বিষটিকে বাজারের জন্য ইতিবাচক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সিডিবিএল সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৩৯ হাজার ২০৪ ও ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮ হাজার ১৬২ নতুন বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব খুলেছে বিনিয়োগকারীরা।
গতবছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিও হিসাব ছিল ২৭ লাখ ৭৮ হাজার ৭৯৬টি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ ৩৬ হাজার ১৬২টি। অর্থ্যাৎ গত দুই মাসে ৫৭ হাজার ৩৬৬ জন নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে এসেছে।
এদিকে চলতি বছরে নির্বাচন পরবর্তী সরকারের স্থিতিশীলতা, বাজার সংশ্লিষ্ট অর্থমন্ত্রী পাওয়ায় বিপুল সংখ্যক বিরিয়োগকারী বাজারে প্রবেশ করছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, সব মিলিয়ে বাজার ভালো থাকায় নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে।
এ ব্যাপারে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন পরবর্তী সরকারের স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসায় প্রতিনিয়ত নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এটি বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক।
তিনি বলেন, নতুন বছরের শুরু থেকে বাজার ভালো ছিল। এখন যেটা কমছে সেটা বাজার সংশোধনী। তবে সরকারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা বেড়েছে। সেটি ধরে রাখতে সরকারকেও বাজার নিয়ে কাজ করতে হবে।
তবে নতুন বিনিয়োগকারীর প্রবেশকে চলমান ধারা বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাজার ভালো থাকলে নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসে। এবারও তাই হয়েছে। বাজার খারাপ হলে তারা হারিয়ে যায়। তবে এতে বাজারের কোনো প্রভাব পড়ে না। বাজার ভালো রাখতে নতুন কোম্পানিকে লিস্টিং করতে হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
তার মতে, লিস্টিং কোম্পানিগুলোতে মরিচা পড়েছে। তাই বাজারকে ভালো রাখতে হলে নতুন কোম্পানিকে আনতে হবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সমন্বিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আতাউল্লাহ নাইম বলেন, নতুন অর্থমন্ত্রী বাজার সংশ্লিষ্ট হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের সরকারের কাছে প্রত্যাশার জায়গাটা তৈরি হয়েছে। যারা বাজার থেকে চলে গিয়েছিল তারা অনেকেই আবার বাজারে আসছেন। এটা বাজারের জন্য ভালো।
অপরদিকে সিডিবিএল সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি মাসে ৩৯ হাজার ২০৪ টি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব নতুন হয়েছে। জানুয়ারি মাসে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ২০৬টি। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিন কোম্পানি বিও হিসাব ছিল ১২ হাজার ৫৭৯টি। জানুয়ারির শেষ দিন কোম্পানি বিও দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৮৫টিতে।
জানুয়ারি মাসের শেষ দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫টি। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬৫টি।
জানুয়ারিতে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ৪ হাজার ৪৩০টি। ফেব্রুয়ারি মাসে ১৮ হাজার ১৬২টি বিও হিসাব খুলেছে নতুন বিনিয়োগকারীরা।
এই মাসের শেষ দিন পুরুষ বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ২০লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৪ টিতে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিন পুরুষ বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব ছিল ২০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৫টি। অর্থাৎ এ সময়ে পুরুষ বিও হিসাব বেড়েছে ১৩ হাজার ৩৮৯টি।
অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাসে নারী বিনিয়োগকারীরা ৪ হাজার ৬২৪টি বিও হিসাব খুলেছেন। জানুয়ারি মাসের শেষ দিন নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬৪০টি। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৩ হাজার ২৬৪টিতে।
ফেব্রুয়ারি মাসে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ১৪৯টি। জানুয়ারি মাসের শেষ দিন এ সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৭৮৫টি। ফেব্রুয়ারির শেষ দিন কোম্পানি বিও দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৩৪টিতে।
একই সঙ্গে ফেব্রুয়ারি মাসে শেয়ারবাজারে দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ১৭ হাজার ১৫টি। ফেব্রুয়ারির শেষ দিন দেশীয় বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ২৬ লাখ ৫৪ হাজার ১৩৫টিতে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিন দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ছিল ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ১২০টি।
ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩টি। জানুয়ারি মাসের শেষ দিন বিদেশি বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব ছিল ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৫টি। এ হিসাবে ফেব্রুয়ারিতে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীর হিসাব বেড়েছে ৯৯৮টি।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
এসএমএকে/এমএ