বসুন্ধরা কিংস বনাম শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের খেলা চলছে। পেশাদার ফুটবল লিগের খেলায় গ্যালারি উপচে পড়ছে দর্শকে।
ফুটবল খেলায় দর্শক ফিরছেন। এ মন্তব্য লুফে নিয়ে বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, শুধু ফুটবল নয়, দেশি-বিদেশি সব ধরনের খেলাধুলার স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলতে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম, হকি স্টেডিয়াম, গলফ কোর্স, ডাইভিং সুবিধাসহ সুইমিং কমপ্লেক্স, ব্যাডমিন্টন থেকে শুরু করে সব ধরনের প্রচলিত খেলার ব্যবস্থা থাকছে এখানে। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় প্রায় ৩৫০ বিঘা জমিতে গড়ে উঠছে স্বপ্নের বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। সুপ্রশস্ত রাস্তা, আলাদা পার্কিং সুবিধা থেকে শুরু করে খেলোয়াড় এবং দর্শকদের জন্য থাকছে নিন্ডিদ্র নিরাপত্তা। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণের শুরুর গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাত-আট বছর আগের কথা। দেশের ফুটবলের পরিস্থিতি নিয়ে কথা হচ্ছিল। তখন দেশের ফুটবলের মান এবং দর্শকের সংখ্যা একেবারে কমে গিয়েছিল। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এ বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেন। সেদিনের আলোচনা থেকে বসুন্ধরা কিংস তৈরির ভাবনা জন্ম নেয়। নানা বাধা উতরে জয়ের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে বসুন্ধরা কিংস। ফুটবলের পাশাপাশি অন্যান্য খেলাকে এগিয়ে নিতে নতুন এক স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দেশকে এগিয়ে নিতে প্রেরণার বাতিঘর হয়ে উঠবে এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স- এমনটাই প্রত্যাশা প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের। সরেজমিন বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে চলছে নির্মাণযজ্ঞ। কোথাও ঢালাই চলছে, কোথাও গ্লাস লাগানো হচ্ছে। সুইমিং কমপ্লেক্সের পাশের ছাদে দাঁড়িয়ে দেখা যায় বিস্তৃত এই কাজের কিছু খন্ডচিত্র। ধূসর প্রান্তর সেজে উঠছে অনন্য স্থাপত্য, সবুজ গাছ আর ঘাসে। দেশের মাটিতে অত্যাধুনিক সব সুবিধার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এখানে। ক্রিকেট ও হকি স্টেডিয়াম, গলফ কমপ্লেক্সের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান একজন হকি খেলোয়াড় ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান যুব দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা কারও অজানা নেই। তাঁর বড় ভাই আবদুস সাদেক ছিলেন হকি ও ফুটবলের বড় তারকা। দুই খেলায় ঢাকা আবাহনীর অভিষেক হয়েছিল তাঁরই নেতৃত্বে। হকির জাতীয় দলেরও প্রথম অধিনায়ক সাদেক। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যানের দুই ছেলে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর দেশের স্বনামধন্য ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান। ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি। খেলাধুলার প্রতি তাঁদের ভালোবাসার স্মারক হতে চলেছে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স। ইমরুল হাসান আরও বলেন, দেশের প্রচলিত সব ধরনের খেলার ব্যবস্থা থাকছে এই স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। ব্যাডমিন্টন, হকি, স্কোয়াশ, শুটিং, ফুটবল, ক্রিকেট সব ধরনের খেলার ব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়া আলাদাভাবে গলফ কমপ্লেক্স তৈরি হচ্ছে। ফুটবল মাঠের পাশাপাশি এখানে আমাদের যে ক্রিকেট মাঠ আছে সেখানে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে। বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্স এ মাঠে প্র্যাকটিস করেছে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানের পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কাজ চলছে। সেখানে দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৩০ হাজার। আমাদের দুটি ক্রিকেট মাঠ হচ্ছে। একটি অনুশীলনের আর একটি পরিপূর্ণ স্টেডিয়াম। অনুশীলনের মাঠ প্রস্তুত। বাংলাদেশ গেমসের আবাসন থেকে শুরু করে ইভেন্টগুলো বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় অনেক অসুবিধা হয়। এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি হলে গেমসের সময় এটিকে তাদের ভেন্যু হিসেবে বেছে নিতে পারবে। স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সঙ্গে ক্যাফেটেরিয়া, শিশুদের জন্য গ্রিন পার্ক থাকবে। সব বয়সী মানুষের সুস্থ পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠবে এই কমপ্লেক্স। এখানে আন্তর্জাতিক মানের সুইমিং পুলের পাশাপাশি শিশু ও বড়দের সাঁতার শেখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। তিনটি বাস্কেটবল কোর্ট রয়েছে। এটি পরিবর্তনযোগ্য হওয়ায় অন্য খেলাধুলার আয়োজনও এখানে সম্ভব। অনুশীলনের জন্য আলাদা ক্রিকেট, ফুটবল মাঠ থাকছে। খেলোয়াড়দের জন্য থাকছে নেট প্র্যাকটিসের সুবিধাও। খেলাধুলা চলাকালীন আলো এবং অন্যান্য সুবিধা বজায় রাখতে সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে। ৬ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার স্টেশন করা হচ্ছে। এ ছাড়া সম্পূর্ণ ব্যাকআপের ব্যবস্থা থাকছে। জেনারেটর এবং ডেসকোর সংযোগ থাকবে ভেন্যুগুলোতে। ফলে ১ মিনিটের বিদ্যুৎ বিভ্রাটেও খেলা সম্প্রচারে কোনো সমস্যা হবে না। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের খেলাধুলাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা
বাংলাদেশের সেরা ফুটবল মাঠ তৈরি করা হয়েছে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। এই মাঠের নাম বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। দেশের ফুটবলে টানা তিনবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এবং শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হোম ভেন্যু হিসেবে গত বছর থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে এই মাঠ। সবুজ এই মাঠের দিকে চোখ পড়লে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সেরা মাঠগুলোর ছবিই ভেসে ওঠে। ফিফা এবং এএফসির মানদন্ড মেনে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা মাঠের পাশেই গড়ে উঠেছে গ্যালারি। ১২ হাজার দর্শক এই গ্যালারিতে বসে ফুটবল খেলা উপভোগ করতে পারবেন। থাকছে আন্তর্জাতিক মানের ফ্লাডলাইট সিস্টেম। আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে তৈরি করা হয়েছে ড্রেসিংরুম। দর্শকদের জন্য থাকছে আলাদা ফুড জোন। ভিআইপি বক্স, প্রেস কনফারেন্স রুমসহ সব ধরনের সম্প্রচার সুবিধা থাকছে মাঠে। বাংলাদেশে বেশকটি ফুটবল স্টেডিয়াম আছে। তবে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা বিশ্বমানের করে গড়ে তোলা হয়েছে। এই মাঠ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। বর্তমান জাতীয় দলের কোচ হাবিয়ের কাবরেরা কিংস অ্যারেনায় এসেই বলেছিলেন, অসাধারণ এক মাঠ। আরও অনেকেই কিংস অ্যারেনার প্রশংসা করেছেন। মাঠটা তৈরি করার সময় বিভিন্ন লেয়ারে কাজ করা হয়েছে। প্রচ- বৃষ্টির পরও মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে সব পানি বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে মাঠে। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সাউথ জোনেও থাকবে একটি ফুটবল মাঠ। নর্থ ও সাউথ জোনে থাকছে ফুটসাল মাঠও।
ক্রিকেট স্টেডিয়াম
