ঢাকা: উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হাইভোল্টেজ ম্যাচে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ফরাসি চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আতিথ্য গ্রহণ করে পিএসজি।
এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে সাবেক ক্লাব রিয়ালের বিপক্ষে মাঠে নামেন পিএসজির আর্জেন্টাইন তারকা ডি মারিয়া। পিএসজির মাঠে আগের রাউন্ডে আতিথ্য নিয়ে গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। ফিরতি লেগের ম্যাচে প্রথমার্ধে গোল করেন রিয়ালের নাচো। তার একমাত্র গোলেই জয় নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে উঠল রিয়াল।
চলমান আসরের শুরু থেকেই সমান তালে লড়তে থাকা ‘এ’ গ্রুপের দল দুইটির হয়ে মাঠে নামেন বিশ্বসেরা তারকারা। স্বাগতিক রিয়ালের কোচ রাফায়েল বেনিতেজ তোর শিষ্যদের শুরু থেকে ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলাতে থাকেন। শুরুর একাদশে রিয়ালের হয়ে মাঠে নামেন কেইলর নাভাস, দানিলো, সার্জিও রামোস, রাফায়েল ভারানে, মার্সেলো, টনি ক্রুস, লুকা মদ্রিচ, ক্যাসেমিরো, ইসকো, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর জেসে রদ্রিগেজ। আতিথ্য নেওয়া পিএসজির কোচ লরা ব্লাঙ্ক তার শিষ্যদেরও ৪-৩-৩ ফরমেশনে শুরুর একাদশে খেলাতে থাকেন। দলের হয়ে মাঠে নামেন ত্রাপ, আউরিয়ার, থিয়াগো সিলভা, ডেভিড লুইজ, ম্যাক্সওয়েল, থিয়াগো মোত্তা, মাতুইদি, ভেরাত্তি, এডিনসন কাভানি, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ আর অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
ম্যাচের প্রথম থেকেই প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে আক্রমণ শানাতে থাকে দুই দল। নিজেদের ডিফেন্স সামলে মাঝমাঠেও বল দখলের লড়াইয়ে কম যায়নি রিয়াল-পিএসজি। ম্যাচের ২১তম মিনিটে রিয়ালের ডি-বক্সে বল নিয়ে প্রবেশ করেন আর্জেন্টাইন তারকা ডি মারিয়া। কোনাকুনি শটে বল বাড়িয়ে দেন সতীর্থ মাতুইদিকে। ফরাসি তারকা পেনাল্টি বক্সে দাঁড়িয়ে শট নিলেও তা নিজের গ্লাভসবন্দি করেন রিয়ালের গোলরক্ষক নাভাস। দুই মিনিট পরেই ২০ গজ দূর থেকে শট নেন ইব্রাহিমোভিচ। সুইডিশ তারকার শটটি বাঁক নিয়ে স্বাগতিকদের গোলবার থেকে কয়েক ইঞ্চি পাশ দিয়ে বাইরে বেড়িয়ে যায়।
২৬ মিনিটের মাথায় পিএসজির গোলবারের ৩০ গজ দূর থেকে ফ্রি-কিক নেন রোনালদো। সেট-পিসের সুবিধা নিয়ে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের শটটি সরাসরি জমা পড়ে অতিথি গোলরক্ষক ত্রাপের হাতে। ঠিক একই জায়গা থেকে পরের মিনিটে ফ্রি-কিক নেন পিএসজির ইব্রা। তার জোরালো শটটি এবার গোলবারের আরও কাছ দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে বেরিয়ে যান পিএসজির মার্কো ভেরাত্তি। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন আদ্রিয়েন রেবিওট। আর রিয়ালের ব্রাজিল তারকা মার্সেলোর বদলি হিসেবে নামেন নাচো ফার্নান্দেজ। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে নামেন নাচো।
মাঠে নামার দুই মিনিটের মধ্যে রিয়ালকে এগিয়ে নেন নাচো। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে লুকা মদ্রিচের জোরালো শট পিএসজির ডিফেন্সে বাধা পেয়ে গোলবারের বামপাশে চলে যায়। আগুয়ান নাচো অতিথি গোলরক্ষক ত্রাপের মাথার উপর দিয়ে আলতো টোকায় বল জড়িয়ে দেন পিএসজির জালে। ১-০ গোলের লিড নেয় রিয়াল।
এক মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় পিএসজি। রেবিওটের বাঁকানো শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন রিয়ালের গোলরক্ষক নাভাস। আরও এক মিনিট পর ম্যাক্সওয়েলের বাড়ানো কোনাকুনি শট থেকে হেড করলেই গোলের দেখা পেতে পারতেন কাভানি কিংবা পা ছোঁয়ালেই দলকে সমতায় ফেরাতে পারতেন ইব্রা।
প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় রিয়াল। প্রথমার্ধে সেভাবে পারফর্ম করতে দেখা যায়নি রিয়ালের প্রাণভোমরা রোনালদো এবং রিয়ালের সাবেক তারকা ডি মারিয়াকে।
বিরতির পর নিজেদের ঘর গুছিয়ে আবারো এগুতে থাকে দুই দল। ৪৭ মিনিটের মাথায় পিএসজির ডি মারিয়ার শট প্রতিহত করেন নাভাস। আর পরের মিনিটে রোনালদোর জোরালো শট উড়ে যায় অতিথিদের গোলবারের উপর দিয়ে।
ম্যাচের ৬৩ মিনিটে গ্যারেথ বেল, করিম বেনজেমা আর জেমস রদ্রিগেজদের অনুপস্থিতিতে খেলা জেসে রদ্রিগেজের বদলি হিসেবে রিয়ালের হয়ে মাঠে নামেন লুকাস ভারকুয়েজ। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দানিলো আর ভারকুয়েজের প্রচেষ্টায় পাওয়া বল থেকে ৭৩ মিনিটের মাথায় ইসকোর জোরালো শট গ্লাভসবন্দি করেন অতিথি গোলরক্ষক।
খেলার ৮৮ মিনিটে ফ্রি-কিক নেন ডি মারিয়া। আর্জেন্টাইন এ তারকার নেওয়া বাঁকানো শটটি গিয়ে রিয়ালের গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক রিয়াল মাদ্রিদ।
এ জয়ের ফলে ‘এ’ গ্রুপে থাকা রিয়ালের পয়েন্ট গিয়ে দাঁড়ালো ১০। শীর্ষে থাকা স্প্যানিশ দলটির পরে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে থাকল পিএসজি।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৪ ঘণ্টা, ০৪ নভেম্বর ২০১৫
এমআর