সুনামগঞ্জ: ভাষার মাস উপলক্ষে সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে ‘হাজং জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায়’ করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের ঘিলাগড়া হরি মন্দির প্রাঙ্গণে হাজং জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় রাজেন্দ্র হাজংয়ের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক আল-আমিন সালমানের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (টিডব্লিউএ) চেয়ারম্যান অজিত হাজং, কবি হাজং শ্রী দশরথ চন্দ্র অধিকারী, জাতীয় হাজং সংগঠনের সহ-সভাপতি কুমেদ হাজং, সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত চন্দ্র হাজং।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশ সংলগ্ন সমতল ভূমিতে হাজংদের বসবাস। তাদের মধ্যে কারো কারো বসবাস শেরপুরের ঝিনাইগাতী, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ও নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুরের পাহাড়ি অঞ্চলের সমতল ভূমিতে। বর্তমানে বাংলাদেশে হাজংদের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। রয়েছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে টঙ্ক আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় সংগ্রামী ইতিহাস।
এ হাজং ভাষা তারা নিজেদের মধ্যেই ব্যবহার করে। হাজং ভাষার নিজস্ব কোনো বর্ণমালা নেই। হাজংরা ভাষার লিখিত রূপ দিতে অসমীয়া বর্ণমালা ব্যবহার করে থাকেন। তবে বাংলাদেশে বসবাসকারী হাজংদের প্রধান ভাষা বাংলা। হাজং ছেলেমেয়েরা বাংলা ভাষাতেই বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে এবং অন্য সমাজের লোকজনের সঙ্গে হাজংরা বাংলা ভাষাই কথা বলেন। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া, চর্চা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে হাজং ভাষা।
কবি হাজং শ্রী দশরথ চন্দ্র অধিকারী বলেন, বাংলাদেশে নানা ভাষাভাষী মানুষ বসবাস করেন। আমরা যে হাজং ভাষায় কথা বলি, সে ভাষা টিকিয়ে রাখা জরুরি। আমাদের হাজং ভাষা হারিয়ে গেলে ভাষা বৈচিত্র্য রক্ষা পাবে না।
ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (টিডব্লিউএ) চেয়ারম্যান অজিত হাজং বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ হাজং ভাষা নিয়ে যে আয়োজন করেছে, তা অবশ্যই প্রশসংনীয়। আমাদের মাতৃভাষা হাজং ভাষা। বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের এ হাজং ভাষাকে রক্ষার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৫
এসআই