বগুড়া: বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম থেকে স্টাফসহ সব মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেলে এ বিষয় জানিয়েছেন শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের বিসিবির ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল।
এর আগে বুধবার (১ মার্চ) দুপুরে ভেন্যুর লোকজনকে বগুড়া থেকে চলে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয় তাকে। সেসঙ্গে ভেন্যু ম্যানেজারসহ সব স্টাফকে শুক্রবার (৩ মার্চ) ঢাকায় হাজির হতে বলেছে বিসিবি।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ব্যবহার নিয়ে স্থানীয় জেলা ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে বিসিবির টানাপড়েন চলছিল। বিসিবি তাদের পরিকল্পনা মতো স্টেডিয়াম ব্যবহার করতে পারছিল না এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু গত টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে বগুড়ার উইকেট নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি নতুন করে স্টেডিয়াম সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে বিসিবির শীর্ষ কর্তারা স্টেডিয়াম পরিদর্শন করে নতুন আরও দুটি সেন্টার উইকেট এবং অনুশীলনের জন্য নতুন করে আরও ৪টি উইকেট বানানো হয়। একইসঙ্গে খেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমের পুরাতন আসবাবপত্র নতুন করে সাজানো হয়। দেওয়া হয় ঘাস কাটার নতুন যন্ত্র।
এছাড়াও বেশকিছু সংষ্কার পরিকল্পনা হাতে নেয় বিসিবি। কিন্তু হঠাৎ করেই বিসিবি বগুড়া থেকে তাদের সব কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ পাঠায়।
বিসিবি সূত্র জানায়, বিসিবি ৮ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত বগুড়ায় চারদিনের তিনটি ম্যাচ আয়োজন করে। সূচি অনুযায়ী ৬ মার্চ টিমগুলো বগুড়ায় এসে ৭ মার্চ অনুশীলনের কথা। কিন্তু ১ মার্চ থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা এ স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ শুরু করায় বিসিবির সঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিরোধ দেখা দেয়।
২৫ মার্চ পর্যন্ত স্টেডিয়াম ব্যবহারে অনঢ় অবস্থান নেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এতে বিসিবি তার পূর্ব নির্ধারিত তিনটি চারদিনের ম্যাচ অন্য ভেন্যুতে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বগুড়া থেকে বিসিবি সব স্টাফ ও স্টেডিয়ামে ব্যবহৃত মালামাল ঢাকায় সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়।
শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিল জানান, বিসিবি থেকে অফিসিয়াল কোনো চিঠি পাঠানো হয়নি। বুধবার মৌখিকভাবে সব মালামাল ও স্টাফদের নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। যেতে বিলম্ব হওয়ায় আজ কঠোর নির্দেশনা আসে বিসিবি থেকে। এ নির্দেশের পর দুপুর থেকে সব মালামাল ট্রাকবোঝাই করার প্রস্তুতি শুরু হয়। আপাতত মালামালসহ সব স্টাফকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। বিসিবি থেকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়নি। বিসিবি মাঝেমধ্যেই মালামাল নিয়ে যাওয়া আসা করে, এটিও তেমনই কিছু।
এদিকে বগুড়া থেকে আচমকা স্টেডিয়ামের সব মালামাল এবং স্টাফ প্রত্যাহারের খবরে তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা এবং ক্রীড়া সংগঠকরা।
বিসিবির সাবেক পরিচালক ও বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম আর সিদ্দিক লেমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আন্তর্জাতিক মানের এই ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে তিলে তিলে ধ্বংস করা হচ্ছিল। আমরা বিসিবির এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৩
এএটি