বাংলাদেশের খেলাধুলায় বিশেষ স্থান দখল করেছে ক্রিকেট। যে কোনো ক্রিকেট ম্যাচে দর্শকের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায় স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে। টিকিটের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যান ক্রিকেটপ্রেমীরা। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গড়ে তোলা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ক্রিকেট স্টেডিয়াম। কমপ্লেক্সের নর্থ জোনে আইসিসির মান অনুযায়ী একটি ক্রিকেট মাঠ তৈরি করা হচ্ছে। এই মাঠে থাকছে প্রায় আড়াই হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারি। হোম ও অ্যাওয়ে দলের জন্য থাকবে আন্তর্জাতিক মানের ড্রেসিং রুম। ফ্লাডলাইটের পাশাপাশি সম্প্রচারের সব সুবিধা থাকছে এই মাঠে। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সাউথ জোনে হবে আইসিসি স্ট্যান্ডার্ডের ক্রিকেট স্টেডিয়াম। সেখানে প্রায় ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারি থাকছে। ড্রেসিং রুম, প্রেসবক্সের পাশাপাশি আইসিসির দুর্নীতি দমন সংস্থা আকসুর জন্যও থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। খেলাধুলার মৌসুম ছাড়া মাঠে কনসার্ট ও সার্কাসও আয়োজন করা যাবে। ১২টি ইনডোর ও ১২টি আউটডোর নেট প্র্যাকটিসের সুবিধাও থাকবে এখানে। বর্তমানে মিরপুর ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই কেবল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ভবিষ্যতে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স হয়ে উঠতে পারে ক্রিকেটের ঠিকানা। এখানে অনুশীলনেরও পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
হকি স্টেডিয়াম
এক সময় বাংলাদেশে হকির জনপ্রিয়তা ছিল অনেক। এশিয়ান পর্যায়ে লড়াইয়ে ভালো অবস্থানে ছিল এ দেশের হকি। ধীরে ধীরে নানা কারণে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। তবে বর্তমানে আবারও হকি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। বসুন্ধরা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এইসের সহযোগিতায় কিছু দিন আগে প্রথমবারের মতো সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও থাকছে হকির বিশেষ আয়োজন। কমপ্লেক্সের সাউথ জোনে তৈরি হচ্ছে এফআইএইচ-এর মানদন্ড অনুযায়ী হকি স্টেডিয়াম। এখানে ফ্লাডলাইট থাকবে। পাশাপাশি থাকবে ড্রেসিং রুমসহ আধুনিক সব সুবিধাই। হকি স্টেডিয়ামে থাকবে প্রায় ১০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার একটি গ্যালারি। হকির ভবিষ্যৎ তারকারা হয়তো এই মাঠেই গড়ে উঠবেন! বাংলাদেশের হকিকে এগিয়ে নিতে বড় ভূমিকা রাখবে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের এই হকি স্টেডিয়াম। ফেডারেশন চাইলে এখানে ঘরোয়া হকির বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারবে। জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি বলেন, ‘হকিতে পর্যাপ্ত মাঠ নেই। বলতে পারেন মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামই প্রধান ভরসা। বসুন্ধরা গ্রুপকে তো হকি পরিবারই বলা হয়। তাই আমার বিশ্বাস, তারা যে হকি মাঠ তৈরি করছে সেখানে নতুনত্ব থাকবে। যা হকির অগ্রগতির পেছনে ভূমিকা রাখবে। ’
বসুন্ধরা গলফ
গলফে ইতিহাস গড়েছেন বাংলাদেশের সিদ্দিকুর রহমান। তিনটি এশিয়ান ট্যুরের ট্রফি জয় করেছেন তিনি। পেশাদার গলফে তিনিই পথ দেখিয়েছেন এ দেশের মানুষকে। এরপর জামাল-সোহেলরা গলফকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গলফ শেখারও দারুণ সুযোগ থাকছে। এখানেই হতে পারে ভবিষ্যতের তারকাদের হাতেখড়ি।
বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের সাউথ জোনে তৈরি হচ্ছে বসুন্ধরা গলফ (বিজি গলফ)। এখানে ১৪৪ জন গলফার একসঙ্গে অনুশীলন করতে পারবেন। প্রায় ২০০ মিটার লম্বা ড্রাইভিং রেঞ্জের গলফ মাঠ হবে। এখানে থাকবে ৪০টি টিইং এরিয়া। এ ছাড়াও এই রেঞ্জে থাকবে লাইটিং সুবিধা। থাকবে আধুনিক ড্রেসিং রুম। ক্যাসেল নাইট থিমে গড়া বসুন্ধরা মিনি গলফ কোর্সে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের ১৮ হোলের ছোট গলফ কোর্স এবং আরও অনেক অ্যাডভেঞ্চার। বসুন্ধরা গলফ কোর্সটি হয়ে উঠবে সুন্দর সময় কাটানোর এক আদর্শ স্থান। এখানে এসে শহুরে কোলাহলমুক্ত সবুজ-শ্যামল পরিবেশে গলফ শেখার সুযোগ থাকবে। বিশেষ করে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা অগ্রাধিকার পাবেন এখানে। এই ফ্যাসিলিটিতে গলফ সিমুলেটরও থাকছে। পাশাপাশি থাকবে নানা আয়োজন। ভিআইপি লাউঞ্জ, কফি শপ, বিজনেস মিটিং রুম, কনফারেন্স রুম থাকবে এখানে। বসুন্ধরা গলফের থার্ড ফ্লোর বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে ভিভিআইপিদের জন্য। সুন্দর সময় কাটানোর সব সুযোগ-সুবিধাই থাকবে এখানে।
