বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ডিএসই বোর্ড সভার পরে ডিএসইর একাধিক পরিচালক বাংলানিউজকে এ কথা জানান।
তারা বলেন, ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী ইস্যুতে গঠিত বিএসইসির টিম চীনা কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে কয়েকটি বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে।
কমিশনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রস্তাবের শর্তগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়া হবে বলেও জানান ডিএসই পরিচালকরা।
এর আগে কমিশনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ডিএসইকে প্রস্তাবের কিছু শর্তের ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয় কৌশলগত বিনিয়োগকারী ইস্যুতে গঠিত কমিটি। গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ আহমেদকে আহ্বায়ক ও নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুল আলমকে সদস্য সচিব করে ৪ সদস্যের কমিটি করে বিএসইসি। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন নির্বাহী পরিচালক ড. এটিএম তারিকুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম।
ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, অংশীদার বাছাইয়ে কমিশনের কমিটি কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে। আমরা সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেব। দেশের আইনের পরিপন্থি বিষয় থাকলে সেটি বাদ দেওয়া হবে। আইন সমর্থন করে না, এমন বিষয়ে কিছুই করা হবে না।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও কমিটির সদস্য সচিব মাহবুবুল আলম বলেন, আমরা কিছু বিষয় নির্দিষ্ট করে ডিএসইর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি। সেই বিষয়ে ব্যাখ্যা পাওয়ার পরই বোঝা যাবে।
বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির চিঠিতে বলা হয়, ডিএসইর সঙ্গে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর চুক্তি যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী করার শর্ত দিয়েছে চীনের কনসোর্টিয়াম। যা বাংলাদেশের আইনের পরিপন্থি। এছাড়া কোন বিবাদ দেখা দিলে লন্ডনের আন্তর্জাতিক আরবিট্রেশন অনুযায়ী সমাধানের প্রস্তাব এবং নতুন কৌশলগত বিনিয়োগকারী অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে চীনের কনসোর্টিয়ামের লিখিত অনুমোদন লাগার শর্তকে বাংলাদেশের আইনের পরিপন্থি বলে মনে করছে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটি। যা বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই বলে কমিটির দাবি।
এদিকে ডিএসইর কোন নতুন শেয়ার ইস্যুর আগে চীনের কনসোর্টিয়ামের লিখিত অনুমোদনসহ আরও কিছু শর্ত দিয়েছে। যেগুলো ডিএসইর আর্টিকেলে সংযোজন করা হলে, চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারীর অনুমোদন ছাড়া ডিএসই গুরুত্বপূর্ণ কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বলে বিএসইসি পর্যালোচনা কমিটির দাবি।
চীনের কনসোর্টিয়ামের অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে-পরিচালকদের সংখ্যা পরিবর্তনের আগে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারীর লিখিত অনুমোদন লাগবে। এছাড়া ১৫শতাংশের অধিক যে কোন স্থায়ী সম্পদের বিষয়ে, একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার অধিক ঋণ গ্রহণ, যেকোন ১০ কোটি টাকার উপরে চুক্তি, একক বা যৌথভাবে ১০ কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর স্বার্থ জড়িত যে কোন ইস্যু, যেকোন ধরনের ইনটেলেকচ্যুয়াল সম্পত্তি অর্জন, চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারী তার ইচ্ছা অনুযায়ী যে কাউকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগদানের প্রস্তাব, সেটেলম্যান্ট গ্যারান্টি ফান্ড কন্ট্রিবিউশন বাদ বা স্থগিত করতে হবে এবং ডিএসইর আইপিও সংক্রান্ত যে কোন ইস্যু যেমন, শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ, স্পন্সর নির্ধারণ, অবলেখক নিয়োগ, প্রসপেক্টাস অনুমোদন ও ইস্যু মূল্য নির্ধারণের আগে লিখিত অনুমোদন নেওয়ার শর্ত দিয়েছে চীনের কনসোর্টিয়াম।
এছাড়া আর্টিকেল ১৩৫ অনুযায়ী ২৫ শতাংশ শেয়ার ধারণকারীর সঙ্গে ডিএসই চুক্তি করতে না পারার আইনটি থেকে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগকারীকে অব্যাহতি দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে। আর এসব শর্তগুলোকে ডিএসইর আর্টিকেল পরিবর্তন করে সংযোজন করতে হবে।
চীনের কনসোর্টিয়াম যে ৩০০ কোটি টাকার কারিগরি সহায়তা দেবে বলে ডিএসই দাবি করছে, তা নির্ধারণে কোনো নিরপেক্ষ মূল্যায়ন নেই বলে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে।
অন্যদিকে ভারতের এনএসই কনসোর্টিয়াম ৫ বছর পরে যে কারো কাছে শেয়ার বিক্রির সুযোগ চেয়ে যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনের পরিপন্থি বলে জানিয়েছে বিএসইসির পর্যালোচনা কমিটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এমএফআই/এমজেএফ