বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের(ডিএসই) জেনারেল ম্যানেজার ও কোম্পানি সেক্রেটারি আসাদুর রহমান কমিশনের কাছে এ প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন। পরে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।
চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে। এছাড়া কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম। বাকি দুই সদস্য হলেন- নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান ও আনোয়ারুল ইসলাম। তাদের আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
ডিএসইর প্রস্তাবনায় বলা হয়, চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম এবং ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ, ফ্রন্ট্রিয়ার ফান্ড বাংলাদেশ ও নাসডাকের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হতে চায়। এরমধ্যে চীনের কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে নেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করে প্রস্তাবনা জমা দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবনায় কনসোর্টিয়াম দু’টির একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণও দিয়েছে ডিএসই।
এতে বলা হয়েছে, চীনের সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের কনসোর্টিয়াম প্রতিটি ২২ টাকা দরে ডিএসইর ৪৫ কোটি বা ২৫ শতাংশ শেয়ার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে। আর ভারতের কনসোর্টিয়াম শেয়ারের দাম ১৫ টাকা করে দিতে চাইছে। চীনের কনসোর্টিয়াম কোনো ধরনের প্রস্থান নীতি বা শর্ত ছাড়াই ডিএসইর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্বের প্রস্তাব করেছে।
আর ভারতের কনসোর্টিয়াম বিনিয়োগের ৫০ বছর পর শেয়ার বিক্রি করে চলে যাওয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে। কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে আসার ৫ বছরের মধ্যে আইপিওর মাধ্যমে নিজেদের শেয়ার বিক্রি করার প্রস্তাবটি ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনের পরিপন্থী।
শেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে শেয়ার কিনতে আগ্রহী। অন্যদিকে কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে শেয়ার না কিনে আলাদা ও স্বাধীনভাবে শেয়ার ক্রয়ের প্রস্তাব করেছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই), ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ এবং নাসডাক।
এছাড়া প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে এসেও ডিএসইর শেয়ার ক্রয়ের বিষয়ে ফ্রন্টিয়ার বাংলাদেশ এখনও নিশ্চিত নয়। আর এনএসই সরাসরি শেয়ার কেনার বদলে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি এনএসই স্ট্র্যাটেজিক ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন লিমিটেডের নামে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছে।
সেক্ষেত্রে এনএসই ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে পরিগণিত হবে না। এছাড়া নাসডাক ডিএসইর কোনো শেয়ার কিনবে না। মালিকানাবিহীন অংশীদারিত্ব নিয়ে কনসোর্টিয়ামে নাসডাকের উপস্থিতি ডিএসইর কোনো কাজে আসবে না।
ডিএসইর তুলনামূলক বিশ্লেষণে আরও বলা হয়েছে, চীনের কনসোর্টিয়াম প্রয়োজনীয় সব অভ্যন্তরীণ এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। আর এনএসই এখনও সেবি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অনুমোদন পায়নি। চীনের কনসোর্টিয়াম ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে ১টি পদ চেয়েছে। আর ভারতের কনসোর্টিয়াম দু’টি পদ চেয়েছে, যা ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিমের পরিপন্থী।
চীনের কনসোর্টিয়াম ৮ ধরনের কারিগরি প্রযুক্তির জন্য ১০ বছরের লাইসেন্স এবং নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত তিন বছরের প্রশিক্ষণ এবং কনসাল্টিং সার্ভিস ফ্রি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। প্রযুক্তিগত সহায়তার আর্থিক মূল্য ৩৭ দশমিক ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর ভারতের কনসোর্টিয়াম কোনো প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম বা সিস্টেম না দিয়ে প্রযুক্তি প্রস্তাবগুলো কেবল পরামর্শ এবং অভিজ্ঞতা শেয়ারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
প্রস্তাবিত এ অভিজ্ঞাতা বিনিময়ের জন্য এনএসই ডিএসইর সঙ্গে নির্দিষ্ট শর্তের ভিত্তিতে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি করার প্রস্তাব দিয়েছে। এরমধ্যে বেশ কিছু বাস্তবায়নের উদ্যোগ ইতোমধ্যে ডিএসই নিজেই নিয়েছে। বাজারে নতুন পণ্য প্রবর্তন ও বাজার উন্নয়নের জন্য দু’টি কনসোর্টিয়াম একই ধরনের প্রস্তাব রেখেছে। এ সহায়তা পেতে কোনো শর্ত আরোপ করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