ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

সাড়ে ৯ হাজার দাবি পূরণে ৪৬ বিমা কোম্পানির গড়িমসি

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
সাড়ে ৯ হাজার দাবি পূরণে ৪৬ বিমা কোম্পানির গড়িমসি

ঢাকা: সম্পদের ক্ষতি কমাতে গ্রাহকদের করা সাড়ে ৯ হাজার বিমা দাবি পূরণ করছে না ৪৬ সাধারণ বিমা (নন লাইফ ইন্স্যুরেন্স) কোম্পনি। যা টাকার অংকে ১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআর) বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আইডিআরএ’র তথ্য মতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মোট নয় মাসে (তিন প্রান্তিক) অগ্নি, নৌ ও মোটরসহ মোট ২৮ হাজার ৩০৬টি দাবি আসে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর কাছে।

টাকার অংকে যার পরিমাণ ৩ হাজার ১৬৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

এর মধ্যে কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের মোট ১৮ হাজার ৭৭১টি বিমা দাবি বাবদ ১ হাজার ৩১৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। একই সময়ে ৯ হাজার ৫৩৫টি বিমার দাবি পূরণে গড়িমসি করছে কোম্পানিগুলো। যা টাকার অংকে ১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

কোম্পানিগুলো হচ্ছে-সাধারণ বিমা করপোরেশন, সেন‍াকল্যাণ, গ্রিন ডেল্টা, গ্লোবাল, পাইওনিয়র, নর্দান জেনারেল, ইউনিয়ন, প্রগতি, ইস্টার্ন, মার্কেন্টাইল, প্যারামাউন্ট, ফিনিক্স, ইস্টল্যান্ড, মেঘনা, রিপাবলিক, তাকাফুল, এক্সপেক্স, ইউনাইটেড, ফেডারেল, সোনার বাংলা, পিপলস, বাংলাদেশ জেনারেল, ঢাকা, কর্ণফুলি, প্রভাতী, নিটল, সিটি জেনারেল, কন্টিনেন্টাল, সেন্ট্রাল, রূপালী, সিকদার, স্ট্যান্ডার্ড, জনতা, অগ্রণী, প্রাইম, ক্রিস্টাল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

এছাড়াও রয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক, বিডি কো-অপারেটিভ, পূরবী জেনারেল, সাউথ এশিয়া, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স এবং ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ও ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড।

এসব কোম্পানির মধ্যে বিমা দাবি পরিশোধ না করে শীর্ষে রয়েছে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ৪৪৭টির মোট ৪৯৬ কোটি ৬ লাখ টাকার দাবি পূরণ করেনি।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিলাইয়েন্স ইন্স্যুরেন্স। প্রতিষ্ঠানটি ৮৭২টি বিমা দাবির ৫৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা দেয়নি। এরপরে রয়েছে পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স। এ কোম্পানি গ্রাহকদের ৫৬২টি দাবির মোট ৩১ কোটি ৫৪ লাখ টাকা দেয়নি।

এছাড়াও ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স ৫৯০টি বিমার ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা এবং পিপল ইন্স্যুরেন্স গ্রাহকদের ৫১২টি বিমার ৩৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা পরিশোধ করেনি। ফলে এ দুই কোম্পানি বিমা দাবি পরিশোধ না করার তালিকায় যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

তবে এ সময়ে দাবি পূরণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানির কাছে গ্রাহকরা ৪টি বিমার ৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পান।
এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স। এ কোম্পানির কাছে গ্রাহকরা ৫টি বিমা বাবদ মোট ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা পাবেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানির কাছে গ্রাহকরা ৯টি বিমা দাবি বাবদ ৯৬ লাখ টাকা পাবেন।

এছাড়াও জনতা ইন্স্যুরেন্সের কাছে ১২টি পলিসি বাবদ ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের কাছে ১৩টি বিমা দাবি বাবদ ১২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা পাবেন। ফলে কোম্পানি দুটিও যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে আইডিআরএ’র সদস্য মো. বোরহান উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বিমা খাতে সাধারণ মানুষের আস্থা কম। এ খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা বাড়াতে বিমা দাবি পরিশোধের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। গ্রাহকদের বিমা দাবি পূরণ করছে না-এমন অভিযোগ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৯
এমএফআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।