ইনডোর গেমসের নানা আয়োজন
খেলাধুলার জগতে ইনডোর গেমসের কদর কম নয়। টেবিল টেনিস, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, ফুটসাল, হ্যান্ডবল, ভলিবল, স্কোয়াশ, ¯œুকার, পুল, শুটিং, সুইমিংসহ নানা খেলার প্রতি মানুষের আছে প্রবল আকর্ষণ। এসব খেলার বিজয়ীরা বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। অলিম্পিকে তাদের দিকে থাকে বাড়তি নজর। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও থাকছে ইনডোর গেমসের নানা আয়োজন। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নর্থ জোনে গড়ে উঠছে চমৎকার এক ইনডোর কমপ্লেক্স। এখানে অলিম্পিক সাইজ সুইমিং পুল ছাড়াও থাকছে স্কোয়াশ কোর্ট, জিমনেশিয়াম এবং মাল্টি পারপাস স্পোর্টস কোর্ট। কমপ্লেক্সে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের তিনটি স্কোয়াশ কোর্ট। দেড় শ দর্শক এই খেলা উপভোগ করতে পারবেন। ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের দুটি জিমনেশিয়াম তৈরি হবে এখানে। আধুনিক সব সরঞ্জাম থাকবে জিমনেশিয়ামে। মাল্টিপারপাস স্পোর্টস কোর্টে নানা খেলার আয়োজন থাকবে। ৫০ বাই ৫০ মিটার আয়তনের এই কোর্টে তিনটি বাস্কেটবল, চারটি ব্যাডমিন্টন, একটি করে ফুটসাল ও হ্যান্ডবল এবং দুটি ভলিবলের কোর্ট তৈরি করে খেলা যাবে। ইয়োগা স্টুডিও, তায়েকোয়ান্দো, কারাতে, জুডোর মতো খেলাধুলাও এখানেই করা যাবে।
বসুন্ধরা কমপ্লেক্সের সাউথ জোনেও থাকছে ইনডোর গেমসের নানা আয়োজন। টেবিল টেনিস, ¯œুকার, পুল, শুটিং রেঞ্জসহ নানা খেলার আয়োজন আছে এখানে। একটি ৫০ মিটার, একটি ২৫ মিটার ও একটি ১০ মিটার শুটিং রেঞ্জ হবে। খেলোয়াড়, কোচ ও ম্যাচ অফিশিয়ালদের জন্য থাকবে আবাসন ব্যবস্থাও।
অলিম্পিক আদলে সুইমিং পুল
মাইকেল ফেলপস, মার্ক স্পিৎজ, কার্ল লুইস, ইয়ান থর্পদের কথা কে না জানে। সাঁতার দিয়েই পৃথিবী বিখ্যাত হয়েছেন তারা। বাংলাদেশেও বিশ্বমানের সাঁতারু তৈরি করা সম্ভব। ব্রজেন দাসের কথা কে না জানে! ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে নাম কুড়িয়েছেন এই বাংলাদেশি সাঁতারু। বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও থাকছে সাঁতারের বিশ্বমানের আয়োজন।
কমপ্লেক্সে গড়ে তোলা হচ্ছে অলিম্পিক সাইজ সুইমিং পুল। এখানে থাকবে ৫০ মিটার সুইমিং পুল। আন্তর্জাতিক সুইমিং সংস্থা ফিনার মান অনুযায়ী ৮ লেনের একটি অলিম্পিক সাইজ সুইমিং পুল থাকবে এখানে। আছে এইচভিইসি প্রক্রিয়ার এয়ার কন্ডিশন, ওয়াটার হিটিং প্রক্রিয়া, আধুনিক ড্রেসিংরুম এবং নানা রকমের সুবিধা। ফিনার মান অনুযায়ী ২০ মিটার সুইমিং পুল তৈরি হচ্ছে ৬ লেনের। এটিও অলিম্পিক সাইজ। এখানেও থাকবে আধুনিক সব সুবিধা।
আরও যা আছে
বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আরও নানা খেলার আয়োজন থাকছে। ৯০ মিটার আউটডোর আর্চারি রেঞ্জের পাশাপাশি থাকছে ২৫ মিটার ইনডোর রেঞ্জ। আইটিএ মান অনুযায়ী তিনটি হার্ড সারফেসের টেনিস কোর্ট থাকবে। বাস্কেটবল, ভলিবল ও কাবাডি কোর্ট থাকছে আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে। থাকবে ফুটসাল খেলার সুযোগ। এসব কোর্টে থাকবে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য মনোরম পার্কও থাকছে। এশিয়ার মধ্যে বিরল এক দৃষ্টান্তই স্থাপন করতে যাচ্ছে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
বাংলাদেশ সময় : ১৩০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৩
এএইচএস