বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে পুরুষ ও নারী ক্রীড়াবিদদের মধ্যে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য নিয়ে আলোচনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। অবশেষে এই বৈষম্য কমাতে একমত হয়েছেন ক্রীড়াঙ্গনের অংশীজনরা।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-এর মাধ্যমে, 'Healthier in Motion: গতিতেই সুস্বাস্থ্য' ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে শনিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ টাওয়ার অডিটরিয়ামে ক্রীড়াঙ্গনের অংশীজন সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা, সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন। ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) এই উদ্যোগে সহযোগিতা করেছে।
খেলাধুলায় নারী ও তরুণদের নানা সমস্যা ও অগ্রসরতার বাধা নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও সকাল-সন্ধ্যাডটকমের সিনিয়র রিপোর্টার বদিউজ্জামান মিলন। তার প্রবন্ধের ভিত্তিতে ভারোত্তলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত, নারী ফুটবল কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, সাবেক শ্যুটার সাবরিনা সুলতানা, শারমিন আক্তার রত্না, ক্রীড়া সংগঠক ডালিয়া আক্তার, মাহমুদা অনন্যা, স্কোয়াশ কোচ মারজান আক্তার, সাংবাদিক নিলা হাসান ও খেলবেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও গতিতেই সুস্বাস্থ্য প্রচারণার বাস্তবায়ন সহযোগী কাজী সাবির বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসপিএ সভাপতি রেজওয়ান উজ জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মো. সামন হোসেন।
এরপর ক্রীড়াঙ্গনের অংশীজন সম্মিলন থেকে সামিট ডিক্লারেশন উপস্থাপন করেন সাবেক বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামরুন্নাহার ডানা। যেখানে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর পাশাপাশি অলিম্পিক চার্টার মেনে প্রতিটি ক্রীড়া ফেডারেশন-সংস্থা, বিভাগ-জেলা-উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। সঙ্গে নারী ও পুরুষ অ্যাথলেটদের মধ্যে বেতন বৈষম্য ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। নারীদের দলগত বা ব্যক্তিগত খেলায় নারী ম্যানেজার নিশ্চিত করার দাবি তোলা হয়েছে।
সবশেষে সবাই মিলে ক্রীড়াবিদদের জন্য খেলার পরিবেশ ও খেলার সংস্কৃতিভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয়ে শপথ পাঠ করান বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২০ ফুটবল দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার, দাবার নারী জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ওয়ালিজা আহমেদ ও জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন সাদিয়া রহমান মৌ ।
ইউএসএইডের "গতিতেই সুস্বাস্থ্য" ক্যাম্পেইনটি খেলবেই বাংলাদেশ এবং ঢাকা ফ্লোর সহযোগিতায় আয়োজিত হচ্ছে যা বাংলাদেশের মহিলা ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের প্রতীক। এই ক্যাম্পেইনটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বাধাগুলি অতিক্রম করার মাধ্যমে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করতে কাজ ভূমিকা রাখবে, যেখানে বিশেষত মহিলারা তাদের সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে পারে এবং শারীরিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারে।
ইউএসএইড 'গতিতেই সুস্বাস্থ্য' ক্যাম্পেইনে আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে যার মাধ্যমে তরুণ-তরুণী, নারী ও ফিটনেস বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং তারকার সম্প্রদায় একত্রিত হয়ে সুস্থ জীবনযাপনকে উৎসাহিত করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
এআর/এমএইচএম