সদর দক্ষিণ-লালমাই (কুমিল্লা): কর্ম ব্যস্ততার কারণে অনেক মুসলমান সঠিক সময়ে নামাজ আদায় করতে পারেন না। এ কারণে তাদের জামাতে নামাজ আদায়ের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
সম্প্রতি বৃদ্ধ ইব্রাহিমের এমন দাওয়াতি কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘২০ বছর ধরে মানুষকে নামাজের জন্য ডাকেন ইব্রাহিম’ শিরোনামে দৈনিক কালের কণ্ঠের মাল্টিমিডিয়া সংস্করণে প্রকাশিত একটি ডিজিটাল প্রতিবেদন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।
এটি দেখে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে বসুন্ধরা শুভসংঘ লালমাই উপজেলা শাখার বন্ধুরা উপহার নিয়ে বৃদ্ধ ইব্রাহিমের বাড়িতে যান। নামাজের দাওয়াত আরও স্পষ্টভাবে মুসলমানদের কাছে পৌঁছে দিতে একটি নতুন হ্যান্ডমাইক এবং নামাজ আদায়ের জন্য একটি জায়নামাজ তার হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেন।
ঘরের সামনে উপহার হাতে বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যদের দেখে তার চোখে-মুখে প্রশান্তির হাসি ফুটে ওঠে। উপহার পেয়েই তিনি বড় নিশ্বাস ছেড়ে বলেন ‘সবকিছু আল্লাহ তায়ালার দয়া’। নতুন হ্যান্ডমাইক দেওয়ায় তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘকেও ধন্যবাদ জানান।
উপহার হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম, বসুন্ধরা শুভসংঘের লালমাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী ইয়াকুব আলী নিমেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন ও অর্থ সম্পাদক সৈকত।
বাগমারা বাজারস্থ মাহাদী টাইলস অ্যান্ড সেনিটারির স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম খোকন বলেন, বৃদ্ধ ইব্রাহিমকে আমি প্রায় বলতে শুনেছি, ‘আসেন সবাই নামাজ পড়েন। নামাজ ছাড়বেন না। ’ এতে করে অনেকে উৎসাহিত হয়, নামাজের কথা স্মরণ হয়। আমি তার দীর্ঘায়ু কামনা করছি। পাশাপাশি বসুন্ধরা শুভসংঘকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বসুন্ধরা শুভসংঘ লালমাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী ইয়াকুব আলী নিমেল বলেন, ইব্রাহিম সাহেব ২০ বছর ধরে যে দাওয়াতি কাজটি করছেন নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় কাজ। তার ব্যবহৃত হ্যান্ডমাইকটি পুরাতন হওয়ায় আওয়াজ কিছুটা অস্পষ্ট ছিল। তাই আমরা তাকে সংগঠনের পক্ষ থেকে নতুন একটি হ্যান্ডমাইক ও একটি জায়নামাজ উপহার দিয়েছি।
বসুন্ধরা শুভসংঘ লালমাই উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও আল ইসরা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাছুম বিল্লাহ মুহাজির বলেন, সব শুভকাজে লালমাইবাসীর পাশে থাকতে চায় বসুন্ধরা শুভসংঘ। ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও বৃদ্ধ ইব্রাহিম ও প্রতিবন্ধী জাবেদ ওমরের বাড়িতে উপহার নিয়ে ছুটে যান শুভসংঘের বন্ধুরা। ইনশাল্লাহ, এভাবেই মানবতার জয় হবে।
উল্লেখ্য, বৃদ্ধ ইব্রাহিম ২০ বছর ধরে হ্যান্ডমাইকে মুসলমানদের নামাজের দাওয়াত দিয়ে আসছেন। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত চলে তার এই দাওয়াতি কাজ। ঘড়ি ও মোবাইল ফোন ব্যবহার না করলেও তিনি বেলা (সূর্য) দেখেই মুসলমানদের নামাজের সময়ের তাগিদ দেন। দীর্ঘ সময় ধরে নামাজের সময় নিয়ে দাওয়াতি কাজ করায় মুসল্লিদের কাছে তিনি ‘সময়ের ফেরিওয়ালা’ হিসেবে পরিচিত।
হ্যান্ডমাইকে তিনি মুসলমানদের বলেন, ‘সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন। দুনিয়ায় আল্লাহ পাঠিয়েছেন জ্বীন ইনসান আল্লাহকে ডাকার জন্য। যতদিন দুনিয়ায় আল্লাহ রাখে আল্লাহ কে ডেকে যাবেন, কবরে গিয়ে শান্তি পাবেন। সময়ের ভেতরে আপনারা নামাজ পড়বেন। ফজরের নামাজ, যোহরের নামাজ, আছরের নামাজ, মাগরিবের নামাজ ও এশার নামাজ। সাপ্তাহিক জুমার নামাজ। নবীর পথ ধরি রাখিয়েন। এই জগতে থাকার কোনো ব্যবস্থা নাই, লাইন নাই, অনুমতি নাই, কোনো চেষ্টা নাই। আল্লাহ চেষ্টা করি দুনিয়ায় জ্বীন ইনসান পাঠায় আবার চেষ্টা করে লাশ করে নিয়ে যায়। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৫
আরএ