছর কর অবকাশ সুবিধা, ৫৩ বিবিবি ধারায় কর হার শতকরা ০.০৫ থেকে কমিয়ে ০.০১৫ করা, করমুক্ত লভ্যাংশ আয় ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকায় উন্নীত করা।

এছাড়াও সরকারি কোম্পানি এবং আরও অধিক সংখ্যক ভালো কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে নিয়ে আসার উদ্যোগ, ট্রেডিং এর সময় বৃদ্ধিকরণ এবং স্বল্প মূলধনি বোর্ড চালুকরণ সুবিধা দেওয়‍া।

এসব প্রস্তাবের পাশাপাশি ডিবিএ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য ১ লাখ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশের ওপর করমুক্ত রাখা এবং সবার জন্য লভ্যাংশের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর সুবিধার প্রস্তাব দিয়েছে।

ডিবিএ’র পরিচালক শরিফ আনোয়ার হোসেন (দীলিপ) বাংলানিউজকে বলেন, পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদেরকে বাজারে আকৃষ্ট করতে আগামী বাজেটে ডিবিএ’র প্রস্ত‍াবনাগুলো বাস্তবায়ন করা খুবই জরুরি। এর ফলে বাজার আরো সম্প্রসারিত হবে। সরকার এই সময়ের চেয়ে আরো বেশি রাজস্ব পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

উপরোক্ত প্রস্তাবগুলোর সঙ্গে একমতের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ চেয়েছে বিএমবিএ।

সংগঠনের সভাপতি সায়েদুর রহমান বলেন, দেশের অর্থনীতিতে অনেক টাকা করের আওতার বাইরে রয়েছে। অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা উৎপাদনশীল খাতে এ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন না।

তিনি বলেন, এর ফলে এ টাকা দেশের অনুৎপাদিত খাতের পাশাপাশি অবৈধ কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তাই রেগুলেটরি বডির কোনো রকম প্রশ্ন ছাড়াই পুঁজিবাজারে এ অর্থ বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৭
এমএফআই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।