ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১

রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম জানতে চাই?

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৮ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৮
রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম জানতে চাই? .

ঢাকা: অপার মহিমার মাস রমজান। আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠনের এ মাসে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। রমজান মাসকে সঠিকভাবে পালনে করণীয় ও বর্জনীয়সহ নানা বিষয়ে জানার থাকে মুসল্লিদের। 

এজন্য মাহে রমজানে বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজন ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। এই আয়োজনের মাধ্যমে ([email protected] ঠিকানায় ইমেইল করে) পাঠক তার রমজান বিষয়ক প্রশ্ন করে জেনে নিতে পারেন উত্তর।

 

পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরিফের আলোকে পাঠকের জিজ্ঞাসার উত্তর দেবেন বিশিষ্ট মুফাস্সিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী। এরইমধ্যে এই আয়োজনে প্রশ্নকর্তা পাঠকরা জেনে নিন তাদের উত্তর।

গোলাম আব্বাস  হাতিরপুল, ঢাকা।
প্রশ্ন: রোজার ফিদইয়া আদায়ের নিয়ম জানতে চাই?
উত্তর: বার্ধক্য বা জটিল কোনো রোগের কারণে যার রোজা রাখার সামর্থ্য একেবারেই নেই এবং পরে কাজা করার সামর্থ্য ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই এমন ব্যক্তি রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া প্রদান করবেন। ফিদইয়া হলো, একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহ খানা খাওয়ানো বা এর মূল্য দেওয়া। অর্থাৎ পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আর যাদের জন্য রোজা অত্যন্ত কষ্টকর হয় তারা এর পরিবর্তে ফিদইয়া তথা মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। ’ (সুরা বাকারা ২: ১৮৪) 


এক রোজার পরিবর্তে এক ফিদইয়া ওয়াজিব হয়। (আদদুররুল মুখতার ২/৪২৬)

যাদের জন্য রোজার পরিবর্তে ফিদইয়া দেওয়ার হুকুম রয়েছে তারা রমজান শুরু হওয়ার পর পুরো মাসের ফিদইয়া একত্রে দিয়ে দিতে পারবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)

নজরুল ইসলাম বরপা, নারায়গঞ্জ।
প্রশ্ন: কাদের উপর ফিদইয়া জরুরি নয়? 
উত্তর:  দুই শ্রেণির মানুষ (অর্থাৎ দুর্বল বৃদ্ধ ও এমন রোগী, বাহ্যত যার রোজা কাজা করার শক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই) ছাড়া আরও যাদের জন্য রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ আছে (যেমন মুসাফির, গর্ভবতী ও শিশুকে স্তন্যদানকারিনী ইত্যাদি) তারা ওজরের কারণে রোজা না রাখলে রোজার ফিদইয়া দেবে না; বরং পরে কাজা করবে।  

আর যদি ওজর অবস্থায় মারা যায় তাহলে তাদের ওপর কাজাও নেই, ফিদইয়ার অসিয়ত করাও জরুরি নয়। অবশ্য ওজর শেষ হওয়ার পর কাজার সময় পেয়েও যদি কাজা না করে থাকে অতঃপর মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাহলে ওজরের পর যে ক’দিন রোজা রাখার সময় পেয়েছে সে ক’দিনের জন্য ফিদইয়ার অসিয়ত করে যেতে হবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৩-৪২৪)
    
মো. রাজ্জাক, দেওয়ানগঞ্জ, জামালপুর।
প্রশ্ন: রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে অসিয়ত করে যাওয়া কি জরুরি? 
উত্তর: ওজরবশত ছুটে যাওয়া রোজার কাজা করা সম্ভব না হলে মৃত্যুর আগে ফিদইয়া দেওয়ার অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। অসিয়ত না করে গেলে ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে এমনিতেই ফিদইয়া আদায় করে দেয় তবে আশা করা যায়, আল্লাহতায়ালা তা কবুল করবেন। (রদ্দুল মুহতার: ২/৪২৪-৪২৫)

রেজাউল করিম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
প্রশ্ন: যাদের ফিদইয়া দেওয়া যাবে?
উত্তর: এক রোজার ফিদইয়া একজন মিসকিনকে দেওয়াই উত্তম। তবে একাধিক ব্যক্তিকে দিলেও ফিদইয়া আদায় হবে। তদ্রুপ একাধিক ফিদইয়া এক মিসকিনকেও দেওয়া জায়েজ। (রদ্দুল মুহতার : ২/৪২৭)

কাশেমী, শেরপুর সদর, শেরপুর।
প্রশ্ন: কাদের ফিদইয়া দেওয়া হলে আদায় হবে না?
উত্তর: ছোট বাচ্চা বা নাবালককে খাওয়ালে ফিদইয়া আদায় হবে না। (ফাতাওয়া খানিয়া : ২/২০)

মো. আবদুল মান্নান, জুরাইন, ঢাকা।
প্রশ্ন: সুস্থতা ফিরে ফেলে ফিদইয়ার বিধান?
উত্তর: অক্ষম বৃদ্ধ ও মৃত্যুমুখে পতিত রোগী যদি সুস্থতা ফিরে পায় এবং আবার রোজা রাখতে পারে তাহলে তাদের ছুটে যাওয়া রোজাগুলোর কাজা করতে হবে। এক্ষেত্রে আদায়কৃত ফিদইয়ার জন্য আলাদা সওয়াব পাবে। (আদদুররুল মুখতার: ২/৪২৭)

জবাব প্রদানে: মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী
লেখক: বিশিষ্ট মুফাসসিরে কুরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
চেয়ারম্যান: বাংলাদেশ মুফাসসির সোসাইটি

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৮
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলানিউজ টি-২০ বিশ্বকাপ-২০২১ এর সর্বশেষ